জাতিসংঘের অনুরোধে আরও ২৪ ঘণ্টার অস্ত্রবিরতিতে রাজি হওয়ার পরও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ফের অভিযান শুরু করেছে ইসরাইল। হামাস সীমিত অস্ত্রবিরতি প্রত্যাখ্যান করে রকেট হামলা অব্যাহত রাখায় আবারো এ অভিযান শুরু করা হয়েছে বলে ইসরাইল দাবি করেছে। এর আগে জাতিসংঘের অনুরোধে আরও ২৪ ঘণ্টার অস্ত্রবিরতিতে রাজি হয়েছিল ইসরাইল। তবে ফিলিস্তিনি জঙ্গিরা অস্ত্রবিরতি লংঘন করলে সেনাবাহিনী ফের গাজায় হামলা শুরু করবে বলেও হুঁশিয়ার করা হয়েছিল।
ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অস্ত্রবিরতি প্রত্যাখান করে হামাস রকেট হামলা অব্যাহত রাখায় সেনাবাহিনী পুনরায় গাজা উপত্যকায় বিমান, নৌ ও স্থল অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে।’ গাজার বাসিন্দারা জানান, ঘোষণার কিছুক্ষণ পরেই গাজা উপত্যকার পূর্বে ভারি গোলাবর্ষণের শব্দ শোনা গেছে।এর আগে ইসরাইলের সংকট বিষয়ক মন্ত্রিপরিষদের এক বৈঠকে শরিবারের অস্ত্রবিরতি রোববার স্থানীয় সময় মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
তবে হামাস জানায়, গাজা থেকে ইসরাইলি ট্যাংক প্রত্যাহার না করা হলে এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনীদের ঘরে ফিরতে না দেয়া পর্যন্ত কোন অস্ত্রবিরতি কার্যকর হবে না।
গাজায় গত ১৯ দিনের যুদ্ধে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি ও ৪৬ ইসরাইলি নিহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৮ জুলাই থেকে গাজায় শুরু হওয়া ইসরাইলের প্রায় একতরফা বর্বর হামলায় এক হাজার ৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ছয় সহস্রাধিক ব্যক্তি। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখো মানুষ। হতাহতদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক। তাদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে। অন্যদিকে ইসরাইল দাবি করেছে, তাদের তিন বেসামরিক নাগরিক ও ৪৩ সেনা নিহত হয়েছে।
সম্প্রতি দখলকৃত পশ্চিম তীরে তিন ইসরাইলি কিশোর ও জেরুজালেমে এক ফিলিস্তিনি কিশোরকে হত্যার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ইসরাইলি তিন কিশোরকে হত্যার জন্য হামাসকে দায়ী করা হয়। তবে হামাস এ অভিযোগ প্রত্যাখান করেছে। এর কয়েকদিন পর পূর্ব জেরুজালেমে এক ফিলিস্তিনি কিশোরকে অপহরণের পর পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন ৬ ইহুদীকে আটক করে। এরপর মূলত ইসরাইল ও হামাস পাল্টপাল্টি হামলা শুরু করে।
গাজা থেকে ইসরাইলে জঙ্গিদের রকেট হামলা বন্ধে তেলআবিব কয়েকদিন ধরে ব্যাপক বিমান হামলা ও নৌঘাঁটি থেকে গোলাবর্ষণের পর ১৭ জুলাই থেকে স্থল অভিযান শুরু করেছে।
১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিন ভূখন্ডে ইহুদিদের জন্য ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে ফিলিস্তিনিরা সংগ্রাম শুরু করে। এর পর থেকে নিয়মিত রক্ত ঝরলেও আজও তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি।