Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

পদ্মায় ভাঙন, পানি বিপদসীমার উপরে

পদ্মা নদীতে পানির পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে। মাওযায় পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সাথে রয়েছে প্রচন্ড ঘুর্ণিস্রোত। দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে শনিবার রাতে ডাম্প ফেরি (টানা ফেরি) বন্ধ রাখা হয়। শুধু ৬টি ফেরি দিয়ে দেশের প্রধান এই ফেরি সার্ভিস চলে। তবে রোববার সকাল থেকে ১৩টি ফেরি চলাচল করছে। দু’পারে পণ্যভর্তি ট্রাকসহ ২শ’ যান পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। স্রোত, নদী ভাঙ্গন, স্রোতের সাথে পাল্লা দিতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ফেরি সঙ্কটের কারণে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।

টানা ১৩ দিন ধরে দেশের প্রধান এই ফেরি সার্ভিস ব্যাহত হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ নানা দুর্ভোগে পড়েছে । উজানের পানি নেমে না যাওয়া পর্যন্ত এই প্রবল স্রোত থামবে না বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

chardike-ad

এসব তথ্য নিশ্চিত করে বিআইডব্লিউটিসির সহকারী ম্যানেজার শেখর চন্দ্র রায় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, দু’পারে এখন ৬টি ফেরি ঘাটই সচল রয়েছে। তবে পানি বৃদ্ধি পেয়ে স্রোতে আরও প্রবল হওয়ায় সঙ্কট আরও ঘনীভুত হয়েছে। এর মধ্যেই সার্ভিস সচল রাখার সবরকম চেষ্টা চলছে। ১৬টি ফেরির মধ্যে দিনের বেলায় চলাচল করছে ১৩টি। আর রাতে চলছে ৬টি ফেরি। তাও স্রোতের সাথে পাল্লা দিয়ে স্বাভাবিক সার্ভিস দিতে পারছে না।

podma9ওদিকে মুন্সিগঞ্জ সূত্রে জানা গেছে পদ্মা নদীতে ভয়াবহ ভাঙ্গন এবং অব্যাহত পানি বৃদ্বিতে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ি, লৗহজং এবং শ্রীনগর উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ১৫ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জেলার টঙ্গিবাড়ি উপজেলার হাসাইল বানারী এলাকায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন তীর রক্ষা বাঁধ ফাটলসহ ধসে পড়েছে। উজান থেকে ধেয়ে আসা ঢলে প্রমত্ত পদ্মায় পানি বৃদ্বিসহ প্রবল স্রোত, ভয়াবহ ভাঙ্গন ও অতি বৃষ্টির ফলে এ সব এলাকায় এক দিকে দোকান পাট, বিস্তৃত ফসলি জমিসহ বসতবাড়ি ভেসে গেছে।

অপর দিকে নিম্নাঞ্চলে প্লাবনের কারনে পানি বন্দি হয়ে পড়েছে সেখানকার হাজার হাজার মানুষ। গেল প্রায় ১০ দিন যাবৎ পদ্মার অব্যাহত ভাঙ্গনে লৌহজংয়ের মাওয়াঘাট এলাকা, কুমারভোগ, খরিয়া, শ্রীনগরের ভাগ্যকুল বাজারসহ নদী তীরবর্তী ব্যাপক এলাকা পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া হুমকির মুখে পড়েছে লৌহজংয়ের কুমারভোট ইউনিয়ন পরিষদ ভবনসহ প্রায় দুই শতাধিক বাড়িঘর। ভাঙ্গন আতংকে এ সব এলাকার মানুষ তাদের বাড়িঘর ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। অসহায় এ সব মানুষ তাদের বসতঘর বিক্রি করে স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন আবার কেউবা রাস্তায় তাদের ঘরবাড়ি রেখে রাস্তার উপরই মানবেতর জীবন যাপন করছে।

এছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে প্রতিষ্ঠানটির ৮৩টি পানি মনিটরিং স্টেশনের মধ্যে ৩৩টি স্থানে পানি বৃদ্ধি ও ৪৭টি স্থানে পানি হ্রাস পেয়েছে। একটি স্থানে পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। ২টি স্থানের তথ্য পাওয়া যায়নি। ১৭টি স্থানে পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা ও মেঘনা নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় ঢাকা শহর সংলগ্ন নদ-নদী বুড়িগঙ্গা, বালু তুরাগ ও টঙ্গিখালের পানি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টায় মিরপুরে তুরাগ নদী বিপদসীমার অতিক্রম করতে পারে।

এছাড়া আগামী ৪৮ ঘণ্টায় শরীয়তপুর, মাদারীপুর , মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতির সামান্য অবনতি হতে পারে। একই সময়ে কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর ও টাঙ্গাইল জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।