Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বন্যায় ডুবছে ভারতের উত্তরাঞ্চল, ২৭ জনের প্রাণহানি

গত বছরের ক্ষয়ক্ষতি সামলে ওঠার কাজ এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি। তার আগেই ফের দুর্যোগের আশঙ্কা করছে ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্য প্রশাসন। মুষলধারে বৃষ্টির জেরে বন্যা আর ভূমিধ্বসে উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন এলাকায় গত দু’দিনে অন্তত ২৭ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গৃহহীন হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।  স্থানীয় আবহাওয়া দফতরের আশঙ্কা, আগামী ২৪ ঘণ্টা ওই রাজ্যে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে আশংকা করা হচ্ছে।

flood_affected_uttarakhand
গত বছরের জুনে বন্যাদুর্গত উত্তরাখণ্ডের একটি চিত্র।

গত বছর জুন মাসে তুমুল বৃষ্টি ও হড়পা বানে কার্যত ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছিল কেদারনাথ ও সংলগ্ন বিশাল অঞ্চল। সরকারি হিসেবে মারা গিয়েছিলেন পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ। দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল কেদারনাথ মন্দির। কয়েক মাস আগেই তা ফের খুলেছে। এক বছরেরও বেশী সময় ধরে রাজ্যের পর্যটনের হাল ফেরানোর চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন। কিন্তু শনিবারের বৃষ্টিতে চার ধামে যাওয়ার রাস্তাগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তাতে অনেকের ধারণা এর প্রভাব পর্যটনে পড়বেই।

chardike-ad

water_logging_indiaতবে আপাতত সে সব কথা ভাবছে না রাজ্য প্রশাসন। বরং আপাতত পৌরি জেলার যমকেশ্বর তহসিলে আটকে পড়া শ’দুয়েক গ্রামবাসীকে বের করে আনাটাই কর্তৃপক্ষের সবচেয়ে বড় চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়াও শনিবার সকালে বৃষ্টির জেরে দেহরাদূন শহরের কাঠবাংলা এলাকায় দু’টি বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। ধ্বংসস্তূপের তলায় জীবন্ত চাপা পড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। প্রবল বৃষ্টিতে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে উদ্ধারকাজও।

অব্যাহত বৃষ্টির জেরে পানি বাড়ছে উত্তরপ্রদেশের রাপ্তি নদীতেও। ইতিমধ্যেই তা বিপদসীমা ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। বন্যা সতর্কতাও জারি করা হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। অবস্থা খারাপ হিমাচল প্রদেশেরও।

flood_affected_bihar
গত সেপ্টেম্বরে বিহারের বন্যাকবলিত এলাকা ছাড়ছে মানুষ। ছবিঃ বিবিসি।

তবে উত্তরাখণ্ডের পর বৃষ্টি ও বন্যা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে বিহারের। সেখানে দ্বারভাঙা, পশ্চিম চম্পারণ ও নালন্দা জেলার অবস্থা শোচনীয়। কমলা বলন ও গন্ডক নদীতে পানির স্তর বেড়ে যাওয়ায় বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে দ্বারভাঙা ও পশ্চিম চম্পারণের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রশাসনের হিসেব মতো, শুধু দ্বারভাঙা জেলাতেই প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ বন্যার কবলে পড়েছেন। তবে বিহারের বন্যার জন্য অতিবৃষ্টির পাশাপাশি দায়ী করা হচ্ছে সংলগ্ন নেপালের পরিস্থিতিকে। সেখানেও হড়পা বান ও ভূমিধসে গত তিন দিনে অন্তত ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। নিখোঁজ অন্তত ৭৫ জন। অনেকের ধারণা, নেপালের সঙ্কোশী নদীর জলস্তর বাড়াতেই ডুবেছে বিহার।

ভারী বৃষ্টি শুধু নেপাল, উত্তরাখণ্ড ও বিহারের মতো রাজ্যেই নয়, এর জেরে উত্তর-পূর্বের অসম, অরুণাচল ও মেঘালয়ের পরিস্থিতিও সুবিধাজনক নয়। বন্যায় ডুবে গিয়েছে কাজিরাঙা জাতীয় অরণ্যের ৭০% এলাকা। বিপর্যস্ত অরুণাচল ও মেঘালয়ও। উল্লেখিত তিন রাজ্যে গত ৪৮ ঘণ্টায় ৫ শিশুসহ অন্তত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলীয় নদীগুলিতেও জল বাড়ছে ও বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। একটানা বৃষ্টির ফলে তিস্তা, তোর্সা, সঙ্কোশ, রায়ডাক প্রভৃতি নদী এলাকায় হলুদ বিপদ সঙ্কেত দেখানো হয়েছে। জলে ডুবে গেছে বেশ কিছু গ্রাম।

জলপাইগুড়ি আর নবগঠিত আলিপুরদুয়ারে ত্রাণ শিবিরগুলিতে কয়েক হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।