সিউল, ২২ মে ২০১৪:
প্রতিযোগিতা ও আর্থিক নিয়ন্ত্রণ বিধিসহ নিজ দেশের বিভিন্ন আইন ভঙ্গের জন্য আনা ৩০৯টি অভিযোগে গত তিন বছরে দেশে-বিদেশে ২ ট্রিলিয়ন ওন (১৯৫ কোটি ডলার) জরিমানা গুনতে হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় ৩০টি কোম্পানীকে। সিউলভিত্তিক করপোরেট গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিইও স্কোর গতকাল এ তথ্য দেয়। খবর ইয়োনহাপের।
করপোরেট উৎপাদনশীলতা ও সুশাসনের হিসাব-নিকাশে সহায়তা করতে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে সিইও স্কোর জানায়, গত তিন বছরে সবচেয়ে বেশি জরিমানা দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম পারিবারিক কনগ্লোমারেট এলজি গ্রুপ। স্থানীয়ভাবে চেবল নামে পরিচিত কনগ্লোমারেটগুলোই দক্ষিণ কোরিয়ার জিডিপির মূল ভিত্তি, যার বেশির ভাগই একেকটি স্থানীয় ব্যবসায়ী পরিবারের নিয়ন্ত্রণাধীন অবস্থায় বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে ব্যবসা-বাণিজ্য করছে।
উল্লিখিত সময়ে এলজি গ্রুপ একাই জরিমানা দিয়েছে প্রায় ৭৬০ বিলিয়ন ওন, যা মোটের ৩৭ শতাংশেরও বেশি। আর্থিক বিবেচনায় সবচেয়ে বড় জরিমানা ছিল ক্যাথোড রে টিউব (সিআটি) নিয়ে এলজি গ্রুপকে ইউরোপিয়ান কমিশনের (ইসি) করা ৭০০ বিলিয়ন ওনের অর্থদণ্ড।
অভিযোগ ও দণ্ডের সংখ্যায় সবচেয়ে এগিয়ে ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় চেবল স্যামসাং গ্রুপ। গত তিন বছরে বিশ্বের ৫১টি দেশে সব মিলিয়ে ৯৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ওন জরিমানা দিতে হয়েছে তাদের, যা মোট জরিমানার বিবেচনায় স্যামসাংকে ছয় নম্বরে নিয়ে এসেছে।
প্রতিবেদনে সিইও স্কোর বলে, ২০১১-২০১৩ সাল পর্যন্ত গড়ে প্রতি সাড়ে তিন মাস পর পর একেকটি কনগ্লোমারেটকে ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ওন হারে জরিমানা গুনতে হয়েছে।
নিজ দেশে চেবলদের দেয়া জরিমানার ৩৫ দশমিক ১ শতাংশই দক্ষিণ কোরিয়ার ফেয়ার ট্রেড কমিশনের করা। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রকরা করেছে মোট জরিমানার ২৫ দশমিক ৩ শতাংশ। সরকারি কৌঁসুলি ও সংশ্লিষ্ট আদালতগুলোর করা জরিমানা ছিল মোটের ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। বাকি প্রায় ৩৩ শতাংশ জরিমানা করেছে দেশটির কমিউনিকেশন্স কমিশন।
বড় কনগ্লোমারেটদের মধ্যে কেবল হুন্দাই হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ ও খুমহো আসিয়ানা গ্রুপই কোনো জরিমানা দেয়নি গত তিন বছরে। তবে প্রশাসনিক সতর্কবার্তা এসেছে তাদের প্রতিও।
বিশ্বব্যাপী করপোরেট সুশাসন নিয়ে কাজ করছে অনেক বিশেষজ্ঞ ও প্রেসার গ্রুপ। তাদের চোখে দক্ষিণ কোরিয়ার জায়ান্ট করপোরেশনগুলোর জরিমানা একটি ইতিবাচক বিষয়।