সিউল, ৪ এপ্রিল, ২০১৪:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক ছাত্র চন্দ্র শেখর ঘোষ প্রথম জীবনে আগরতলায় বাবার ছোট মিষ্টি দোকানে কাজ করতেন। এরপর দীর্ঘপথ পেরিয়ে তিনি এখন ভারতের দু’টি নতুন ব্যাংকের একটির মালিক।রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া সম্প্রতি নতুন যে দু’টি ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছে তার মধ্যে চন্দ্র শেখরের ব্যাংকটি অন্যতম। কম লোকই চন্দ্র শেখর ঘোষ কিংবা তার নন-ব্যাংকিং ফিনান্সিয়াল কোম্পানি (এনবিএফসি) বন্ধন ফিনান্সিয়াল সার্ভিস সম্পর্কে জানেন। ব্যাংকের অনুমোদন লাভের ক্ষেত্রে অনিল আম্বানির রিলায়েন্স ক্যাপিটাল, আদিত্য বিড়লা গ্র“প এবং লারসন এন্ড টুবরো’র মতো বৃহৎ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানসহ অপর ২৩টি প্রতিষ্ঠান টপকে চন্দ্র শেখর ঘোষের এনবিএফসি ব্যাংক অনুমোদন পেয়েছে।
চন্দ্র শেখর ঘোষের (৫৩) জন্ম আগরতলার ত্রিপুরায়। শৈশবে তিনি কঠিন সময় পার করেন। তার বাবা মিষ্টির দোকানের আয়ে পরিবার চালাতেন। তবে তিনি প্রত্যয়ী ছিলেন তার সন্তানকে ভালোভাবে শিক্ষিত করে তোলার ব্যাপারে। চন্দ্র শেখর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যানে মাস্টারর্স ডিগ্রি অর্জন করেন। কলকাতায় নিজস্ব এনজিও এবং এনবিএফজি’র প্রধান কার্যালয় থেকে ফোনে চন্দ্র শেখর বলেন, ‘আমি কঠিন সময়ের মোকাবেলা করে বেড়ে উঠেছি। আমি আমার বাবার মিষ্টির দোকান থেকে পাওয়া সহায়তা কাজে লাগিয়েছি।’
ঘোষ বলেন, ‘আমি কখনো চিন্তা করিনি, আমি ব্যাংক চালাবো।’ তিনি সিদবির ব্রজমোহন এবং বাংলাদেশের ফজলে হাসান আবেদের মতো পরামর্শকদের অসাধারণ সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন।
পড়াশোনা শেষ করার পর চন্দ্র শেখর ঘোষ বাংলাদেশের এনজিও বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকে যোগ দেন। এ সময় তিনি গ্রামের দরিদ্র মানুষের সংস্পর্শে এসে এ কাজে উৎসাহী হন। ভারতে ফিরে ঘোষ বিভিন্ন এনজিওতে কাজ করেন। পাশাপাশি তিনি চাকরিকালে গ্রামীণ সমাজকল্যাণে কাজ করেন। এ সময় ক্ষুদ্র ঋণের নামে ২০০% থেকে ৩০০% সুদ আদায়ের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। সবাই তাকে এ ধরনের চাকরি ত্যাগ করার জন্য পরামর্শ দেয়। এটি একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। তখন তার কাছে ছিল মাত্র ২ লাখ রুপি।
ঘোষ বর্তমানে তার স্ত্রী, ১৬ বছরের ছেলে এবং মাকে নিয়ে কলকাতায় বসবাস করছেন। ব্যাংকের অনুমোদন পাওয়ার আগের উদ্বেগের কথা জানিয়ে চন্দ্র শেখর বলেন, ‘বুধবার ব্যাংকের লাইসেন্স প্রাপ্তির ঘোষণায় ভাল ঘুমাতে পেরেছি।’ তবে তিনি বলেন, সামনে তার অনেক চ্যালেঞ্জ।