Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

পানির তলদেশের তারবার্তা রোধ করবে দুর্ঘটনা

rsz_af093411cce6145612f3ed128f825767দক্ষিণ কোরিয়ার একজন গবেষক দাবী করেছেন পানির তলদেশে বৈদ্যুতিক তার স্থাপনের মাধ্যমে নৌপথে  যে কোন ধরনের বড়  দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। তিনি বলছেন সেওল ফেরী দুর্ঘটনার সময় এ পদ্ধতি কার্যকর থাকলে তারবার্তার মাধ্যমে খুব সহজেই এর অবস্থান সনাক্ত করা যেত এবং তিন শতাধিক প্রাণহানির মর্মান্তিক ঘটনাও ঘটতো না।

সংগিয়ংগুয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভৌত শব্দবিজ্ঞান (ফিজিক্যাল অ্যাকুস্টিক) বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রীধারী ছোয়ে বুক খিয়ং (৫০) একজন আন্ডারওয়াটার সাউন্ড স্পেশালিস্ট। তিনি কোরিয়া সমুদ্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইন্সটিটিউটের (কেওএসটি) ম্যারিটাইম সিকিউরিটি রিসার্চ ডিভিশনের অধীনে কাজ করছেন। ছোয়ে সম্প্রতি উল্লোং দ্বীপের চতুর্দিকের পানির তলদেশে পরীক্ষামূলকভাবে তার স্থাপন করে এ গবেষণা চালিয়েছেন।

chardike-ad
অধ্যাপক ছই বক-কেয়ং
অধ্যাপক ছোয়ে বুক খেয়ং

কোরিয়া টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “কেউ যদি পানির তলদেশে তার দিয়ে প্রবাহিত আল্ট্রাসনিক শব্দতরঙ্গ (মানুষের শ্রাব্যতার ঊর্ধ্বসীমার অধিক তরঙ্গ বিশিষ্ট শব্দ) নিয়ে গবেষণা করেন তবে তিনি বস্তুত সমুদ্রে কি হচ্ছে না হচ্ছে সবই জানতে পারবেন।”

ছোয়ে আরও জানিয়েছেন বর্তমানে পানির তলদেশের অবস্থা পর্যবেক্ষণে যেসব সেন্সর ব্যবহার করা হয় সেগুলো পানির উপরে ভাসমান বয়া থেকে ছেড়ে দেয়া হয় এবং এগুলো চলমান যান, ভারী বর্ষণ ও প্রবাহিত তড়িৎ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিপরীতে তাঁর প্রস্তাবিত ব্যবস্থায় তারগুলো সরাসরি পানির তলদেশে স্থাপন করা হবে যেগুলো কিনা বাহ্যিক কোনকিছুর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোন আশংকা থাকবে না।

বুক খিয়ং ১৯৯৭ সাল থেকে কেওএসটি’র অধীনে গবেষণা করছেন এবং শব্দতরঙ্গের ব্যবহারে পানির তলদেশে পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা বিষয়ে তাঁর সংরক্ষিত মেধাসত্ত্ব রয়েছে। ছই বলছেন তাঁর এ ব্যবস্থা কার্যকর করার মাধ্যমে কোরিয়া সরকার নিজেদের  জলসীমার মধ্যে কোন অবৈধ কার্যক্রম চলছে কিনা তাও খুব সহজেই সনাক্ত করতে পারবে। সেটা কিভাবে? “আল্ট্রাসনিক শব্দতরঙ্গ বাতাসের বুদবুদের পরিমাণ থেকে পানির উপর দিয়ে চলমান যান সনাক্ত করতে পারে। ফলে যেসব চীনা জাহাজ কোরিয়ান সমুদ্রসীমায় মাছ ধরতে আসে সেগুলোকে অনায়াসেই চিহ্নিত করা সম্ভব হবে”, বলছিলেন ছই।

ছোয়ে’র ভাষ্যমতে ইউরোপ-আমেরিকার উন্নত দেশগুলোও এ ধরনের তার প্রস্তুত করা শুরু করে দিয়েছে। তাঁর এ গবেষণা আমলে নিয়ে কোরিয়া সরকার ইতোমধ্যে উল্লোং ও দকদোর আশেপাশের ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত জলপথের তলদেশে এ প্রকল্প বিস্তৃত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্তত তিন বছর পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের পর ২০১৭ সাল থেকে তা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর করা হতে পারে। ছই জানান তাঁর ইচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার পুরো জলসীমাকেই ধীরে ধীরে এই পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসা, “দেশের সামগ্রিক জলভাগকে একটি বিজ্ঞানসম্মত পর্যবেক্ষণের মধ্যে নিয়ে আসার জন্য আমি সম্ভব সব চেষ্টাই করবো।”