Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ডাইনি অপবাদে ভারতে ২৫০০ নারী হত্যা

daini

একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও ভারতের বিভিন্ন জায়গায় আজো চলেছে ডাইনি অপবাদ দিয়ে অকথ্য নারী নির্যাতন ও নারী হত্যার হাজার হাজার ঘটনা। সংবাদ মাধ্যমগুলোর সমীক্ষায় গত এক দশকে ২৫০০ ডাইনি হত্যার ঘটনা উঠে এসেছে।

chardike-ad

সংবাদ সংস্থা ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, গত দুই বছরে ডাইনি অপবাদে চাবুক মেরে, লাঠিপেটা করে, ঢিল মেরে হত্যা করা হয় ২৭০ জন নারীকে। এদের বেশির ভাগই হয় প্রৌঢ়া না হয় বৃদ্ধা। তবে বলা হয়েছে, প্রকৃত সংখ্যা এর থেকে অনেক বেশি, হিমশৈলের চূড়ামাত্র। যেগুলো বেশির ভাগই অজানা থেকে যায়। পুলিশ ও প্রশাসন হয়, না জানার ভান করে থাকে কিংবা ডাইনি হত্যা বলে মানতে অস্বীকার করে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের গ্রামে-গঞ্জে ধর্মীয় প্রধান তথা বৈদ্য, যাকে গ্রাম্য ভাষায় বলা হয় জানগুরু, কোনো অঘটন ঘটলে তিনি বিচার বিবেচনা কিংবা জাদুটোনা করে বলে দেন অমুক গ্রামের অমুক নারীকে ভর করেছে ডাইনি বা প্রেতাত্মা। ওরই কুদৃষ্টির ফলেই এই অঘটন।

বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ছত্তিশগড় ও ঝাড়খন্ডের সাঁওতাল আদিবাসীদের কাছে জানগুরু ঈশ্বরের প্রতিভূ। তার আদেশই শিরোধার্য। জানগুরু তাদের আস্থা অক্ষুণ্ণ রাখতে যা করা দরকার তাই করে। জানগুরু সেইসব নারীকেই ডাইনি নামে দাগিয়ে দেয়, যারা দলিত, নীচু জাতির গরিব এবং নিরক্ষর। জনজাতির লোকেরা তাদের গ্রাম বাঁচাতে ডাইনি হত্যাকে তাই অপরাধ বলে ভাবে না। উপজাতিদের যাপিত জীবনধারার সঙ্গে এই মানসিকতা জড়িয়ে আছে।

কিছু যুক্তিবাদী সংস্থা সমীক্ষা করে দেখেছে, কুসংস্কার বা অন্ধবিশ্বাস এদের মনে এমনভাবে শিকড় গেড়েছে যে, তা উপড়ে ফেলা সহজ নয়। কঠোর আইন করেও তা সম্ভব নয়। এদের কাছে মানবাধিকার শব্দবন্ধটা অশ্রুত। প্রবাসী এক বাঙালি মহিলা ঈপ্সিতা রায় চৌধুরী এই কুসংস্কার ভাঙার এক অভিযান চালান প্রত্যন্ত সব গ্রামে-গঞ্জে গিয়ে। কিন্তু কাজ হয়েছে বলে মনে হয় না। তার মতে অপরাধীকে গ্রেফতার করে সাজা দেবার ঘটনা বলতে গেলে নেই। জমি জায়গা, স্থাবর-আস্থাবর সম্পত্তি হস্তগত করতে কিংবা গ্রামের প্রতাপশালী ব্যক্তি তার যৌন লালসা মেটাতে না পারলেই সেই নারীকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে গ্রাম থেকে তাড়াতে পুরুষদের হাতে মোক্ষম হাতিয়ার এটা। ভারতের পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ সর্বত্রই চলেছে এই ডাইনি অপবাদের এই নারকীয় খেলা।

তথ্যসূত্র : ডয়েচে ভেলে