Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

আইফোনের ৭৫% চিপ সরবরাহ করবে স্যামসাং

apple-vs-samsungঅ্যাপলের পরবর্তী আইফোনের ৭৫ শতাংশ চিপ সরবরাহ করবে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। এ কার্যক্রমকে চিপ ব্যবসায় স্যামসাংয়ের মনোযোগ বাড়ানোর লক্ষণ বলেই মনে করছেন অনেকে। গতকাল দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় একটি গণমাধ্যম সেমিকন্ডাক্টর ব্যবসায় সম্পৃক্ত এক সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায়। খবর ইকোনমিক টাইমস।

গত বছরের শেষ দিকে বাজারে আসে অ্যাপলের সর্বশেষ স্মার্টফোন আইফোন সিক্স ও সিক্স প্লাস। পরবর্তী সংস্করণের আইফোন বাজারে আনতে তারা এখন কাজ করছে। নতুন সংস্করণের নাম হতে পারে আইফোন সিক্সসি, সিক্সএস কিংবা সেভেন। ম্যাকওয়ার্ল্ডসহ একাধিক সংবাদ মাধ্যমে পরবর্তী আইফোনের এসব নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আর নতুন আইফোনে ব্যবহূত চিপের অধিকাংশই সরবরাহ করবে স্যামসাং। বিশ্লেষকদের মতে, স্মার্টফোনের বাজারে অ্যাপল ও স্যামসাং প্রতিদ্বন্দ্বী দুই শীর্ষ প্রতিষ্ঠান। এবার তাদের মধ্যে ব্যবসায়িক চুক্তি এ সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করবে।

chardike-ad

গত তিন বছরের মধ্যে ২০১৪ সালে স্যামসাং তুলনামূলক খারাপ সময় পার করেছে। এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক আয় উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পায়। বিশেষ করে গত বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) মোবাইল ডিভাইস খাত থেকে স্যামসাংয়ের আয় আগের বছরের তুলনায় ৭৪ শতাংশ কমে। গত বছরই প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দেয়, ২০১৫ সালে তারা মোবাইল ডিভাইস উত্পাদন ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনবে। পাশাপাশি চিপ উত্পাদন খাতে অংশগ্রহণ বাড়ানোর কথাও জানায় তারা। এরই ধারাবাহিকতায় তারা অ্যাপলকে চিপ সরবরাহে আগ্রহী হচ্ছে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

অ্যাপলের সঙ্গে স্যামসাংয়ের চুক্তির মূল্য কত হবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানা যায়নি। স্যামসাং আইফোনের ৭৫ শতাংশ চিপ তৈরি করবে বলে জানিয়েছে কোরীয় গণমাধ্যমটি। তবে বাকি ২৫ শতাংশ চিপ কোন কোন প্রতিষ্ঠান তৈরি করবে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। স্যামসাং এসব চিপ যুক্তরাষ্ট্রে টেক্সাসের অস্টিনে একটি কারখানায় তৈরি করবে। তবে এ বিষয়ে অ্যাপলের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

গত বছর মোবাইল ডিভাইস বাজারের শীর্ষে ছিল স্যামসাং। তার পরই ছিল অ্যাপলের অবস্থান। ২০১৩ সালের তুলনায় গত বছর কোরীয় প্রতিষ্ঠানটির বাজার দখল উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পায়। সে তুলনায় অ্যাপলের বাজার দখল খুব একটা কমেনি। একাধিক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি বছরও মোবাইল ডিভাইসের বাজারে স্যামসাংয়ের দখল কমবে। দামি ডিভাইসের বাজারে অ্যাপল ও কম দামের ডিভাইসের বাজারে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর আধিপত্য বৃদ্ধি স্যামসাংকে অনেকটা চাপের মধ্যেই রেখেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, কম দামের ডিভাইসের চাহিদা বাড়ার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় কমে যাচ্ছে। আর এর প্রভাব স্যামসাংয়ের ওপরই বেশি পড়ছে। কারণ দামের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়য়েও ঠিক খাপ খাইয়ে উঠতে পারছে না কোরীয় প্রতিষ্ঠানটি। স্যামসাংও এ পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে। আর এ কারণেই তারা চিপ খাতে আধিপত্য বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে।

গত বছরের শেষ দিকে বাজারে আসার পর এ পর্যন্ত আইফোন সিক্স ও সিক্স প্লাস বিপুল সংখ্যায় বিক্রি হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, ডিভাইস দুটি সাম্প্রতিক সময়ে অন্যান্য কোম্পানির মোবাইল ডিভাইস বিক্রিতে নেতিবাচক প্রভাব রাখছে। এ দুই ডিভাইসের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো বড় পর্দার স্মার্টফোনের বাজারে প্রবেশ করেছে অ্যাপল। আর ফ্যাবলেটের ক্রমবর্ধমান চাহিদার স্রোতে অ্যাপলের ডিভাইস দুটি বিপুল সংখ্যায় বিক্রি হয়েছে। দাম বেশি হলেও ব্র্যান্ড নেমসহ গুণগত মানের কারণে আইফোনের চাহিদা ছিল আগে থেকেই। আর পরবর্তী আইফোনে স্যামসাং যদি ৭৫ শতাংশ চিপ সরবরাহ করতে পারে, তবে সেক্ষেত্রে স্যামসাংয়ের আয় অনেকাংশ বাড়বে। আর প্রতিষ্ঠান দুটির এ ধরনের চুক্তি স্যামসাংকে শীর্ষস্থানীয় চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে তুলবে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।