Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

স্কুল ড্রেসহীন ছেলেটিই বদলে দেয় জেলা প্রশাসককে

base_1476933550-2_9

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার একটি স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা অর্জন করেন জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবীর। স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছবি তোলার একপর্যায়ে তিনি লক্ষ করেন চতুর্থ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী ছবি তুলতে আসছে না, বরং দূর থেকে দেখছে। জেলা প্রশাসক ওই শিক্ষার্থীর কাছে গিয়ে বলেন, ‘তুমিও এসো, আমরা একসঙ্গে ছবি তুলি।’ জবাবে সে বলে, ‘আমার তো স্কুল ড্রেস নেই।’

chardike-ad

এ ঘটনা পাল্টে দেয় জেলা প্রশাসকের চিন্তাজগত্। দেশসেরা জেলা প্রশাসকের স্বীকৃতি লাভের পর সম্প্রতি যশোর প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবর্ধনায় তিনি এ কথা জানান।

হুমায়ুন কবীর জানান, স্কুল পরিদর্শন শেষে কার্যালয়ে ফিরে সব ইউএনওকে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় স্কুল ড্রেস নেই এমন শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করতে বলেন। পাশাপাশি তিনি যশোরের দানশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করতে থাকেন। এ কাজ করতে গিয়ে অল্প দিনে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়। তালিকা তৈরির পর ছয় মাসে জেলার ১৫৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে দুই হাজার সেট স্কুল ড্রেস বিতরণ করা হয়।

তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করেই প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় মাল্টিমিডিয়াসামগ্রী দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। এর মাধ্যমে গত জুন পর্যন্ত জেলার ১৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, স্ক্রিন ও ল্যাপটপ বিতরণ করেন তিনি।

শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখো করতেও মিড ডে মিল চালু করার উদ্যোগ নিয়েছেন যশোরের জেলা প্রশাসক। সরকারি সহায়তা ছাড়াই স্কুলের নিজস্ব আয় ও স্থানীয় দানশীল ব্যক্তিদের অনুদানেই এ প্রকল্প শুরু হয়। এরই মধ্যে যশোরের নয়টি স্কুলে মিড ডে মিল চালু করা হয়েছে। উন্নত দেশগুলোর অনুকরণে বাংলাদেশে প্রথম যশোরের তিনটি স্কুলে ‘স্টুডেন্ট অব দ্য মান্থ’ ও ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচনের প্রথাও চালু করেছেন তিনি।

যশোরে তিন স্কুলের ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত ১৮ জন শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলোর ছয়জন শিক্ষককে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত খরচে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। তিনদিনের এ সফরে এসব শিক্ষক ও শিক্ষার্থী পশ্চিমবঙ্গের দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে ও সেখানকার ঐতিহাসিক কিছু স্থান ঘুরে দেখবে।

যশোরের জেলা প্রশাসকই জেলার তিনটি স্কুলে অনলাইন স্কুল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করেন। পরে মন্ত্রণালয় থেকে দেশের সব জেলা প্রশাসককে চিঠি পাঠিয়ে এ বিষয়ে যশোরের জেলা প্রশাসকের উদ্যোগকে অনুসরণ করতে বলা হয়।

হুমায়ুন কবীর জানান, অনেক জেলা প্রশাসক অনলাইন স্কুল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করতে যশোরে যোগাযোগ করেছেন। তাদের সব রকম সহযোগিতা করা হয়েছে এবং সফটওয়্যারটিও দেয়া হয়েছে। বণিকবার্তা।