Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

সিউলের ‘সোশ্যাল ডিজাইনার’ মেয়র

মোঃ মহিবুল্লাহ, সিউল, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪:

সিউলের মেয়র পার্ক উওন-সুন নিজেকে একজন রাজনীতিবিদ বা সাবেক আইনজীবীর চেয়ে একজন ‘সোশ্যাল ডিজাইনার’ ভাবতেই বেশী পছন্দ করেন। তিনি মনে করেন একজন ‘সোশ্যাল ডিজাইনার’ সামাজিক পরিবেশের উন্নয়নে কাজ করেন। রাজনীতিতে যোগ দেয়ার পূর্বে পার্ক সামাজিক পরিবর্তনের জন্য বিভিন্ন সাংগঠনিক কার্যক্রমেও যুক্ত ছিলেন। ২০০২ সালে এ লক্ষ্যে তিনি বিউটিফুল ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠনও গড়ে তোলেন।

chardike-ad

20140205001353_0লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিক্স এন্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সে আইন বিষয়ে ডিপ্লোমা করা পার্ক অতিথি গবেষক হিসেবে কাজ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। নব্বই দশকের শুরুর দিককার সময়ে তিনি এসব দেশে সামাজিক উন্নয়নে সাধারণ নাগরিকদের অনুদান প্রদানের সংস্কৃতিতে মুগ্ধ হয়ে কোরিয়াতেও এমন কিছু শুরুর করার সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে তাঁর চালু করা ‘ওয়ান পার্সেন্ট ফান্ড রেইসিং স্কিম’ বেশ জনপ্রিয়তা পায়। এ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের আয়ের এক শতাংশ সমাজ সংস্কার তহবিলে দান করতেন। অনেক তারকা ও পদস্থ ব্যাক্তিবর্গও তাঁর অভিনব এই উদ্যোগে সাড়া দেন। যুক্তরাজ্যের অক্সফামের আদলে তিনি বিউটিফুল স্টোর নামে একটি অনুদাননির্ভর দোকানও চালু করেন। বর্তমানে কোরিয়াজুড়ে এর ১২০ টি শাখা রয়েছে যেগুলোতে কাজ করছেন প্রায় ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক।

বিউটিফুল ফাউন্ডেশনের জন্য তিনি ২০০৬ সালে জনসেবা খাতে র‍্যামন ম্যাগসেসাই পুরস্কারে ভূষিত হন। ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট র‍্যামন ম্যাগসেসাইয়ের নামে দেয়া এই সম্মাননা এশিয়ার নোবেল হিসেবেও খ্যাত।

তবে বিউটিফুল ফাউন্ডেশনই পার্কের প্রথম সাংগঠনিক উদ্যোগ নয়। ১৯৯৪ সালে তিনি গণতান্ত্রিক কার্যক্রমে জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ বাড়ানোর প্রয়াসে দ্য পিপল’স সলিডারিটি ফর পার্টিসিপেটরি ডেমোক্রেসি নামে একটি অলাভজনক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এর ব্যানারে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালান, সরকারের নিয়মিত কার্যক্রমে স্বচ্ছতার দাবীতে সোচ্চার হন এবং সরকার ও বানিজ্যগোষ্ঠীগুলোর সংস্কারে চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করেন।

সর্বশেষ ২০০৬ সালে তিনি গড়ে তোলেন আরও একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হোপ ইন্সটিটিউট। এ যাত্রায় তিনি সাধারণ নাগরিকদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সামাজিক উন্নয়নে মনযোগী হন। তিনি সামাজিক উদ্যোক্তা তৈরি ও তৃনমূলের পরামর্শে সামাজিক সমস্যাবলী সমাধানের প্রয়াস চালান।

পরিবর্তন প্রত্যাশায় নিরলস কাজ করে যাওয়া এই সমাজ সংস্কারক ২০১১ সালে সিউল সিটি মেয়র নির্বাচনে অংশ নেন এবং প্রথম স্বতন্ত্র প্রার্থী (পরবর্তীতে প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে যোগ দেন) হিসেবে নির্বাচিত হয়ে সিউল সিটি মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কোরিয়া হেরাল্ড অবলম্বনে।