ফিলিস্তিনের অধিকৃত অঞ্চলে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি নির্মাণ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে উত্থাপিত একটি খসড়া প্রস্তাবের অনুমোদন করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। এই প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে বসতি নির্মাণ অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানানো হয়।
বিবিসি জানিয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদের ১৪ সদস্যের ভোটে এই প্রস্তাবটি জাতিসংঘে পাস হয়। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাবে ভোট দেয়নি।
জাতিসংঘের ১৫ সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত নিরাপত্তা পরিষদে গতকাল শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে ভোটাভুটি হয়। ভেনেজুয়েলা, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড ও সেনেগাল সম্মিলিতভাবে এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনের অধিকৃত অঞ্চলে ইসরায়েলি স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের দাবিতে মিসরের প্রস্তাবের ওপর ভোট গ্রহণ স্থগিত করেছিল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগে বৃহস্পতিবার ওই ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।
তখন জানানো হয়েছিল, জাতিসংঘে উত্থাপিত খসড়া প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনার সময় দরকার বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে ভোট পেছানোর অনুরোধ করে মিসর। এ ছাড়া ইসরায়েল এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এই প্রস্তাবের উপর যুক্তরাষ্ট্রকে ভেটো দিতে অনুরোধ করেছে বলে খবর প্রকাশিত হয়।
শেষ পর্যন্ত নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় শুক্রবার প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পর সন্তোষ প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। প্রস্তাব পাসের পর জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের প্রধান সমঝোতাকারী সায়েব এরেকাত রয়টার্সকে বলেন, ‘এটি আন্তর্জাতিক আইনের জন্য একটি বিজয়ের দিন। এই জয় একটি সুসভ্য ভাষা আর কূটনীতির এবং ইসরায়েলের চরমপন্থী বাহিনীর প্রতি বিশ্ববাসীর প্রত্যাখ্যান।’
এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ‘অসম্ভব’ প্রস্তাবের শর্তগুলো মানবেন না তারা। তিনি জাতিসংঘের এই প্রস্তাবটির কার্যকারিতা ঠেকাতে হবু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য অপেক্ষা করার কথা জানিয়েছেন।
এদিকে ফিলিস্তিন নিয়ে এই প্রস্তাবটি পাসের আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আসছে ২০ জানুয়ারি তিনি ক্ষমতা হাতে নেওয়ার পর পরিস্থিতি অন্যরকম হবে।
তবে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের প্রধান সমঝোতাকারী সায়েব এরেকাত বলেছেন, ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে দখল করা জমিতে ইসরায়েল যে ১৪০টি বসতি তৈরি করেছে, সেটি পুরোপুরি বেআইনি বলে স্বীকৃত। এর আগেও জাতিসংঘের পক্ষ থেকে স্থাপনা নির্মাণকে অবৈধ বলা হয়েছে। কিন্তু এর পরও পশ্চিম তীরে ইসরাইলের স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ হয়নি।