উত্তর কোরিয়ার যে কোনও রকেট ভূপাতিত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাপান। ওদিকে, দক্ষিণ কোরিয়াও হুঁশিয়ার করে বলেছে, উত্তর কোরিয়া পরিকল্পনামাফিক রকেট উৎক্ষেপণ করলে তাদেরকে ‘চরম মূল্য’ দিতে হবে।
মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই উত্তর কোরিয়া চতুর্থ পরমাণু পরীক্ষা চালানোর পর আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করার কথা জাতিসংঘ সংস্থাগুলোকে জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এর পরপরই বুধবার উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাল দুই প্রতিবেশী দেশ জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া।
জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেন নাকাতানি জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার উৎক্ষেপণ করা যে কোনও রকেট ভূপাতিত করার নিদের্শ দিয়ে রেখেছে সরকার। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) কাছে উত্তর কোরিয়া বলেছে, তারা কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করবে।
কিন্তু জাপান বলছে, এটি কোন উপগ্রহ নয়, উপগ্রহের মোড়কে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এসএম-৩ ক্ষেপণাস্ত্র। এর প্রেক্ষিতে কয়েকদিন থেকে জাপান দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তা বাড়ানোসহ কয়েকটি জায়গায় যন্ত্র বসিয়েছে।
জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নাকাতানি টোকিওতে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা বারবার উত্তর কোরিয়াকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ না করার দাবি জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু তারা তাদের অবস্থান থেকে সরেনি। তাই দেশের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন থেকে যেকোন সময় জাপানের আকাশে কোন কিছু দেখা গেলে নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী (এসডিএফ) তা ভূপাতিত করবে।”
ওদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের ব্লু হাউজ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “উত্তর কোরিয়ার অবিলম্বে রকেট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা বাদ দেওয়া উচিত। কারণ, এটি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনার লঙ্ঘন। তারা দূর-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগুলে চরম মূল্য দিতে হবে বলে আমরা কঠোরভাবে উত্তর কোরিয়াকে সতর্ক করে দিচ্ছি।”
জাপান এরই মধ্যে টোকিও ও ওকিনাওয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার জন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন যন্ত্র পিএসি৩ স্থাপন করেছে। সেনারাও প্রস্তুত রয়েছে।
এর আগে বুধবার সকালে জাপানের বাজেট অধিবেশনের আগে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেছেন, উত্তর কোরিয়া মিথ্যাচার করছে। তারা কৃত্রিম উপগ্রহের নামে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ছে। এটি নৈতিকতা বিরোধী। আমি সেনাদেরকে সাধারন মানুষকে ক্ষতির হাত থেকে মুক্তি দিতে সব ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে বলেছি।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে মিলে উত্তর কোরিয়ার যেকোন অন্যায় কাজের বিরুদ্ধে অবস্থান নেব। আর সেখানে জাপান সরকার সব ধরনের সহায়তা করবে।
উত্তর কোরিয়ার ঘোষণা অনুযায়ী, উপগ্রহটি দক্ষিণ কোরিয়া উপদ্বীপ, পূর্ব চীন সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় থাকবে। কিন্তু জাপান মনে করছে, এটি ওকিনাওয়ার নিকটবর্তী সাকিশিমা দ্বীপের কাছে আসতে পারে।
মন্ত্রী পরিষদ সচিব ইয়াশিদা সুগা বলেন, ২০১২ সালে উত্তর কোরিয়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল। কোনও দেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন আর্ন্তজাতিক অপরাধ। তাই আমরা যেকোন মূল্য পিংইয়ং এর ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ করব।(বিডিনিউজ)