Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বিএনপির যেসব নেতা এখনও কারাগারে

BNP

কারাগারে আসা-যাওয়ার মধ্যেই রাজনীতির বেশিরভাগ সময় পার করছেন বিএনপির বেশিরভাগ নেতা। পাশাপাশি দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাদেরকেও নিয়মিত কারাগারে-আসা যাওয়া করতে হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত সাত বছর ধরেই দেখা গেছে এই চিত্র। তবে সম্প্রতি বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচি কম থাকায় তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সংখ্যাও কিছুটা কমে গেছে।এ কারণে বিএনপি নেতাদের কারাগারে আসা-যাওয়ার ঘটনা কমে এসেছে। বিএনপির বর্তমানে ৮জন কেন্দ্রীয় নেতা বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। দলটির দফতর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বাংলা ট্রিবিউন।

chardike-ad

বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম পিন্টু, গাজীপুরের মেয়র আব্দুল মান্নান, সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জিকে গউস, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন্নবী সোহেল, কেন্দ্রীয়নেতা আসলাম চৌধুরী ও লুৎফুজ্জামান বাবর কারাগারে আছেন। সর্বশেষ গত ২১ অক্টোবর ঢাকা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল কবির পল গ্রেফতার হয়েছেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বর্তমান শাসকগোষ্ঠী দেশের বিরোধী নেতাদেরকে মিথ্যা ও রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় জড়িয়ে গ্রেফতারের মাধ্যমে নির্যাতন নিপীড়নের পন্থা অবলম্বন করেছে। এর একমাত্র লক্ষ্যই হচ্ছে দেশকে বিরোধী দলশূন্য করে আওয়ামী শাসন দীর্ঘায়িত করা।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রেফতার নিঃসন্দেহে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদেরকে মানসিক ও রাজনৈতিকভাবে  পর্যুদস্ত করার জন্য সরকারের ধারাবাহিক কূটকৌশল। রাজনৈতিকভাবে হেনস্তা করতে রেজাউল কবির পলকে গ্রেফতারের নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই।’

জানা গেছে, বিএনপির হাইপ্রোফাইল নেতাদের মধ্যে দীর্ঘদিন কারাবন্দি থেকে  মুক্তি পেয়ে ইতোমধ্যে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন । শওকত মাহমুদ গত রমজানে মুক্তি পেয়ে প্রকাশ্য কর্মকাণ্ড থেকে দূরে আছেন। দৃশ্যমান রাজনীতি থেকে দূরে আছেন এমকে আনোয়ার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া। সাংবাদিক শফিক রেহমান অসুস্থতার কারণে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসা নিয়ে এখন নীরব আছেন।

এদিকে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর মধ্যে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ গ্রেফতার নেই।

তবে ছাত্রদলের সহ-সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট জানিয়েছেন, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অনেক নেতাকর্মীই এখনও গ্রেফতার হয়ে কারাগারে বন্দি আছেন।

ছাত্রদলের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক সরদার আমিরুল ইসলাম জানান, কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক নুরুল আলম নূরু গ্রেফতার আছেন।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল হাসান বলেন, ‘ছাত্রদলনেতা নুরুল আলম চট্টগ্রামে হারুন নামে একজন খুন হওয়ার ঘটনার দিন পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাউজানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের আস্ফালন এতই বেড়েছে যে, বিএনপি নেতাকর্মীরা রাউজানে প্রকাশ্যে চলাফেরা করতে পারেন না। এমনকি বাসাবাড়িতে অবস্থান করাও দুরুহ। এ অবস্থায় বিএনপি নেতাকর্মীদের পক্ষে কাউকে খুন করা তো দূরের কথা, এলাকায় চেহারা দেখানোই কষ্ট সাধ্য।’

এদিকে কারাগারে যাতায়াত করতে হওয়ায় মুক্তি পাওয়া শতাধিক নেতাকর্মী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এড়িয়ে চলছেন। কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাদের প্রায় প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই মামলা চলমান। এরই মধ্যে বেশিরভাগ নেতাই আদালতে হাজিরা দিতে হয় নিয়মিত।

বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া জানান, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট ২৫টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি দুদকের করা মামলা, বাকি মামলাগুলোর মধ্যে হত্যা, নাশকতা ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়াসহ রাষ্ট্রদ্রোহের অভিয়োগর রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে যত মামলা রয়েছে সবগুলোই এখন বিচারাধীন।’

বিএনপির দফতর সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির মহাসচিব ফখরুলের বিরুদ্ধে প্রায় ৮৬ টি মামলা আছে। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম মিয়ার বিরুদ্ধে ৮৩টি, মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে ৫৩, মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে ২৩ ও সাদেক হোসেন খোকার বিরুদ্ধে ৩৪টি মামলা হয়েছে। দলটির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন ও কেন্দ্রীয় বেশির ভাগ নেতার বিরুদ্ধেও নাশকতার মামলা রয়েছে। বিএনপি ছেড়ে যাওয়া শমসের মবিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৬ মামলা আছে।

সূত্র আরও জানায়, ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া শুরু হয়। সারা দেশে নাশকতার অভিযোগে জোটের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বর্তমানে মামলার সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার। আসামি করা হয়েছে জোটের প্রায় সাড়ে চার লাখ নেতা-কর্মীকে। গত বছর টানা হরতাল-অবরোধ চলাকালে সারা দেশে মামলা হয়েছে প্রায় ৯০০টির মতো।