Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

আমি অপমানিত হয়েছি : প্রধানমন্ত্রী

Hasina

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের সামনে থেকে ফিরে যাওয়াকে অপমান হিসেবে দেখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

chardike-ad

সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের মূল আলোচনা শেষে আরাফাত রহমানের মৃত্যুতে সমবেদনা জানাতে প্রধানমন্ত্রীর গুলশান যাওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান মন্ত্রিসভার সদস্যরা। এ সময় বিষয়টি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারের একাধিক মন্ত্রী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মন্ত্রীরা জানান, এটি মন্ত্রিসভায় কোনো মূল আলোচনার বিষয় ছিল না। যখন মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ হয়েছে, তখন প্রধানমন্ত্রীকে এর জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে ওই মন্ত্রীরা বলেন, ‘আমরা ধন্যবাদ জানানোর পরে তিনি বলেন, আমি সেখানে রাজনীতি করতে যাইনি। সেখানে গিয়েছিলাম মানবিক কারণে। একজন মায়ের শোকে, কেবল একজন মা হিসেবে। কিন্তু আমি অপমানিত হয়েছি। আমি এটা আশা করিনি। কারণ আমি যোগাযোগ করে গিয়েছি। সেখানে বড় গেটতো বন্ধ ছিল। অন্তত ছোট গেট খোলা থাকবে! সেটিও তালা মারা ছিল।’

এ সময় মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপননি অপমানিত হননি। তার প্রমাণ হলো, জনমতের চাপে তাদের জ্যেষ্ঠ নেতা মওদুদ আহমেদ বলতে বাধ্য হয়েছেন, এ আচরণ করা ঠিক হয় নাই। এর মানে তারা বিরাট একটা ভুল করেছে। তাই অপমানিত আপনি হননি, অপমানিত হয়েছে তারাই।’

জানা যায়, শনিবার রাতে গুলশানের কার্যালয় থেকে প্রধানমন্ত্রী ফিরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ওই কার্যালয়েই ছিলেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামের সদস্য ড. আর এ গণি, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল কাইয়ুম, চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেলসহ আরো অনেকে।

আরাফাত রহমান কোকো শনিবার বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ১২টায় মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। খবরটি বাংলাদেশে পৌঁছালে মা খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে অনেকেই তার গুলশানের কার্যালায়ে যান।

সন্ধ্যার পরে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঘোষণা আসে, তিনি কার্যলয়ে অবস্থানরত শোকাহত খালেদা জিয়াকে সান্ত্বনা দিতে যাবেন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস সাইফুজ্জামান শিখর খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসকে ফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর কিছু সময় পর আনুমানিক রাত সোয়া ৮টার দিকে শিমুল বিশ্বাস গণমাধ্যমে বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ঘুমের ইনজেকশন দেওয়ায় তিনি ঘুমিয়ে পড়েছেন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সাক্ষাৎ আপাতত হচ্ছে না।’

এর আগেই গণভবন থেকে খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের উদ্দেশে রওনা হয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ডা. দীপু মনি, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে তৎকালীন সংসদের বিরোধী দলের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোটো ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর বিয়ের শুভ মুহূর্তে তার বাসায় গিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এবার সেই কোকোর মৃত্যুতেই বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে তার কার্যালয়ে গিয়েছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু তিনি গাড়ি থেকে নেমে কার্যালয়ের সামনে কয়েক মিনিট অপেক্ষা করলেও দরজা খোলা হয়নি। এরপর তিনি ফিরে যান গণভবনে।

পরে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল ওই (শনিবার) রাতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘুম ভাঙার পর খালেদা জিয়া যখন জানতে পারেন প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন, তখন তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।’