ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) পরিচালিত কয়েক দফা অভিযানে গত শুক্রবার ভূমধ্যসাগর থেকে চার হাজারের বেশি অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃতদের সাময়িকভাবে ইতালির উপকূলে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। খবর এএফপি।
ইতালির কোস্টগার্ডের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, দিনভর অভিযান চালিয়ে কয়েকটি নৌকা থেকে প্রায় ৪ হাজার ২০০ অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে তারা। এ অভিযানের সমন্বয় করেছে ইতালির কোস্টগার্ড। অভিবাসীদের ইতালির উপকূল ল্যাম্পেদুসা ও পোর্ট অব টরন্টোয় রাখা হয়েছে। সাময়িক আশ্রয়ের জন্য তাদের অন্য কোথাও নেয়া হতে পারে।
শুক্রবার পরিচালিত এ উদ্ধার অভিযানে ইতালি ছাড়াও অংশ নেয় ইইউর ফ্রনটেক্স বর্ডার এজেন্সির অন্তর্গত জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের নৌবাহিনীর কয়েকটি জাহাজ। লিবিয়া ও ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলের কাছে প্রায় ২২টি ভিন্ন ভিন্ন নৌকা থেকে সাহায্যের আহ্বান পান উদ্ধারকারীরা।
২৪ ঘণ্টার এ অভিযানে উদ্ধারকৃত লোকের সংখ্যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে একদিনে সর্বোচ্চ উদ্ধারকৃত অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৭৯১ জন, যাদের ১২ এপ্রিল উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ২ মে উদ্ধার করা হয় ৩ হাজার ৬৯০ অভিবাসীকে।
শুক্রবারের অভিযানে তিনটি ছোট ডিঙি থেকে তিনটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই নৌকাগুলো থেকে আরো ৩০০-এর বেশি অভিবাসীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে জানিয়েছেন ইতালির নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা। নৌবাহিনীর প্রেস অফিস এএফপিকে অভিবাসীদের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে তাত্ক্ষণিকভাবে কিছু নিশ্চিত করতে পারেনি।
উদ্ধারকারী দলের ইতালির সদস্যরা এর আগে সাগরে ভেসে চলা অভিবাসীদের দুর্দশার বর্ণনা দেন। চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া, খাদ্য ও পানীয় সংকট, নিজেদের মধ্যে সংঘাত প্রভৃতির মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে টিকে থাকে তারা।
কয়েক দিন আগে আরেকটি আন্তর্জাতিক নৌ-অভিযান চালিয়ে লিবিয়া উপকূলে ছয়টি নৌকা থেকে প্রায় ৭০০ অভিবাসী উদ্ধার করা হয়। সিরিয়া ও ইরিত্রিয়ার মতো দেশ থেকে সংঘাত ও দারিদ্র্যের কারণে চলতি বছরের শুরুতে সার্বিকভাবে প্রায় ৪০ হাজার ৪০০-এর বেশি অভিবাসী অবৈধভাবে ইতালিতে পৌঁছে। গত বছরের চিত্রও ছিল মোটামুটি একই রকম।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থার (আইওএম) হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরে ইউরোপ অভিমুখে যাত্রাকালে এ পর্যন্ত অন্তত ১ হাজার ৭৭০ জন অভিবাসীর মৃত্যু হয়।