Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

কোরিয়ায় বাড়ছে মিশ্র বর্ণের শিশু

এশিয়ার পূর্বাঞ্চলের দেশ দক্ষিণ কোরিয়া এ অঞ্চল তথা গোটা বিশ্বেই এই মুহূর্তে অন্যতম একটি অর্থনৈতিক শক্তি। এই শক্তিশালী অর্থনৈতিক কাঠামোর জন্য কোরিয়ানরা তাদের জনসংখ্যাকে ধন্যবাদ জানাতেই পারে। কারন ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে দেশটির জনসংখ্যা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের উত্তরকালে জাপান থেকে স্বাধীনতা অর্জন করার পর থেকেই কমছে কোরিয়ার মানুষ, যা অর্থনৈতিক উন্নতির পথে বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। কিন্তু বর্তমানে এই জনসংখ্যাই কিনা আবার চিন্তার দাগ ফেলছে কোরিয়ানদের কপালে। না জনসংখ্যা বৃদ্ধি নয়, সহসাই কোরিয়া একটি মাল্টিরেসিয়াল (মিশ্র বর্ণ) সমাজে পরিণত হতে যাচ্ছে, এমন আশংকাই করছেন বিশেষজ্ঞরা।

multiracial_korean_family
নর্দার্ন সিউলের একটি মাল্টিকালচারাল সেন্টারে ফটোগ্রাফি ক্লাসের পর ছবির জন্য পোজ দিচ্ছে মাল্টিরেসিয়াল পরিবারের শিশুরা। ছবিঃ কোরিয়া টাইমস

শঙ্কা করার মতো অবশ্য যথেষ্ট কারণও আছে। স্ট্যাটিস্টিকস কোরিয়ার এক সাম্প্রতিক সমীক্ষায় বলা হচ্ছে কোরিয়ায় নতুন জন্ম নেওয়া প্রতি ২০টি শিশুর মধ্যে ১টি মাল্টিরেসিয়াল পরিবারের। পরিসংখ্যান আরও জানাচ্ছে ২০১২ সালে বহুজাতিক পরিবার থেকে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা ২২ হাজার ৯০৮ যা কিনা কোরিয়ার মোট জনসংখ্যার (৪ লাখ ৮৪ হাজার ৪৫০) শতকরা ৪.৭ ভাগ। আর এ অনুপাত ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারন ২০০৮ সালে ২.৯, ২০১০ এ ৪.৩ এবং ২০১১ তে মাল্টিরেসিয়াল শিশুর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৭ শতাংশে।

chardike-ad

মূলত কোরিয়ানদের চীনা এবং দক্ষিণ এশিয়ার নাগরিক বিয়ে করার হার অনেক বেড়ে যাওয়াকেই এর প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আবার যেসব বহুজাতিক পরিবার গ্রামে থাকে তারা কোরিয়ানদের চেয়ে বেশি সন্তান জন্ম দিচ্ছে। ২০০৮ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে এই ধরনের পরিবার থেকে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা ৯৭ হাজার ৭০১-এ পৌঁছিয়েছে।

জরিপ বলে কোরিয়ান পুরুষ বিশেষত যারা গ্রামাঞ্চলে বাস করে তারা কোরিয়ান নারীদের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। কারন হিসেবে বলা হচ্ছে বেশির ভাগ কোরিয়ান নারী শহরে বসবাস করতে আগ্রহী হয়ে থাকে। এর ফলে গ্রামীণ কোরিয়ান পুরুষরা জীবনসঙ্গী হিসেবে নন-কোরিয়ান এশীয় নারীদের বেছে নিচ্ছে। স্ট্যাটিস্টিকস কোরিয়ার একজন কর্মকর্তা বলছিলেন, কোরিয়ায় যেসব আন্তর্জাতিক বিয়ে হয়ে থাকে সেগুলোর পচাত্তর শতাংশেই বর থাকে কোরিয়ান আর কনে বিদেশী।

বিশুদ্ধবাদীদের জন্য আশার কথা হচ্ছে, অন্য দেশ অথবা অঞ্চলের মহিলা বা পুরুষের সাথে এই বিবাহের হার কমে যাচ্ছে। অভিবাসী স্ত্রীর সাথে পারিবারিক কলহ, সরকারের নেওয়া কঠোর পদক্ষেপ প্রভৃতি এর পেছনে কারন হিসেবে কাজ করছে। এফ-২ পতি/পত্নী ভিসা প্রদানে কড়াকড়ি সিদ্ধান্তের ফলে বিদেশী নারীদের কোরিয়ায় স্থায়ী হওয়াটাও কঠিন হয়ে পড়ছে। অবস্থার পরিবর্তনের বার্তা দিচ্ছে আরও একটি তথ্য, ২০০৫ সালে কোরিয়ায় আন্তর্জাতিক বিয়ে হয়েছিল ৪২ হাজার ৩৫৬ যা মোট নতুন বিয়ের ১৩.৫ শতাংশ। ২০০৬ সাল থেকে আজতক শতকরা হারটা কেবল হ্রাসই পাচ্ছে।