ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে সৌদি আরব গিয়ে লাশ হয়ে ফিরেছেন লক্ষ্মীপুরের আবদুর রহমান (৫০)। রান্না ঘরের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান তিনি।
সোমবার ভোরে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সৌদি এয়ারলাইন্স থেকে লাশটি গ্রহণ করেন নিহতের স্বজনরা।
নিহত রহমান লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চর মোহনা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড এলাকার হাসান আলী ব্যাপারি বাড়ির মৃত নোয়াব আলীর একমাত্র ছেলে।
নিহতের শ্যালক মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, আবদুর রহমানকে তিনি তার নিজ দোকানে চাকরি দেন। প্রায় ১০-১২ বছর পর্যন্ত সৌদি আরবে ছিলেন তিনি। গত ১০ জুন রাতে কাজ সেরে কর্মস্থল থেকে দাম্মাম এলাকার বাসায় যান রহমান। রাত খাওয়া দাওয়া শেষে বাসায় ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে হঠাৎ করে রান্না ঘরের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে পুরো বাসায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ওই কক্ষে অবস্থারত বাংলাদেশিসহ অনেকে বাসা থেকে বের হয়ে গেলেও আবদুর রহমান বের হতে পারেননি।
অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় বের হওয়ার চেষ্টা করলে পড়ে গিয়ে মারা যান আবদুর রহমান। কাগজপত্র নিয়ে কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ দৃতাবাসের মাধ্যমে দীর্ঘ দিন পর তার লাশ রোববার রাত ৪টার দিকে সৌদি থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়।
জাহাঙ্গীর আলম আরও জানান, সৌদি কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো ধরনের অর্থনেতিক সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। সোমবার সকালে তারা লাশ নিয়ে লক্ষ্মীপুরের গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন।
এদিকে নিহতের বড় ছেলে ও রামগঞ্জ মডেল কলেজের বিবিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র শাহীন হোসেন জানান, তারা দুই ভাই ও এক বোন বাবার দেয়া অর্থে পড়ালেখা চালাতেন। তার ছোট ভাই রায়পুর কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষে অধ্যায়নরত এবং বোন রায়পুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। বাবার মৃত্যুর পর তাদের পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
তিনি আরও জানান, বাবাই ছিলেন তাদের একমাত্র উপার্জনকারী। গত বছর রোজায় তার বাবা দেশে আসেন। ছুটি কাটিয়ে আবার চলে যান। মৃত্যুর পূর্বে গত ৯ জুন রাতেই বাবার সাথে শেষ কথা হয়। তখন তিনি মোবাইলে বলেছিলেন, তোমরা কোনো চিন্তা করো না। নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে যাও আমি কিছুদিন পর টাকা পাঠাবো। এভাবে বাবার মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি।(বাংলামেইল২৪)