Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ইরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা আরোপ

trump

ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ গতকাল এ নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয়। নতুন করে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণ হিসেবে ইরানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কথা উল্লেখ করেছে মার্কিন প্রশাসন। অন্যদিকে নিউইয়র্কভিত্তিক রাজনৈতিক ঝুঁকিবিষয়ক উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠান ইউরেশিয়ার এক সতর্কতা বার্তায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নিষিদ্ধ তালিকায় যোগ হতে পারে পাকিস্তান। বিষয়টি নিয়ে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো হুঁশিয়ারি না দেয়া হলেও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় দেশটির সংযুক্তির যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। খবর সিএনএন, ফক্স নিউজ ও সিএনবিসি।

chardike-ad

জানা গেছে, মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ গতকাল ইরানের ১৩ নাগরিক ও ১২টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা  দেয়। এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় লেখেন, ‘প্রেসিডেন্ট ওবামার দয়া উপলব্ধি করতে পারেনি ইরান। আমি সে রকম নই!’

এর জবাবে ট্রাম্পের মতো অনভিজ্ঞ ব্যক্তির নিরর্থক হুমকিতে মাথা নত না করার ঘোষণা দিয়েছে ইরান।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নিষিদ্ধ তালিকায় যোগ হতে পারে পাকিস্তান। ইউরেশিয়ার বিশ্লেষক সাশা রাইজার-কোজিটস্কি বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক নোটে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নির্বাহী পর্যায় ও কংগ্রেসে ক্রমেই প্রভাব হারাচ্ছে পাকিস্তান, যা শেষ পর্যন্ত দেশটির ওপর অর্থনৈতিক ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপে রূপ নিতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, ‘হোয়াইট হাউজের একজন কর্মকর্তা এরই মধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, সন্ত্রাস বিপর্যস্ত রাষ্ট্রের তালিকায় পাকিস্তানকে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে এ দেশটির নাগরিকরাও যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের বিষয়ে সাময়িক নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে পারেন।’

চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের বিষয়ে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিষিদ্ধ ঘোষিত দেশগুলোর তালিকায় পাকিস্তান না থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ। দেশটি বর্তমানে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় পর্যায়ের বেশকিছু জঙ্গি সংগঠনের চারণভূমি হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করেছে। এসব সংগঠনের মধ্যে স্থানীয় উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ছাড়াও তালেবান, আল কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

নিরাপত্তা, জ্বালানি ও বিনিয়োগ খাতে ওয়াশিংটন ও ইসলামাবাদের মধ্যে দ্বিমুখী সম্পর্ক রয়েছে। রফতানি খাতে পাকিস্তানি পণ্যের বৃহত্তম গন্তব্য হলো যুক্তরাষ্ট্র। ডিসেম্বরে এক ফোনালাপে ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে বলেছিলেন, ‘ফ্যান্টাস্টিক পাকিস্তানের’ জন্য যেকোনো ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত তিনি।

ইউরেশিয়ার ভাষ্য অনুযায়ী, হোয়াইট হাউজ একই সঙ্গে ইসলামী সন্ত্রাসবাদের মোকাবেলায়ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্থানীয় উগ্রবাদী সেলগুলোকে, বিশেষ করে দেশটির স্থানীয় গোয়েন্দা সংস্থার ঘনিষ্ঠ হাক্কানি নেটওয়ার্ককে নিয়ন্ত্রণে নওয়াজ শরিফ যদি এখনই কোনো কার্যকর ভূমিকা না রাখতে পারেন, সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে ফাটল ধরার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে আরেকটি সন্ত্রাসী হামলায় যদি কোনো পাকিস্তানির নাম পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে ইসলামাবাদকে অবশ্যই কোনো ছাড় দেবেন না ট্রাম্প। মনে রাখতে হবে, ২০১৫ সালের শেষ দিককার স্যান বার্নাডিনো শুটিংয়ের ঘটনার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের প্রবেশাধিকার না দেয়ার বিষয়ে সোচ্চার হয়ে ওঠেন ট্রাম্প। ওই ঘটনায় দায়ী দম্পতির পাকিস্তানের সঙ্গে গভীর যোগসূত্র ছিল।

২০১৭ সালের বাজেটে যুক্তরাষ্ট্রের ৯০ কোটি ডলারের কোয়ালিশন সাপোর্ট ফান্ডের ৪০ কোটিই বরাদ্দ রয়েছে পাকিস্তানের জন্য। কিন্তু এর সঙ্গে শর্তও রয়েছে যে, হাক্কানি নেটওয়ার্কের মোকাবেলায় ইসলামাবাদকে আরো সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যর্থতা প্রমাণ হলে এ বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত হতে হবে ইসলামাবাদকে, যা দেশটিকে টেনে নেবে আর্থিক ঘাটতির দিকে।

২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার অভিযুক্ত পরিকল্পনাকারী হাফিজ সাঈদের আটকের ঘটনাটি পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ দমনে সুশাসনের প্রয়োগের ঘাটতির ইঙ্গিত দেয়। গত সপ্তাহেই তাকে গৃহবন্দি করে রাখার আদেশ দেয় পাকিস্তান। কিন্তু স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রিয়তা বিবেচনায় তাকে সত্যি সত্যি বিচারের সম্মুখীন করার বিষয়ে খুব একটা আগ্রহী না ইসলামাবাদ, যা দেশটির জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে না বলে সতর্ক করেছে ইউরেশিয়া।