Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

‘বারবার একই ঘটনা ঘটা দুর্ঘটনা নয়, হত্যাকাণ্ড!’

মৃতের সংখ্যা কত হবে? পাঁচ শ? নাকি তারও বেশি! গত সাত দিনে একের পর এক মৃত্যুর খবর এসেছে।

rajib hasan_statusমেহেদির রঙ না শুকাতেই শোকের সাদা চাদর গায়ে চড়াতে হয়েছে নববধূকে। মুক্তি পায়নি সদ্যই পৃথিবীর আলো দেখা শিশুটি। মুক্তি পায়নি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র কিংবা মেডিকেলের ছাত্রীটিও; হয়তো অভাবি পরিবারের একমাত্র আশার প্রদীপ হয়ে ছিল এঁরাই।

chardike-ad

না, আমি গাজার কথা বলছি না। সিরিয়া-সুদান-আফগানিস্তানও নয়। মানুষের মৃত্যুর এই মিছিল বাংলাদেশেই। ঈদের আগে-পরে যাত্রাপথে একের পর এক দুর্ঘটনায় নিহত মানুষের সারি। প্রতি বছর বাংলাদেশে যাত্রাপথে কতজন মানুষ মারা যায় জানেন? সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্রটিও বলছে, সংখ্যাটি চার হাজারেরও বেশি!

অথচ গত আট বছরে ফিলিস্তিনে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা ৮ হাজার ৮৪৫ জন। গত তেরো বছরে আফগানিস্তানে মারা গেছে ১৮ থেকে ২০ হাজার মানুষ। আর গত ১৮ বছরে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৫৬ হাজার ৩৯৫ জন!

বলতে পারেন, দুর্ঘটনার ওপর কারো হাত আছে? কিন্তু একই ঘটনা যখন ক্রমাগত ঘটতে থাকে, সেটা আর দুর্ঘটনা নয়। যখন দায়িত্বে অবহেলা বা দুর্নীতির কারণে কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটে, সেটা দুর্ঘটনা নয়, পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড!

গত এপ্রিলে দক্ষিণ কোরিয়ার ফেরি দুর্ঘটনায় ৩০০ জন নিহত হওয়ার পর সে কী তোলপাড়! খোদ দেশটির প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পদত্যাগ করেছেন। আর আমাদের নৌ মন্ত্রীর চেহারায় সামান্য অনুতাপের ছায়াটিও দেখলাম না। তাও ভাগ্য ভালো ‘আল্লাহর মাল’ তত্ত্ব এখন কেউ দেয় না। লাশপ্রতি তিনটা করে ছাগলও দেওয়ার ঘোষণা আসে না।

এখন লাশপ্রতি দেড় লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণায় তৃপ্ত হয়ে গোঁফে তা আপনি দিতেই পারেন। কিন্তু গত মে মাসেই মেঘনায় লঞ্চডুবির পর সেই মায়ের আহাজারি আমি ভুলতে পারি না, বুক চাপড়াতে চাপড়াতে যে মা বলছিলেন, মন্ত্রীরে আমি তিন লাখ টেহা দিমু। আমার ছাওয়ালডারে ফিরায় দিতে কন, ফিরায় দিতে কন!

যে মায়ের শূন্য বুক পূর্ণ করতে পারবেন না, হে আমাদের হর্তাকর্তা-ভাগ্যবিধাতাগণ, সেই মায়ের বুক শূন্য করেন কেন?

 

লেখক, সাংবাদিক রাজীব হাসানের ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে