Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

দায়িত্ব গ্রহণের আগে পূর্ণ হলো ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ পদগুলো

base_1483632174-dzrt

২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প। দায়িত্ব গ্রহণের আগে প্রশাসনের শীর্ষ পদগুলোয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছেন তিনি। এ তালিকায় একদিকে যেমন আছেন বিলিয়নেয়ার, পাগলাটে জেনারেল, তেমনি আছেন একসময়ের কট্টর ট্রাম্পবিরোধী ব্যক্তিও। তবে তাদের অধিকাংশই বেশ রক্ষণশীল। খবর রয়টার্স।

chardike-ad

পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে তেল কোম্পানি এক্সনমবিলের প্রধান নির্বাহী রেক্স টিলারসনকে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাম্প। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের বেশ ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত টিলারসন রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ঘোর বিরোধী।

আর্থিক বিষয়ে অভিজ্ঞ ও অত্যন্ত পরিচিত নাম স্টিভেন মানিউচিন। গোল্ডম্যান স্যাকসের সাবেক কর্মকর্তা পেয়েছেন ট্রাম্পের অর্থমন্ত্রীর পদ। সাবেক মার্কিন নৌবাহিনীর জেনারেল জেমস ম্যাটিস ‘ম্যাড ডগ’ নামে বেশি পরিচিত। তিনি মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে ওবামা প্রশাসনের একজন কট্টর সমালোচক। এবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর সামলাবেন তিনি।

শ্রমিকবান্ধব নয় বলে রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী অ্যান্ড্রু পুজডারের বেশ পরিচিতি রয়েছে। বিশ্বাস করেন, ন্যূনতম মজুরির হার বেশি হলে তা শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিকর, এতে কর্মসংস্থান সংকুচিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী শ্রমমন্ত্রী হিসেবে তাকে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাম্প। আলাবামার সিনেটর জেফ সেশনস মার্কিন সিনেটরদের মধ্যে প্রথম ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছিলেন। অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানকারী জেফ পেয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ।

রিপাবলিকান দলের হয়ে মন্টানা অঙ্গরাজ্য থেকে প্রথমবারের মতো কংগ্রেসম্যান নির্বাচিত হয়েছেন রায়ান জিনকে। ওবামা প্রশাসনের পরিবেশ নীতির কট্টর সমালোচক ছিলেন। রায়ান পেয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। নাফটা চুক্তির বিরোধিতাকারী বিলিয়নেয়ার উইলবার রস পেয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রীর পদ।

জর্জিয়া থেকে নির্বাচিত কংগ্রেসম্যান টম প্রাইস ওবামাকেয়ার ও কর নীতিমালার সমালোচক, পেয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদ। ক্ষুদ্র ব্যবসায় প্রশাসনের প্রধান হিসেবে নাম এসেছে লিন্ডা ম্যাকমোহনের। অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল জন কেলি হোমল্যান্ড সিকিউরিটির দায়িত্ব পেয়েছেন। কেলি মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণসহ অভিবাসন ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনার মতো নির্বাচনী ইস্যুর বাস্তবায়ন করবেন। বেন কারসন এবারের নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থীর লড়াইয়ে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ট্রাম্প প্রশাসনের একমাত্র আফ্রো-আমেরিকান মন্ত্রী তিনি। পেয়েছেন আবাসন ও নগরায়ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।

শিক্ষামন্ত্রী পদে ট্রাম্প বেটসি ডেভোসকে নিয়োগের প্রস্তাব করেছেন। রিপাবলিকান দলের তহবিলে বড় অংকের চাঁদা প্রদানকারী হিসেবে পরিচিত তিনি। সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের শ্রম মন্ত্রণালয়ে আট বছর কাজ করা অ্যালেইন চাও পেয়েছেন পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।

মার্কিন বিমান বাহিনীর সদস্য ছিলেন রিক পেরি। একসময় কৃষিকাজ করেছেন তিনি। এবার মার্কিন জ্বালানিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন পেরি। সাউথ ক্যারোলাইনার গভর্নর নিক্কি হ্যালি জাতিসংঘে দেশটির প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির চেয়ারম্যান প্রাইবাস ট্রাম্প প্রশাসনে হোয়াইট হাউজের চিফ অব স্টাফের দায়িত্ব পালন করবেন। পরিবেশ-বিষয়ক অ্যাক্টিভিস্ট ও ওকলাহামার অ্যাটর্নি জেনারেল প্রসিকিউটর স্কট প্রুইট পালন করবেন এনভায়রনমেন্ট প্রটেকশন এজেন্সির পরিচালকের দায়িত্ব। সাউথ ক্যারোলাইনার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান মিক মালভানি ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট দপ্তরের পরিচালক পদে বসবেন। মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর ডিরেক্টর পদে মাইক পম্পিও নিয়োগ পেয়েছেন।

দেশটির সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের প্রধান হিসেবে দেখা যাবে ওয়াল্টার জে ক্লেটনকে। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদে ট্রাম্পের পছন্দ অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল মাইকেল ফ্লিন। টম বোজার্ট হোয়াইট হাউজের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবেন। ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের পরিচালক পদে নিয়োগ পেয়েছেন গোল্ডম্যান স্যাকসের সাবেক ব্যাংকার গ্যারি কোন।

ন্যাশনাল ট্রেড কাউন্সিলের ডিরেক্টর পদে নিয়োগ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ পিটার নাভারোকে। তিনি চীনের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত। বিলিয়নেয়ার ব্যবসায়ী ভিনসেন্ট ভিওলা সেক্রেটারি অব দি আর্মি পদে নিয়োগ পেয়েছেন।

নতুন মার্কিন প্রশাসনের অধিকাংশ কর্তাব্যক্তিই পুরুষ। হাতেগোনা কয়েকজন নারী এবং এশীয় ও আফ্রো-আমেরিকান আছেন। বেশ কয়েকজন ধনকুবেরকে মন্ত্রী পদে নিয়োগের প্রস্তাব করেছেন ট্রাম্প। এতে মার্কিন অর্থনীতিতে ওয়াল স্ট্রিটের বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রভাব বৃদ্ধির যে অভিযোগ, তা আরো জোরালো হবে। বেশ কয়েকজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও জেনারেলকে প্রশাসনে নিয়োগ দেয়ায় ট্রাম্পের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা নীতি বেশ যুদ্ধংদেহী হবে বলেই বিশ্লেষকদের মত।