Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

৬ কেজি আটায় শিশু বন্ধক!

bondhokiআর্থিক প্রয়োজনে বন্ধক নেওয়া আদিকাল থেকেই প্রচলিত। সাধারণত: মূল্যবান অলঙ্কার বা জমি জমা গচ্ছিত রেখে অবস্থাপন্ন ব্যক্তি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নগদ অর্থ ধার নিয়ে থাকে। তাই বলে নিজের সন্তানকে?

কিন্তু সব সম্ভবের দেশ ভারতেই এই চরম নিষ্ঠুরতার একধিক ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি।

chardike-ad

গত ৫ বছর ধরে মধ্যপ্রদেশের এক ভূস্বামীর জমিতে কাজ করে আসছিল ১৪ বছরের শান্তারাম। মাত্র পাঁচ হাজার রুপি আর ৬ কেজি আটার বিনিময়ে ৯ বছরের শিশু শান্তারামকে বন্ধক দিয়েছিলেন তার অসহায় বাবা-মা। দিনে দিনে সেই বন্ধকের টাকা সুদের জটিলতায় কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় বন্ধকী ছেলেকে আর মুক্ত করতে পারেননি তারা। সম্প্রতি এনডিটিভি’তে এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ১৫ বছরের শান্তারামকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে।

বন্ধকী অবস্থায় অমানুষিক পরিশ্রম করতে হত শান্তারামকে। গত ৫ বছর ধরে প্রতিদিন ক্ষেতে গড়ে ১২ ঘণ্টা অব্দি কাজ করেছে শিশুটি। বিনিময়ে তার পরিবারকে দেয়া হয়েছে বছরে মাত্র ১শ কেজি গম। ‘আমি কাজ ছেড়ে যেতে চাইলেই মালিক আমাদের ঋণের সঙ্গে আরো সুদ যোগ করতেন। এভাবেই তার কাছে আমাদের পাহাড় পরিমাণ দেনা জমেছে। এই দেনা শোধ না করা অব্দি আমার মুক্তি নেই। আমাকে বুড়ো হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কাজ করতে হবে। কাজ করতে করতেই আমি একদিন শেষ হয়ে যাব।’ বন্দি অবস্থায় এনডিটিভি’র কাছে এভাবেই নিজের কষ্টের কথা বর্ণনা করেছিল শান্তারাম।

এই কাহিনী প্রচারিত হওয়ার পরপরই টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের। রোববার শান্তারামসহ বেশ কিছু বন্ধকী শিশুকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে। এ ঘটনায় মধ্যপ্রদেশের হারদা জেলার বাসিন্দা শান্তারামের নিয়োগকর্তাকেও আটক করেছে জেলা প্রশাসন।

তবে হারদা প্রশাসন এর আগে দাবি করেছিল, তাদের জেলায় কোনো শিশু শ্রমিক নেই। রাজ্য সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা তিমারনি জেপি সাচাং তখন এনডিটিভি’কে বলেছিলেন, তাদের টিম বিভিন্ন গ্রামে অনুসন্ধান চালিয়েছে। কিন্তু একটি বন্ধকী শিশু শ্রমিকও খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু বুধবার ওই জেলার প্রশাসক সান্তারামের সঙ্গে ১২ এবং ১০ বছরের আরো দুজন শিশুকে উদ্ধার করেছে। এদের দুজনকে ৩ হাজার এবং ৪ হাজার রুপির বিনিমিয়ে বন্ধক রাখা হয়েছিল বলে ওই সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে।

এদিকে ‘সিনারগি সন্তান’ নামের স্থানীয় এক এনজিও বলছে, কেবল হারদা জেলাতেই রয়েছে ২ হাজারের বেশি বন্ধকী শিশু শ্রমিক।