Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ পাঁচ নগরী!

এ পৃথিবীতে নিরাপত্তার অভাব সর্বত্র। চুরি, ডাকাতি, হানাহানি, লুটপাট, রাজনৈতিক হত্যাসহ অপরাধের যেন শেষ নেই! কিন্তু এত হতাশার মধ্যেও আশার আলো ছড়িয়ে রয়েছে কোন কোন শহর ও নগরে? এমন নগর এ ধরিত্রিতে আছে মাত্র পাঁচটি।

এ পাঁচটি শহরের মানুষ নির্বিঘ্নে ও নিশ্চিন্তে দিনযাপন করেন। এমনকি গভীর রাতে চলাফেরা করতেও কোন সমস্যা হয় না সেখানে। রাস্তায় চলাফেরা করার সময় মোবাইল, টাকা পয়সা, ল্যাপটপ কোন কিছুই ছিনতাই হওয়ার ভয় নেই। এমনকি তরুণ-তরুণীরাও নিশ্চিন্তে কাজে যেতে পারেন রাত-বেরাতে।

chardike-ad

তরুণ তরুণীরা জানেন তাদের ল্যাপটপ কড়া পাহারা দেওয়ার কিছু নেই। কারণ কেউই চুরি করবে না। এসব নিয়ে চিন্তাও করতে হয় না। এ পৃথিবীর সেরা পাঁচটি নগরীর মানুষ কত নিরাপদ ও সুন্দর জীবন অতিবাহিত করে তা বাংলাদেশের জনগণ চিন্তাও করতে পারবেন না।

নিরাপদ নগরী হওয়ার জন্য যে সব বৈশিষ্ট্যের প্রয়োজন তা হচ্ছে শক্তিশালী ভৌত অবকাঠামো, স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং প্রযুক্তিগত উন্নতির সর্বোচ্চ পর্যায়ে অবস্থান। প্রতিবেশি ও আশে পাশের মানুষও ভাল হতে হবে যেন কেউ কারো কোন ক্ষতি বা বাজে চিন্তা না করেন।

মানুষের চলাফেরায় যেন কেউই কোন প্রকার বিরক্তি না ঘটায় সেটাও বিবেচ্য বিষয়। সবচেয়ে নিরাপদ নগরীর এগুলোই প্রধান বৈশিষ্ঠ।

বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ ৫টি নগরীর বর্ণনা দেয়া হল:

osakaওসাকা : বিশ্বের  সবচেয়ে নিরাপদ নগরী জাপানের ওসাকা। এ নগরীর মানুষ আরাম আয়েশে দিন কাটায়। মানসিক প্রশান্তিতে থাকে এ নগরীর মানুষ। কোথাও কোন প্রকার দুশ্চিন্তা করতে হয় না তাদের।

কানসাই সিনে ম্যাগাজিনের সম্পাদক ড্যানিয়েল লি বলেন,‘জাপান হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে শান্তিময় দেশ, আর ওসাকা সবচেয়ে নিরাপদ নগরী । এখানে বাস করার আনন্দই অন্যরকম।’
ইংল্যান্ড থেকে ১৭ বছর আগে ওসাকায় চলে আসেন ড্যানিয়েল লি। তারপর থেকে এখানেই আছেন। মাঝ বয়সী এ সম্পাদক জীবনের  বাকী সময় এখানেই কাটিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন।

amstadamআমস্ট্রাডাম : নিরাপদ নগরীর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে নেদারল্যান্ডের রাজধানী আমস্ট্রাডাম। এ শহরের মানুষ কখনই কোন বিপদের কথা ভাবতেও পারেন না। তাদের এ ধরনের চিন্তা মাথায়ও আসে না। সুখের জীবন অতিবাহিত করেন তারা।

বেসরকারী প্রতিষ্ঠান আন্দেজের কর্ণধার টনি হিরিটোরিসো বলেন,‘আমস্ট্রাডাম নগরীতে কতটা নিরাপদে আছি তা বলে ব্যাখ্যা করতে পারব না। এ কারণে, ব্যস্ততম নগরী নিউইয়র্ক থেকে তিন বছর আগে চলে আসি এখানে।’

আমস্ট্রাডামের মানুষ নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে দিন কাটান। নগরীতে কোন প্রকার রাজনৈতিক সংঘাত, দ্বন্ধ, হানাহানি নেই।

নগরীর কোথাও বৃষ্টির পানি জমে থাকে না। সর্বত্র স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রয়েছে। বিশেষ করে রাস্তার দু’ধারে প্রচুর গাছ লাগানো হয়েছে। এর ফলে ছায়া ঘেরা পরিবেশ বজায় থাকে সব সময়।

sydneeসিডনি : অস্ট্রেলিয়ার  সবচেয়ে বৃহৎ নগরী সিডনি। এ নগরীর মানুষ খুবই আরামপ্রিয় এবং সংস্কৃতিমনা। এ নগরীতে বসবাসরত বিদেশী নাগরিকরা পর্যন্ত এটাকে নিজের দেশের মত ভাবতে পারেন। একে অপরের সুখ দু:খে এগিয়ে আসেন সবাই।

নগরীর শোভা বর্ধনের জন্য স্থানীয় সরকার ফুটপাথ প্রসারিত করেছে। মানুষ যেন স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারে সেজন্যই এ ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর জন্য ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার ব্যয় করা হয়েছে।

স্থানীয় নাগরিক এবং বিদেশী পর্যটকদের জন্য ক্লাব, পার্ক, রেস্তরা, হোটেল, মোটেল অত্যাধুনিক করে গড়ে তোলা হয়েছে। কোথাও কোন বিশৃংখলা নেই। একদম কোলাহল মুক্ত নগরী সিডনি।

singapurসিংগাপুর : দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ছোট্ট একটি দেশ সিংগাপুর। রাজধানী সিংগাপুর সিটি। এ নগরীর সৌন্দর্য্যে বিশ্ববাসী বিস্মিত। এর নিরপত্তা দেখে সত্যিই অবাক হতে হয়।

নগরীর কোথায় কোন অঘটন ঘটার সুযোগ নেই। আইন শৃংখলা বাহিনী, পুলিশ সর্বত্র কড়া নজর দিয়ে নগরীর জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকে।

পুলিশ কোন প্রকার অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত হয় না। পুলিশের বেতন খুব উচ্চ পর্যায়ে। পুলিশ যেন কোন প্রকার অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে না পড়ে  সে জন্য এ বিভাগে বেতন বেশি প্রদান করা হয়। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই পুলিশকে সতর্ক রাখা হয়। ‘জনগণের কল্যাণেই পুলিশ’ এ মন্ত্রে দীক্ষা দেয়া হয় তাদের।

রাজনৈতিক স্থীতিশীলতার কারণেই নগরীতে কোন প্রকার সংঘাত নেই। উগ্র সাম্প্রদায়িকতার কোন স্থান নেই সিংগাপুর সিটিতে।

stockhomeস্টকহোম : সুইডেনের রাজধানী স্টকহোম। নিরাপত্তার চাদরে ঘেরা পুরো নগরী। আলো আর আলো ছড়িয়ে রয়েছে পুরো শহরে। স্টকহোম নগরী শিশুদের জন্য স্বর্গরাজ্য বললে ভুল হবে না। পুরা শহর জুড়ে বিনোদন পার্ক, খেলার মাঠ, চারিদিকে সবুজ গাছের সমারোহ।

কোন দু:খ-কষ্ট নেই মানুষের মধ্যে। নগরীতে কোথাও কোন অপরাধ সংগঠিত হয় কিনা তা বলা খুবই মুশকিল। আধুনিক প্রযুক্তি আর জ্ঞানের সমন্বয় ঘটিয়ে মানুষের জীবন যাত্রা উন্নত করা হয়েছে স্টকহোমে।

কোন প্রকার চুরি,ডাকাতি, রাহাজানির কথা কেউ চিন্তাই করতে পারেন না। শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ ব্যবস্থা এতটাই উন্নত যে সাধারন মানুষ এ জন্য কোন দুশ্চিন্তা করেন না।

সূত্র: বিবিসি অনলাইন