Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

মালয়েশিয়ায় শ্রম-শোষণের শিকার ২৮% বাংলাদেশি শ্রমিক

মালয়েশিয়ার ইলেকট্রনিক্স কারখানাগুলোতে ২৮ শতাংশ বাংলাদেশি অভিবাসীকে জোরপূর্বক কাজ করতে বাধ্য করা হয়। সম্প্রতিক এক গবেষণায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বিভাগের অার্থিক সহায়তায় গত বুধবার একটি অান্তর্জাতিক সংস্থা ‘মালয়েশিয়ার ইলেকট্রনিকস পণ্যের উৎপাদনে জোরপূর্বক শ্রম‘ শীর্ষক এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘অতিরিক্ত কাজ করতে অসম্মতি জানালে নির্যাতন ও শাস্তির হুমকি দেওয়া হয় শ্রমিকদের।‘

chardike-ad

Malay-Electronis-Factory001-e1411203148791 রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট এই গবেষণা চালিয়েছে। গবেষণায় জানানো হয়েছে, শ্রমিকদের অতিরিক্ত কাজ করতে না চাওয়ার সাজা হিসেবে (বিনা বেতনে) সাময়িক ছুটিতে পাঠানো হয় বা বিপদজ্জনক কাজ দেওয়া হয়।

গবেষণার অংশ হিসেবে কমপক্ষে ৩৬ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এরমধ্যে ১০ জন বলেছেন যে, তাদের জোরপূর্বক শ্রমে বাধ্য করা হয়। এছাড়া দুজন ভারতীয় শ্রমিকও জোরপূর্বক শ্রমে বাধ্য করার কথা বলেছেন। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ৬৭ শতাংশ নেপালি, ৪০ শতাংশ ভিয়েতনামী, ২৮ শতাংশ মিয়ানমারের শ্রমিকদের অতিরিক্ত কাজে বাধ্য করা হয়।

মালয়েশিয়ার জোহর শহরে এক বাংলাদেশি পুরুষ শ্রমিক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘একটি অাউটসোর্সিং কোম্পানিটিতে অামার পাসপোর্ট অাটকা অাছে। অামার কাছে কেবল এর ফটোকপিই অাছে। তাই অামি হাঁটাচলা করতেও ভয় পাই।‘ মালয়েশিয়ার ক্লাং ভ্যালিতে থাকা অারেক বাংলাদেশি শ্রমিক বলেন, ‘প্রতি মাসে অামি শুল্ক ও ঋণ শোধ করছি। মাসের শেষে তাই অামি কোনও কিছুই সঞ্চয় করতে পারি না।‘

জোহরের অারেক বাংলাদেশি বলেন, ‘অামার ভিসার অবস্থা এজেন্টের মর্জির ওপর নির্ভর করে। তাই অামাকে যে কাজই করতে হয় প্রথমে তা নিয়ে এজেন্টের সঙ্গে অালাপ করতে হয়।‘ গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, মালয়েশিয়ায় ইলেকট্রনিক্স কারখানাগুলোতে কাজ পাওয়ার জন্য মোটা ফিসের টাকা পরিশোধ করতে ৭০ শতাংশ বাংলাদেশি শ্রমিককেই ধার করতে হয়। কয়েক বছর আগে সেখানে ৫৮ হাজার ৮০০ বাংলাদেশি শ্রমিক থাকলেও ২০০৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ লাখ ১৫ হাজার ১৫৪ জনে।

রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের চেয়ারম্যান তাসনিম সিদ্দিক বলেন, ‘অামি মনে করি নিয়োগকর্তা ও কর্মী উভয়ের সুরক্ষার জন্যই একটি স্বচ্ছ ব্যবস্থা থাকা উচিত।‘ এই গবেষণা প্রতিবেদন অভিবাসী বিষয়ক জাতীয় অান্তর্জাতিক ফোরামে শ্রমিকদের অবস্থা তুলে ধরতে সাহায্য করবে বলে অাশা প্রকাশ করেন তিনি।

তবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (কর্মসংস্থান) নুরুল ইসলাম বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় কোনও বাংলাদেশি শ্রমিককে জোরপূর্বক কাজ করানোর কোনও খবর অামাদের কাছে নেই। এছাড়া সেখানকার ইলেকট্রনিক্স কারখানাগুলোয় ঠিক কী পরিমাণ বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করে সে সম্পর্কেও অামাদের ধারণা নেই।‘ বাংলা ট্রিবিউন।