Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

আবারও টাইগারদের সঙ্গী আফগান লজ্জা

afghanistan-bangladesh_3092824
ইশ, নাজিবউল্লাহ জাদরানকে যদি মুশফিক স্ট্যাম্পিং করতে পারতেন! ঠিক কী হতো, হতে পারতো বলা কঠিন। তবে এটুকু স্পষ্ট শেষ দিকে রান-বলের স্নায়ুবিক উত্তেজনার সময়টা আফগানিস্তান পাড়ি দিয়েছে নাজিবউল্লাহ জাদরানের ব্যাটে চড়েই। সেই সঙ্গে ঘরের মাঠে বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বার হারানোর অসামান্য গৌরব বগলদাবা করলো আফগানিস্তান। বুধবার রাতে মিরপুর স্টেডিয়ামে তাই রচিত হয়নি বাংলাদেশের শততম ওয়ানডে জয়ের ইতিহাস। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে ২ উইকেটে পরাজিত করেছে আফগানিস্তান। সিরিজের স্কোর লাইন এখন ১-১।
প্রথমে ব্যাট করে ৪৯.২ ওভারে ২০৮ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। জবাবে ৪৯.৪ ওভারে ৮ উইকেটে ২১২ রান তুলে ম্যাচ জিতে নেয় আফগানিস্তান। নবী ম্যাচ সেরা হন।
পুঁজিটা বেশি নয়। বল হাতে শুরু থেকেই তাই বাংলাদেশের উইকেটের সন্ধানে। সেই মিশনে সফলতা আসে ৪র্থ ওভারে। দুটি চার দিয়ে ওভার শুরু করা সাকিবের জোড়া শিকারে ফেরান নওরোজ মঙ্গল (১০) ও রহমত শাহকে (০)। তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন মোহাম্মদ শেহজাদ ও হাসমতউল্লাহ শাহিদি। তাদের ৪৫ রানের জুটি বিচ্ছিন্ন হয় অভিষিক্ত মোসাদ্দেকের অফ স্পিনে। ওয়ানডে ইতিহাসের ২৪তম ও প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অভিষেক ওয়ানডের প্রথম বলেই উইকেট নিয়ে বিরল ক্লাবে নাম লেখান এই তরুণ। পরে ক্রমেই বিপদজ্জনক হয়ে উঠা শেহজাদকে নিজের তৃতীয় শিকার বানান সাকিব। শেহজাদ ৩৫ রান করেন।
৬৩ রানে ৪ উইকেট পতনের পর আফগানদের পক্ষে রক্ষণ দেয়াল গড়েন অধিনায়ক আজগর স্ট্যানিকজাই ও নবী। বাংলাদেশকে হতাশা উপহার দিয়ে তারা ১০৭ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান। ৪০তম ওভারে দ্বিতীয় স্পেলে এসে মাশরাফি ভাঙেন সেই জুটি। দলীয় ১৭০ রানে নবী এলবির ফাঁদে পড়েন ৪৯ রান করে। চার রান পরই আজগরকেও প্যাভিলিয়েনের পথ দেখান মোসাদ্দেক। আফগান অধিনায়ক ৫৭ রান করেন। নিজের শেষ ওভারে রশিদ খানকে (৫) এলবিডব্লিউ করে ম্যাচে উত্তেজনার সঞ্চার করেন সাকিব।
পরে মোসাদ্দেকের করা ৪৭তম ওভারে নাজিবউল্লাহ জাদরানকে স্ট্যাম্পিং করার পরিষ্কার সহজ সুযোগ মিস করেন মুশফিক। সেট ব্যাটসম্যান নাজিবউল্লাহ আউট হলে তখন আরও চাপে পড়ে যেত আফগানরা। শেষ ১২ বলে ১১ রানের সমীকরণটা হালকা করে দেন মিরওয়াইস আশরাফ মোসাদ্দেককে ছক্কা মেরে। শেষ ওভারে দরকার ছিল ২ রান। একটি ওয়াইড দিলেও তৃতীয় বলে নাজিবউল্লাহ জাদরানকে ফেরান তাসকিন। তিনি ২২ রান করেন। চতুর্থ বলে চার মেরে আফগানদের জয় নিশ্চিত করেন দৌলত জাদরান। বাংলাদেশের পক্ষে সাকিব ৪টি, মোসাদ্দেক ২টি, মাশরাফি-তাসকিন ১টি করে উইকেট পান।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে বেশ রয়ে-সয়ে শুরু করেছিলেন তামিম-সৌম্য। ৫০ রানের মধ্যে তারা ফিরলেও মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকের তৃতীয় উইকেট জুটি দেখিয়েছিল বড় স্কোরের স্বপ্ন। তবে তাদের চেষ্টা স্থায়ী হয়নি। এবং ইনিংসের মাঝপথে এলোমেলো হয়ে পড়ে টাইগারদের ব্যাটিং লাইন। ইনিংসের ৪৩তম ওভারে তাসকিন যখন আউট হন তখন বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ১৬৫ রান। আফগানদের উজ্জীবিত বোলিংয়ে কাঁপছে বাংলাদেশ, রীতিমতো স্তব্ধ শেরে বাংলার গ্যালিারি। তারপরই আসল ব্যাটিংয়ের রোমাঞ্চটা পেয়েছে শেরে বাংলার দর্শকরা।
অভিষিক্ত মোসাদ্দেকের ব্যাটিং বিনোদিত করেছে সবাইকে। খাদের কিনারে থাকা দলের জন্য বুক চিতিয়ে লড়লেন এই তরুণ। তার ব্যাটে চড়েই দুশো পার হয় বাংলাদেশের স্কোর। আসে লড়াইয়ের পুঁজি। ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচেই দলের ত্রাণকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন মোসাদ্দেক।রুবেলকে নিয়ে ১০ম উইকেটে গড়েছেন ৪৩ রানের মূল্যবান জুটি। ইনিংসের শেষ চার বল বাকি থাকতে ২ রান নিতে গিয়ে রুবেল (১০) রানআউট হন। অপর প্রান্তে ৪৫ বলে ৪টি চার ও ২টি দর্শনীয় ছক্কায় ঝকঝকে ৪৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন মোসাদ্দেক।
মিরওয়াইস আশরাফের শিকার হওয়া তামিম ও সৌম্য ২০ রান করে করেন। তৃতীয় উইকেটে মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকের জুটি বিচ্ছিন্ন হয় ৬১ রান করে। মাহমুদউল্লাহ বোল্ড হন ২৫ রান করে। তারপরই মড়ক লাগে বাংলাদেশের ইনিংসে। ৩০ রানের মধ্যে আরও চার উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা। ২৫ রান করে ফিরেন মুশফিক। দলীয় ১৩৮ রানে বিদায় নেন সাকিব (১৭) ও সাব্বির (৪)।  অধিনায়ক মাশরাফিও (২) ভরসা হতে পারেননি।
মোসাদ্দেক ৮ম উইকেটে তাইজুলকে নিয়ে যোগ করেন ২৪ রান। কিন্তু ৪৩তম ওভারে আঘাত হানেন লেগ স্পিনার রশিদ খান। পরপর দুই বলে তাইজুল (১০), তাসকিন (০) তার শিকার হন। রশিদ খান ৩৫ রানে ৩টি, নবী-মিরওয়াইস আশরাফ ২টি করে উইকেট পান। নতুনবার্তা।