Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ইতালিকে কাঁদিয়ে সেমিফাইনালে জার্মানি

 

germanyঅবশেষে নবম চেষ্টায় এসে ইতালি বাধা পেরোতে পারল জার্মানি।

chardike-ad

বিশ্বকাপ হোক বা ইউরো, প্রতিপক্ষ ইতালি হলেই কেন যেন একটু দমে যেত জার্মানি। এর আগের ৮ বারের দেখায় ইতালি বাধা পেরোতে পারেনি জার্মানি। অবশেষে সেই ধারাটা ভাঙল বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। আজ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে ৬-৫ গোলে ইতালিকে হারিয়েছে জোয়াকিম লোর দল। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয়েছে ১-১ গোলের ড্রতে।

সেমিফাইনালে জার্মানির প্রতিপক্ষ ফ্রান্স-আইসল্যান্ডের শেষ কোয়ার্টার ফাইনালটির বিজয়ী দল।

ইতালি অবশ্য আক্ষেপ করতেই পারে। টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত পরিকল্পিত ফুটবল উপহার দেওয়া দলটি শেষ পর্যন্ত কিনা বাদ পড়ল টাইব্রেকারের ভাগ্যপরীক্ষায়! অবশ্য টাইব্রেকারটা হলোও বেশ রোমাঞ্চকর। প্রতিটি শটেই যেন পেন্ডুলামের মতো দুলেছে ম্যাচের ভাগ্য।

প্রথমে ইতালির হয়ে শট নিতে এসেই গোল করলেন লরেঞ্জো ইনসিনিয়ে। সমতা ধরে রাখলেন জার্মানির টনি ক্রুস।  এরপর থেকেই শুরু হলো যত নাটক। ইতালির দ্বিতীয় শট মিস করলেন সিমোনে জাজা। কিন্তু এগিয়ে যাওয়ার সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলেন না টমাস মুলার, জার্মান মিডফিল্ডারও করলেন মিস! পরের শটেই বারজাল্লি ইতালিকে এগিয়ে দেওয়ার পর জার্মানির হয়ে ওজিলও যখন মিস করলেন,  মনে হচ্ছিল এবারও বুঝি কান্নাটাই জার্মানির ভাগ্যলিপি।

কিন্তু না, দলের চতুর্থ শটটি নিতে এসেই আবার ভজকট পাকিয়ে ফেললেন ইতালি স্ট্রাইকার গ্রাৎসিয়ানো পেল্লে। তিনি মিস করার পর আবার সমতা ফেরানোর সুযোগ এল জার্মানির সামনে, দুহাতে সুযোগটা নিলেন জুলিয়ান ড্রেক্সলার। কিন্তু নাটকের তো তখনো অনেক বাকি! দুই দলই এরপরের শটে গোল করতে ব্যর্থ। ইতালির বোনুচ্চির শট ঠেকিয়ে দিলেন ম্যানুয়েল ন্যয়ার, কিন্তু জার্মানির শোয়েইনস্টাইগার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ উড়িয়ে মারলেন বারের ওপর দিয়ে। তখনও পেনাল্টিতে ২-২ সমতা!

পরের তিনটি শটেও সমতা! ইতালির হয়ে জাকেরিনি, পারোলো ও ডি সিলিও গোল করলেন, ওদিকে সমতা ধরে রাখেন জার্মানির হুমেলস, কিমিচ ও বোয়াটেং। ম্যাচের ফল নির্ধারিত হলো এরপরের শটে, দুই দলের নবম শট! ইতালির মাতেও দারমিয়ানের শট ঠেকিয়ে দিলেন ন্যয়ার, এরপর জার্মানির হয়ে ‘ইতিহাস বদলে দেওয়া’ পেনাল্টিতে গোল করলেন লেফট ব্যাক জোনাস হেক্টর। জার্মানি ৬- ইতালি ৫!

নাটকীয়তার এই টাইব্রেকারই ম্যাচের সবচেয়ে উত্তেজনার অংশ। এর আগে ১২০ মিনিট ধরে ফুটবলে চলল দুই কোচের কৌশলের প্রদর্শনী। দুই দলের কেউই কাউকে এক ইঞ্চি জায়গাও ছেড়ে দিতে রাজি নন। এ কারণে সুযোগও এল খুব কম। প্রতিপক্ষের পায়ে বল গেলেই একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ার বিষয়টি দুই দলের খেলার মধ্যেই বেশ ভালোভাবে দেখা গেল।

২৭ মিনিটেই অবশ্য একবার বল জালে জড়িয়ে দিয়েছিলেন জার্মানির বাস্তিয়ান শোয়েইনস্টাইগার। কিন্তু চোটে পড়া সামি খেদিরার বদলি হিসেবে নামা এই মিডফিল্ডার হেড করার আগে ইতালির এক ডিফেন্ডারকে ফাউল করেছিলেন।

তবে সেবার গোল না হলেও দ্বিতীয়ার্ধে ঠিকই এগিয়ে গেল জার্মানি, মেসুত ওজিলের কল্যানে। ৬৪ মিনিটে বাঁ দিক থেক হেক্টরের ক্রস থেকে গোল করেন জার্মানি মিডফিল্ডার। তবে এগিয়ে থাকাটা বেশিক্ষণ কপালে সইল না জার্মানির। ৭৭ মিনিটেই বক্সের মধ্যে জেরোম বোয়াটেং হ্যান্ডবল করায় পেনাল্টি পায় ইতালি, সেটি থেকে গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান বোনুচ্চি।

তবে শেষ পর্যন্ত পেনাল্টিতে এসে হার মানতেই হলো বোনুচ্চিদের। যদিও টাইব্রেকারে হার ঠিক হার নয়, ফিফার নিয়ম অনুসারে সেটি ড্র-ই, কিন্তু জার্মানির ওসব নিয়ে ভাবার সময় কোথায় এখন? আর দুটি ম্যাচ, তাতে জিতলেই ফ্রান্স ও স্পেনের পর তৃতীয় দল হিসেবে বিশ্বকাপের পর ইউরো জয়ের স্বপ্নে বিভোর জোয়াকিম লোর দল।