Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ঈদে ঘুরে আসতে পারেন মালয়েশিয়া

malayasiaআমরা যারা ছুটিছাটা পেলেই দেশে অথবা দেশের বাইরে কোথাও বেড়াতে যাই দুটো দিন আরাম করে কাটানোর জন্য, তাদের জন্য আজকের লেখায় থাকছে মালয়েশিয়া ভ্রমণের বৃত্তান্ত। কারণ সামনে ঈদ। আর ঈদের ছুটিতে পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে আপনিও নিশ্চয়ই কোথাও যাবেন বলে ভেবে রেখেছেন। এবার চলুন মালয়েশিয়া গিয়ে কী দেখা যেতে পারে জেনে নেই।

ক্যামেরুন হাইল্যান্ড : বৃটিশ কর্তৃক নির্মিত বৃহৎ পাহাড়ি ঘাঁটি এটি। বর্তমানে এখানকার লোক সংখ্যা ৩০ হাজারের উপর। যার মধ্যে মালয়, চাইনিজ, ইন্ডিয়ান ও অন্যান্য এ্যাথনিক গোষ্ঠীর কিছু মানুষ বসবাস করে। হাইল্যান্ডটি ট্রেইলের জন্য বিখ্যাত। যেতে হয় ট্রেইল ধরে। চলতি পথের প্রধান আকর্ষণ সবুজ বন ও ঝরনা। জঙ্গল পথে হাঁটা ছাড়াও অভয়ারণ্যটি আরও এক কারণে বিশ্বের পর্যটকদের নিকট পরিচিত, তা হলো চা বাগান। চাইলেই ঘুরে ঘুরে দেখে নেয়া যেতে পারে বিস্তীর্ণ বাগানগুলো।

chardike-ad

malaysiaজর্জ ইনার সিটি : বৃটিশ রাজা তৃতীয় জর্জ এর নামানুসারে জায়গাটির নামকরণ করা হয়। এর অবস্থান উত্তর পানাং আইল্যান্ডে। শহরের বেশিরভাগ অধিবাসী চাইনিজ। ঔপনিবেশিক আমলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো আজও আকার্ষণ হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বিশেষত স্থাপত্য নিদর্শনের অনুপম শৈলী ও গঠনের জন্য জর্জ টাউন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অদ্বিতীয়। এই শহরের যৌবন জেগে ওঠে সন্ধ্যায়। যখন রাস্তায় রাস্তায় স্থানীয়রা স্ট্রিট ফুড ও ড্রিঙ্কস সংগ্রহ করতে জড়ো হয়।

তামান নেগার : তামান নেগার অর্থ জাতীয় উদ্যান। পৃথিবীর প্রাচীনতম উদ্যানগুলোর মধ্যে একটি। বৃক্ষের পাশাপাশি এখানে রয়েছে অনেক ঝরনা। রয়েছে জঙ্গলের মনোরম পরিবেশের মাঝে ট্রেকিংয়ের সুব্যবস্থা। আরও রয়েছে চাঁদোয়া দীপ্তিতে ঢাকা পৃথিবীর দীর্ঘতম পায়ে হাঁটার উপযোগী পথ। তামান নেগারকে স্বর্গ বলা হয় সেই সমস্ত প্রাণীর জন্য, যারা এশিয়ার বুক থেকে বিলুপ্ত প্রায়। এদের মধ্যে এশিয়ান হাতি, বাঘ, গন্ডার এবং চিতা উল্লেখযোগ্য। সংখ্যায় কম তাই এদের সচরাচর দেখা যায় না। তবে নিশ্চিতভাবে আপনি বহু প্রজাতীর পখি দেখতে পাবেন সেখানে।

malayasia
মালয়েশিয়ার অন্যতম আকর্ষণ কেবল কার

পুলাউ তিওমান :  ১৯৭০ সালে টাইম ম্যাগাজিনে নির্বাচিত পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দ্বীপগুলোর মধ্যে এটি স্থান করে নিয়েছিল। এর অবস্থান দেশটির পূর্ব উপকূলের কাছে। পর্যটকরা স্বর্গসম সৌন্দর্য উপভোগের উদ্দেশে এখানে গিয়ে থাকে। সম্পূর্ণ দ্বীপ প্রবাল প্রাচীরে ঘেরা। স্কুবা ডাইভারদের জন্য দ্বীপটি সাক্ষাত স্বর্গ।

পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার :  ২০০৪ সাল পর্যন্ত পৃথিবীর সর্বোচ্চ টাওয়ার এটিকেই বলা হতো। এই যমজ দালানের নির্মাণশৈলীর মাঝে ইসলামিক স্থানীয় সংস্কৃতির এক নান্দনিক বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়। দুই টাওয়ারের মাঝের ব্রিজকে বলা হয় স্কাই ব্রিজ। ৫০ রিঙ্গিত বা ১২শ` টাকার নিময়ে দর্শনার্থীরা উঠতে পারবেন এই স্কাইব্রিজে।

malaysia
এই ক্রিস্টাল মসজিদটির কিছু অংশ সমুদ্রে আর কিছু অংশ স্থলে

লঙ্কাবি :  মালয়েশিয়ার বহুল প্রচলিত পর্যটন কেন্দ্র লঙ্কাবি। ৯৯টি দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত এই দ্বীপপুঞ্জের অবস্থান আন্দামান সাগরে। এখানে সর্বাপেক্ষা নয়নাভিরাম সমুদ্র সৈকত রয়েছে। অধিকন্তু উৎকৃষ্ট মানের রিসোর্ট ও রেস্তোরাঁ রয়েছে। আসলে কি নেই এখানে, কেবল কার, ঝরনা, সমুদ্রের নিচ দিয়ে রাস্তা, ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট আরও কত কি! একটু ভিন্ন স্বাদের জন্য একটি নৌকা ভাড়া করে চলে যেতে পারেন ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের ভেতর। সেখানেও আছে বাদুরের গুহা, ঈগলের গুহা ইত্যাদি দর্শনীয় স্থান।

পারহেন্টিয়ান আইল্যান্ড :  দেশটির অন্যান্য দ্বীপের মধ্যে পর্যটক আকর্ষণের দিক থেকে এই দ্বীপের অবস্থান শীর্ষে। সুন্দরতম দ্বীপটির সৈকতে সস্তায় থাকা ও খাওয়ার সুবন্দবস্ত রয়েছে।

malaysia
সৈকতে প্রবাল

মুলু কেভস :  এটি একটি গুহা। এটি দেশের বিখ্যাত গুনুং মুলু জাতীয় উদ্যানে অবস্থিত। উদ্যানটি অবিশ্বাস্যভাবে এই গুহা দ্বারা ঘেরা। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গুহাপ্রকোষ্ঠ আবিষ্কৃত হয়েছে এই গুহাভ্যন্তরে। উল্লেখ রয়েছে প্রকোষ্ঠের আকার এতই বড় যে, তার ভেতরে অনায়াসে চল্লিশখানা বোইং-৭৪৭ উড়োজাহাজ এটে যেতে পারে।

malaysia
পাহাড়ে দেবতার মূর্তি

আর মালয়েশিয়ার ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে চলে যেতে পারেন মালাক্কা সিটি। কেনাকাটার জন্য যেতে পারেন প্যাভিলিয়ন, টাইমস স্কয়ার, বিবি প্লাজা, সানওয়ে পিরামিড মার্কেট ইত্যাদি শপিং মলগুলোতে। পৃথিবীর সবগুলো ব্র্যান্ডের পণ্যই পাবেন এই মার্কেটগুলোয়। এ ছাড়া মালয়েশিয়ার স্থানীয় পণ্যগুলোও গুণগত মানসম্পন্ন, দামও ক্রয়সীমার মধ্যেই। আর ইলেক্ট্রনিকস পণ্য কিনতে চাইলে অবশ্যই যেতে হবে ল-ইয়েট প্লাজা।