Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

সিউলে বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রীদের মিলনমেলা

IMG_3181

ব্যস্তময় প্রবাস জীবনে শত বাংলাদেশীকে একসাথে পাওয়া যেন সোনার হরিণ। যদি তাতে যোগ হয় একসাথে হাসি আড্ডা, গান, ভোজনবিলাস তাহলেতো কথায় নেই।  দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রীদের ঠিক তেমনি একটি মধুর মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হলো সিউলে। বাংলাদেশী স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন ইন কোরিয়া (বিএসএকে) গত শনিবার এবং রবিবার দুইদিনব্যাপী সিউলের ইয়ুথ হোস্টেলে এই আয়োজন করে।

chardike-ad

নবীণ বরণ,  পিএইচডি প্রাপ্তদের সংবর্ধনা,  নাচ, গান, গেমস,  ইবুক উন্মোচন, সিউল সিটি ট্যুর এই শীতকালীন মিলনমেলায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী গবেষকদের দিয়েছে বরাবরের মত অসাধারণ কিছু মুহুর্ত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, গবেষণার ব্যস্ততার মাঝে প্রতি সেমিস্টারে একবার দুই দিনের জন্য বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রীদের বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে ফিরে যাওয়ার সুযোগ করে দেয় করে বাংলাদেশি স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন ইন কোরিয়া (বিএসএকে)। নানা আয়োজনের পাশাপাশি কোরিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ছাত্রছাত্রীদের পরিচয় হওয়ার অসাধারণ একটা সুযোগ এই মিলনমেলা।

DSC06079
প্রধান অতিথি’র বক্তব্য রাখছেন রাষ্ট্রদূত জুলফিকার রহমান

প্রথমদিনে ডঃ আশরাফ বিশ্বাসের উপস্থাপনায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় মিলনমেলা।  স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র আশিকুর রহমান রুশো। বিএসএকের কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন আফজাল হোসাইন। প্রতিবারের মত এবারো ইবুক প্রকাশ করা হয়। কোরিয়া প্রবাসী ছাত্রছাত্রীদের গল্প, অভিজ্ঞতা, কবিতা এবং স্মৃতিচারণ নিয়ে প্রকাশিত ইবুকের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রদূত জুলফিকার রহমান।

এরপরই নবীণ, ডিগ্রীপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রী এবং কোরিয়ায় অধ্যপনারত শিক্ষকদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন মিলনমেলার প্রধান অতিথি দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জুলফিকার রহমান এবং অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। নবীনদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ইহোয়া উইমেন্স ইউনিভার্সিটির শিরিন আকতার এবং বিদায়ীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ইনজে ইউনিভার্সিটির ডঃ মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান।  বিএসএকের গেট টুগেদার নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সংগঠনটির সাথে জড়িত থাকা ডঃ আব্দুর রহিম। কোরিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসা থেকে অন্য ভিসায় পরিবর্তনের উপর একটি প্রেজেন্টেশন করেন বিসিকে সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার কামাল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত বলেন বিএসএকের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ছাত্রছাত্রীদের সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ দেন। তিনি বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীরা প্রাথমিক পর্যায়ে যখন আসেন তখন বিএসএকে সহযোগিতা করার কথা উল্লেখ করেন।  অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলেদেশ দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব রুহুল আমিন,  বিসিকে সভাপতি হাবিল উদ্দিন, বিসিকে নির্বাহী সদস্য এবং সাবেক সভাপতি আবুবকর সিদ্দিক রানা, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম স্পেশালিস্ট ও গিয়ং হো এবং ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মরত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আফজাল মাহমুদ।

দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান, নৃত্যে অংশ নেনে বিসিকে এওয়ার্ড প্রাপ্ত শিল্পী আশুতোষ অধিকারী, পিএইচডি গবেষক সাইদুল ইসলাম, মারুফসহ অন্যান্যরা।

DSC06665মিলনমেলার দ্বিতীয় দিনে কোরিয়া একচেঞ্জ ব্যাংকের সৌজন্যে সিউল ট্যুরে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করেন ছাত্রছাত্রীরা। বিকেলে বাংলাদেশ দূতাবাসে একটি ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠান করে বিএসএকে। মনিরুজ্জামান মনিরের পরিচালনায় “ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধঃ সোনার বাংলাদেশ” শিরোনামে এই আলোচনা সভায় একটি ভিডিও পরিবেশন করেন সিয়াম। ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দিক নিয়ে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইফুল হক, চট্রগ্রাম ভেটেরিনারী এন্ড এনিমেল সাইন্স ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ডঃ আশরফ বিশ্বাস, সরকারী কর্মকর্তা গোলাম কবির এবং বাংলা টেলিগ্রাফের সম্পাদক সরওয়ার কামাল।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত জুলফিকার রহমান বলেন মুক্তিযুদ্ধ ধারণ করা বিষয়। দেশ এখন অনেকদূর এগিয়েছে। ১৯৭৫ সালের আগস্টের পর ট্রেন উল্টো পথে ছিলো। সেই ট্রেন আবার সঠিক পথে ফিরেছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পালা। এছাড়া আলোচনা অংশ নেন দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব রুহুল আমিন, বিসিকের সাবেক সভাপতি আবুবকর সিদ্দিক রানা, শামীম আহমেদ প্রমুখ। দুইদিনব্যাপী অনুষ্ঠান সফল করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান গোলাম হাফিজ।