Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

আগের চেয়ে আরো বেশি বাংলাদেশি নারী প্রবাসে কাজ করছে

ঢাকা, ৪ এপ্রিল, ২০১৪:
এক দশক ধরে, রেমিটেন্সের আয় বাংলাদেশের অর্থনীতিকে পরিচালিত করেছে, বৈদেশিক মুদ্রার মোটা রিজার্ভ গড়ে তুলেছে। প্রায় ২.৫ মিলিয়ন (২৫ লাখ) বাংলাদেশি বিদেশে কাজ করে এবং দেশটির অভিবাসী পুরুষ কর্মীদের সংখ্যা নারীদের তুলনায় অনেক বেশি। সাম্প্রতিক সময়ে, চাকরির জন্য বিদেশে যাওয়া বাংলাদেশি নারীদের সংখ্যা বাড়ছে।মানবসম্পদ, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মতে, ২০১২ সাল থেকে এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ব্যুরোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে প্রায় ৫৭,০০০ নারী অন্যান্য দেশে কাজ করতে গেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৭% বেশি। ব্যুরোর সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রায় ২৭৫,০০০ বাংলাদেশি নারী (দেশটির অভিবাসী কর্মীদের ১১%) এখন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবাসে কাজ করছে, যাদের বেশিরভাগই গৃহকর্মীর কাজ করছে।

140401-PINTU-BD_WOMENLABOUR-310_207এদিকে, পুরুষ অভিবাসী কর্মীদের সংখ্যা কমে গেছে, ২০১২ সালে যেখানে ৬০৮,০০০ কর্মী বিদেশে গেছে সেখানে ২০১৩ সালে বিদেশে গেছে ৪০৯,০০০ কর্মী।

chardike-ad

সাধারণভাবে, বাংলাদেশের অভিবাসী নারী কর্মীরা জাতীয় অর্থনীতিতে বেশি রেমিটেন্স পাঠায়, বলেছেন বাংলাদেশ নারী অভিবাসী কর্মী সংগঠনের পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম। তিনি খবরকে বলেন, “অভিবাসী নারী কর্মীরা পুরুষ কর্মীদের চেয়ে বেশি সঞ্চয় করে এবং তাদের আয়ের উল্লেখযোগ্য একটা অংশ দেশে পাঠায়”।

বঞ্চনার বিরুদ্ধে সুরক্ষা

বিদেশে কর্মরত নারীদেরকে বঞ্চনার শিকার হওয়া থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য বাংলাদেশ তার প্রচেষ্টা বৃদ্ধি করছে।

অতীতে, অনেক অভিবাসী নারী কর্মী – বিশেষ করে যারা নিবন্ধিত ছিল না এবং সেই কারণে তাদের কোনো হিসাব ছিল না- বিবেকহীন নিয়োগকারীদের খপ্পরে পড়েছিল যারা তাদেরকে হয়রানি করেছে এবং অনেক ক্ষেত্রে পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত করেছে।

সরকার কয়েক বছর ধরে বিদেশে চাকরিপ্রার্থীদের নাম নিবন্ধন করে আসছে, কিন্তু তাদেরকে বিদেশে সম্ভাব্য নিগ্রহ থেকে আরো ভালোভাবে সুরিক্ষত রাখতে সাহায্য করার জন্য নারীদের জন্য ২০১৩ সালে এটা বাধ্যতামূলক করেছে।

এছাড়াও অভিবাসী নারী কর্মীরা এখন দেশ ছাড়ার আগে বাধ্যতামূলকভাবে তিন-সপ্তাহের একটা প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নিতে হবে, বলেছেন বিএমইটি-এর মহাপরিচালক বেগম শামসুন নাহার।

“নিবন্ধন প্রক্রিয়ার কারণে আমরা জানতে পারি যে কোন সংগঠন তাদেরকে নিয়োগ করছে, তারা কোথায় যাচ্ছে এবং তাদেরকে কত বেতন দেয়া হচ্ছে,” খবর দক্ষিণ এশিয়াকে বলেছেন তিনি। “আমাদের সিস্টেমে সব প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষিত আছে”৷

এবং নারী চাকরিপ্রার্থীদেরকে সাহায্য করার জন্য, এই ব্যুরো এবং ইউএন উইম্যান যৌথভাবে একটি নারী তথ্য কেন্দ্র স্থাপন করেছে।

এই ধরনের রক্ষাকবচগুলো অতীতে বঞ্চনার শিকার হওয়া কমলা খাতুন, ৩৭, এর মত নারীদেরকে উদ্বুদ্ধ করছে। কয়েক বছর আগে, তিনি ও আরো নয়জন নারী দুবাই থেকে দেশে ফিরে এসেছিলেন, যেখানে তিনি একজন গৃহকর্মী হিসবে কাজ করেছিলেন।

ময়মনসিংহ এর ভালুকার এই বাসিন্দা খবরকে বলেন, “সেখানে পৌঁছানোর পর কিছুদিনের মধ্যেই আমি বুঝতে পেরেছিলাম আমাকে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তার তুলনায় অনেক কম বেতন দেয়া হচ্ছে, এবং আমি মানবেতর পরিস্থিতিতে ছিলাম, আমাকে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করানো হতো এবং কোনো ছুটি দেয়া হতো না”৷

এখন, নতুন সরকারি রক্ষাকবচগুলোর কল্যাণে বঞ্চনার শিকার হওয়ার ঝুঁকি কমার কারণে, খাতুন আবারো কাজ করার জন্য বিদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। খবর সাউথ এশিয়া।