SAN RAFAEL, CA - JULY 27: A sign is posted at a Chevron gas station on July 27, 2012 in San Rafael, California. Chevron reported a 6.8 percent decline in second quarter earnings with profits of $7.21 billion compared to $7.73 billion one year ago. (Photo by Justin Sullivan/Getty Images)

বাংলাদেশ থেকে চলে যাচ্ছে তেল-গ্যাস খাতের বহুজাতিক প্র্রতিষ্ঠান শেভরন। বাংলাদেশে থাকা তাদের সম্পদ ও স্বার্থ বিক্রির জন্য খরিদ্দার খুঁজছে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বিদেশী বিনিয়োগ করা কোম্পানিটি। যথাযথ অর্থ পেলেই বিক্রি করে চলে যাবে। শেভরন বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় গ্যাস ক্ষেত্র পরিচালনা করে।

chardike-ad

শেভরন বাংলাদেশের ব্যবস্থাপক শেখ জাহিদুর রহমান  বলেন, আকর্ষণীয় দর পাওয়ার উপরে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে। এই মুহুর্তে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বিক্রির বাণিজ্যিক আলোচনা চলছে। সুবিধামতো ও আকর্ষণীয় দর পেলে শেভরণের স্বার্থ বিক্রি করা হবে।

এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ইসতিয়াক আহমেদ চ্যানেল আইকে বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে শেভরনের সম্পদ বিক্রির কোনো তথ্য আমরা এখনো পাইনি। শেভরনের বাংলাদেশের সম্পত্তি বিক্রি করতে হলে পেট্রোবাংলার অনুমতি নিতে হবে। পিএসসি অনুযায়ী পেট্রোবাংলার অনুমোতি ছাড়া শেভরন চলে যেতে পারবে না।

লোকসান কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে সম্পদ বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে বলেও জানা গেছে। শেভরন বাংলাদেশে থাকা তাদের প্রায় ২০০ কোটি ডলার বা প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা সমমূল্যের সম্পদ বিক্রি করতে চাইছে। বাংলাদেশের সম্পদ ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের সম্পদ বিক্রি করতে আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানা গেছে।%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%ad%e0%a6%b0%e0%a6%a8%e0%a7%a7

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, বাংলাদেশে থাকা সম্পত্তি বিক্রির জন্য আন্তর্জাতিক পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছে শেভরন। এরই মধ্যে একাধিক দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠান তাদের সম্পদ কেনার আগ্রহ দেখিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দরপতনে বিশ্বব্যাপী লোকসানে পড়েছে বলে শেভরণ এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে জানিয়েছে।

বাংলাদেশে বর্তমানে মোট গ্যাসের অর্ধেকের বেশি শেভরন উত্তোলন ও সরবরাহ করে। উৎপাদন অংশীদারিত্ব চুক্তি (পিএসসি) করে জালালাবাদ, মৌলভীবাজার ও বিবিয়ানা তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিচালনা করছে। বুধবার শেভরন তিন ক্ষেত্র থেকে ১৫৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করেছে। আর এদিন দেশে মোট গ্যাস উৎপাদন হয়েছে ২৭৪ কোটি ঘনফুট।%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%ad%e0%a6%b0%e0%a6%a8%e0%a7%a8

পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, শেভরনের গ্যাসের উৎপাদন গত দুই বছর কমেছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছর শেভরন প্রায় চার হাজার ৬০০ কোটি টাকার গ্যাস পেট্রোবাংলাকে বিক্রি করেছে। যা ২০১৫-১৬ সালে এসে কমে হয়েছে চার হাজার কোটি টাকা। চলতি বছর এখন পর্যস্ত বিক্রি করেছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার গ্যাস।

এই তিন গ্যাসক্ষেত্রে এক বছরের ব্যবধানে শেভরনের বিনিয়োগ কমেছে ১৯ শতাংশ। এ তিনক্ষেত্রে ২০১৪ সালে শেভরন খরচ করেছে ৪১ কোটি ২৯ লাখ ডলার। ২০১৫ সালে করেছে ৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। অন্যদিকে ২০১৩ সালে খরচের পরিমান ছিল ৪৮ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। এ হিসাবে দুই বছরে বাংলাদেশে শেভরনের বিনিয়োগ কমেছে ২২ কোটি ৮৯ লাখ ডলার।

এদিকে বর্তমানে বাংলাদেশে শেভরনে দুই হাজার জনবল আছে। এরমধ্যে স্থায়ী, অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক জনবল আছে। গত একবছরে নতুন করে আর চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের নবায়ন করেনি শেভরন। চুক্তি নবায়ন না করায় বিভিন্ন সময় আন্দোলনের মুখে পড়তে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে। সেসব অবস্থা কাটিয়ে তারা বর্তমানে ঢাকাসহ গ্যাসক্ষেত্রের কার্যালয়গুলোতে খরচ কমানোর বিষয়ে নানা উদ্যোগ নিয়েছে।