মাসব্যাপী ২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সকালে মেলার উদ্বোধন করেছেন। একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ২০১৩-১৪ সালের দেশের সর্বোচ্চ রপ্তানী আয়কারী ৬৬ প্রতিষ্ঠানের মাঝে জাতীয় রপ্তানী ট্রফি ও সনদ প্রদান করেন।
সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মেলার উদ্বোধন এবং রপ্তানী ট্রফি প্রদান করেন।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে পণ্যখাতে সর্বোচ্চ রপ্তানী আয়ের জন্য ‘জাবের এন্ড জুবায়ের ফ্রেব্রিক্স’কে জাতীয় স্বর্ণ ট্রফি প্রধান করা হয়।
প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম রফিকুল ইসলাম নোমান প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ট্রফি গ্রহণ করেন।
৬৬টি রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠানকে ২০১৩- ১৪ অর্থবছরের জন্য জাতীয় রপ্তানী ট্রফি ও সনদ প্রদান করা হয়।
এর মধ্যে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের পণ্য ও সেবাখাতে ২৯টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণ, ২২টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে রৌপ্য এবং পণ্যখাতে ১৫টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ব্রোঞ্জ ট্রফির প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন।
ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান মাফরুহা সুলতানা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ তার বক্তৃতায় বাণিজ্য মেলার স্থায়ী আয়োজনে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে বলেন, ‘পূর্বাচলে ৬০ বিঘা জমির উপর স্থায়ী বাণিজ্য মেলা কেন্দ্র তৈরির কাজ শিগগিরই শুরু হবে। চীনের অর্থায়নে আগামী ২০১৯ নালে এটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে।’
তোফায়েল আহমেদ জানান, এ বছর ২১টি দেশ (বাংলাদেশসহ) মেলায় অংশ নিচ্ছে। মেলায় বাংলাদেশ ছাড়া যে সকল দেশের প্রতিষ্ঠানসমূহ অংশগ্রহণ করছে সেগুলো হলো- ভারত, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, দক্ষিণ কোরিয়া, মরিশাস, নেপাল, হংকং, জাপান, ভূটান, বাহরাইন, ভিয়েতনাম এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত।
এর আগে শনিবার ২২তম বাণিজ্য মেলা আয়োজন বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানান, ১৩ লাখ ৭৩ হাজার বর্গফুট আয়তনের এবারের মেলাস্থল। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এবারের মেলায় প্রবেশ মূল্য ধরা হয়েছে (পূর্ববর্তী ৩ বছরের মতো) প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য জনপ্রতি ৩০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য জন প্রতি ২০ টাকা।
এবার বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল-প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫৮০টি। মেলা মাঠে ১টি ই-শপ, ২টি শিশু পার্ক, ৩টি রক্তসংগ্রহ কেন্দ্র, ৩টি মা ও শিশু কেন্দ্র এবং ১টি প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মাঠের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন স্পটে বাগান তৈরি করা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে মুসল্লিদের নামাজ পড়ার জন্য ১টি মসজিদ এবং আনসার ও বেসরকারি সিকিউরিটি ফোর্স সদস্যদের জন্য ২টি ডরমেটোরি স্থাপন করা হয়েছে।
তোফায়েল আহমেদ জানান, বাণিজ্যমেলা থেকে ২০১০ সালে ২২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার, ২০১১ সালে ২৫ কোটি টাকার, ২০১২ সালে ৪৩ কোটি ১৮ লাখ টাকার, ২০১৩ সালে ১৫৭ কোটি টাকার, ২০১৪ সালে ৮০ কোটি টাকার, ২০১৫ সালে ৮৫ কোটি টাকার এবং ২০১৬ সালে ২৩৫ কোটি ১৭ লাখ টাকার রপ্তানি আদেশ পাওয়া গেছে। ২০১৭ সালের বাণিজ্যমেলায় রপ্তানি আদেশ আরো বেশি পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি বিজিবি, র্যাব, আনসার এবং বেসরকারি সিকিউরিটি ফোর্স মোতায়েন থাকবে। গত মেলার মতো এবারও মেলায় ১৪০টি সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে। -বাসস।