Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে আলো এবং অন্ধকার

২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তি উদযাপনকে সামনে রেখে ঘনীভূত রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের জন্য ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিতব্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দৃশ্যত সুষ্ট,অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক করা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতার মৌলিক চেতনা গণতন্ত্রের টুটি চেপে ধরে আবারো বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় বহাল থেকে সুবর্ণজয়ন্তি উদযাপন করলে জনগণ তাতে সাড়া দিবে না।

তাছাড়া আগামী সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে দেশে গনতন্ত্র স্থায়ীভাবে হারিয়ে যাবে। যার ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি আরো অবনতি ঘটবে যা কারো কাছে কাম্য নয়। এতে আন্তর্জাতিকভাবে সরকার আরো একঘরে হয়ে পড়বে। বাস্তবে আওয়ামী লীগের পক্ষে ৫ জানুয়ারীর মত ভোটারবিহীন আরেকটি নির্বাচন হজম করা সম্ভবও নয়। তাই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা ফেরাতে সরকার চাইবে আগামী নির্বাচন কমিশন(ইসি) যেন বর্তমান রকিব কমিশনের মত বিতর্কিত না হয়।

chardike-ad
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে ১২ জন বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে মতবিনিময়
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে ১২ জন বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে মতবিনিময়

রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা ফেরাতে সৎ, দক্ষ, নিরপেক্ষ, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন কার্যকর প্রধান নির্বাচন কমিশনার(সিইসি)সহ মেরুদণ্ডযুক্ত নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন পূর্বশর্ত। জাতীয় নানা সংকট উত্তরণের হাতিয়ার হিসাবে জনগণও অধীর আগ্রহে শক্তিশালী ইসি গঠনের প্রত্যাশায় রাষ্ট্রপতির দিকে থাকিয়ে আছে। যদিও একই পদ্ধতিতে গতবার গঠিত রকিব কমিশন নির্বাচনের আম্পায়ার হিসাবে জাতির প্রত্যাশা পুরণ করতে পারেননি। সময় যত গড়িয়েছে রকিব কমিশন তত নির্লজ্জতা ও নির্লিপ্ততা দেখিয়ে গেছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত এবং ভোটারবিহীন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ লজ্জা পেলেও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিনের মূখে ছিল বিজয়ের হাসি। রকিব কমিশনকে সুস্থ, নিরপেক্ষ, ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগে সৎইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে দেখা যায়নি। বরং নির্বাচনী সহিংসতা ও ভোটকারচুপির অভিযোগ আমলে না নিয়ে জাতির সামনে সিইসি নির্লজ্জভাবে সকল নির্বাচন সুস্থভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করে সরকারের পক্ষে ওকালতি করে গেছেন।

rahatনৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, এটি নিয়মরক্ষার নির্বাচন, শীঘ্রই মধ্যবর্তী নির্বাচন দেওয়া হবে। বিরোধী দল বিএনপিও মধ্যবর্তী নির্বাচনের আশায় দীর্ঘ সময় আন্দোলন থেকে দূরে ছিল, কিন্তু সরকার পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে ধীরে চল নীতি অবলম্বন করে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাপ সামলিয়ে সরকার এখন চুড়ান্তভাবে মধ্যবর্তী নির্বাচন থেকে সরে এসেছে বলে মনে হয়। বিরোধী দল বিএনপিও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি থেকে দৃশ্যত সরে এসেছে। এখন বিএনপির লক্ষ্য হল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন ও সংবিধানের কাঠামোর মধ্যে থেকে নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার গঠন।

নিয়োগ প্রক্রিয়ার ত্রুটির কারণে গনতন্ত্রের পাহারাদার হিসাবে নির্বাচন কমিশনের স্থায়ী পেশাদারিত্ব তৈরি হচ্ছে না। বিদ্যমান ব্যবস্থায় সকল নির্বাচন কমিশনারদের এক সাথে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। মেয়াদ শেষে তাঁরা এক সাথে চলে যান। এক সাথে আসা ও যাওয়ার ফলে নতুন নির্বাচন কমিশনকে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার সঙ্কটে পড়তে হয়। তাছাড়া বিচারব্যবস্থায় নিয়োগ পাওয়া নতুন বিচারপতিদের মাঝে যে পেশাদার মনোভাব দেখা যায় ভিন্ন ভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে আসা নতুন নির্বাচন কমিশনারদের মাঝে অনুরূপ পেশাদারিত্ব দেখা যায় না। অনেকক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় এসে নিরপেক্ষতার ভান করে ক্ষমতাসীন সরকারের লেজুড়বৃত্তি করে থাকে। বর্তমান রকিব কমিশন তার স্পষ্ট দৃষ্টান্ত। স্থায়ী শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন সৃষ্টি করতে দরকার বর্তমান নির্বাচন কমিশনারদের মাঝ থেকে কয়েকজনকে বহাল রাখা। সেই সাথে নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমান কমিশনকে নাম সুপারিশ করার সুযোগ দেওয়া। এক সাথে যেন সকল নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের প্রয়োজন না পড়ে তার ব্যবস্থা করা। এমনটা হলে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ববোধ বাড়বে, তাদের মাঝে পেশাদারিত্ব সৃষ্টি হবে। তখন নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতার দায় কমিশনকে বহন করতে হবে। কিন্তু বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতার জন্য সরকারকে দায়ী করা হচ্ছে।  নির্বাচন কমিশন আসে আর যায় তাদের জবাবদিহিতা বলতে কিছু নেই।

ইসি গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে আইন না থাকায় প্রতিবারই নির্বাচন কমিশন গঠনে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের পূর্ণ হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি হয়। এই সুযোগ ব্যবহার করে কখনো কখনো মেরুদণ্ডহীন পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়। যার ফলে নির্বাচন কমিশন ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে ওঠার পথ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হয়েও নির্বাচন কমিশন জনগণের স্থায়ী আস্থা অর্জন করতে পারছে না।

searchনির্বাচন কমিশন কিভাবে গঠিত হবে তার জন্য আইন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাতকতা থাকলেও আজ পর্যন্ত কোন সরকারই আইন করার উদ্দ্যোগ নেয়নি। ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক দলগুলো আইন করতে ভুলে যায়। কেবল নির্বাচন কমিশন গঠনের সময় এলে আইন করার কথা বারবার আলোচনায় আসে। আইন না থাকায় নির্বাচন কমিশন গঠনের মূল ক্ষমতা সরকারের কব্জায় রয়েছে।তাই সরকার না চাইলে শক্তিশালী নিরপেক্ষ কমিশন গঠন সম্ভব নয়। কারণ আইন অনুসারে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়া রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠন করতে পারেন না। এছাড়া রাষ্ট্রপতি নিজেও ক্ষমতাসীন দল থেকে মনোনীত হন। রাষ্ট্রপতি দলের ইচ্ছার বাহিরে গিয়ে শক্তিশালী নিরেপক্ষ কমিশন গঠন করবেন এই আস্থা কতটুকু রাখা যায়?

এবারও আইন তৈরি হচ্ছে না। অবশ্যই আইন তৈরি হলেও অবস্থার উন্নতি হবে বলে মনে হয় না। কারণ হয়ত আইনের বাহিরে গিয়ে রাষ্ট্রপতি যে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন সরকার তা আইনী কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসবে যা স্থায়ী বিতর্ক তৈরি করতে পারে।  বর্তমান সময়ে নিরেপক্ষ নির্বাচন কমিশন যেহেতু শুধু সরকারের সৎইচ্ছার উপর নির্ভর করছে সেহেতু দলীয় স্বার্থ বিবেচনায় নির্বাচন কমিশন গঠিত হলে সরকার দায় এড়াতে পারবে না। যার কারণে আইনের দোহায় দেওয়ার সুযোগ না থাকায় সরকার নৈতিক চাপে রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থা ফিরে এলে, নাগরিক সমাজ ও নির্বাচন কমিশনের পরামর্শ নিয়ে আইন করতে হবে। সরকার একক সিদ্ধান্তে আইন করলে তা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। সবাইকে সম্পৃক্ত করে আইন করার মত পরিবেশ পরিস্থিতি এখন নেই বললে চলে।

আইন না থাকায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান সর্বপ্রথম সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের উদ্দ্যোগ নেন। কিন্তু জিল্লুর রহমান সার্চ কমিটির মাধ্যমে যে রকিব কমিশন গঠন করেছিলেন তা ইতিহাসে সবচেয়ে অথর্ব কমিশন হিসাবে স্বীকৃত হয়েছে। রকিব কমিশন গনতন্ত্রের পাহারাদার না হয়ে সরকারের ত্রাণকর্তা হিসাবে ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু ব্যর্থ রকিব কমিশনের কারণে নতুন নির্বাচন কমিশনে গঠন নিয়ে বিরোধী বিএনপি যেমন সতর্ক তেমনি বিএনপির আস্থা ফেরাতে সরকারও চাপে রয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি আগামীতে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন চান না, সেই সাথে ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতির সিদ্বান্ত মেনে নিবেন। প্রধানমন্ত্রী এই সৎইচ্ছা সকলের মাঝে আশার সঞ্চার করেছে।

রাজনৈতিক দলের সাথে রাষ্ট্রপতির সংলাপের পরে যে আশা ও আস্থার সঞ্চার হয়েছিল তা সার্চ কমিটি গঠিত হওয়ার পর হতাশা ও ক্ষোপের জন্ম দিয়েছে। এই সার্চ কমিটি প্রমাণ করে ইসি গঠনে সংলাপ কোন কাজে আসেনি। রাজনৈতিক দলের সাথে রাষ্ট্রপতির সংলাপ কুশল বিনিময় ছাড়া আর কিছু ছিল না। এটা সরকারের আইওয়াশ কিনা তা চুড়ান্তভাবে কারা নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিয়োগ পাচ্ছেন তাদের উপর নির্ভর করবে। প্রকৃত অর্থে ইসি কতটুকু শক্তিশালী নিরপেক্ষ হবে তা কেবল সরকারের ইচ্ছার উপর নির্ভর করছে। তাই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে জনগণের মধ্যে চাপা শঙ্কা বিরাজ করছে।
সদ্য প্রকাশ করা সার্চ কমিটি আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির কাছে নাম সুপারিশ করবেন। পদাধিকার বলে সার্চ কমিটিতে স্থান পাওয়া সদস্যরা সরকারের প্রিয়ভাজন হওয়ায় তাঁরা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারবে কিনা, তা নিয়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের অনেকে সংশয় প্রকাশ করেছেন। আপিল  বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন কমিটির প্রধান হিসেবে পুনরায় দায়িত্ব পাওয়াটা অপ্রত্যাশিত ছিল। সরকার চাইলে ভিন্ন কাউকে সার্চ কমিটির প্রধান করতে পারতেন, ব্যর্থ রকিব কমিশনের কারণে যার উপর কারো আস্থা নেই তার উপর সরকারের আস্থা থাকাটা অসচ্ছ কিছুর ইঙ্গিত দেয়। সর্বত্র রাজনীতিকরণের কারণে বর্তমান সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদ বা শিক্ষকতায় থাকা কমিটির সদস্যের নিরপেক্ষতাও নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। কারণ নির্বাচন কমিশন গঠনে সরকারকে সন্তুষ্ট করতে পারলে পদোন্নতিসহ নানা সুবিধা পাওয়ার সম্ভবনা থাকে। এমন অসুস্থ প্রতিযোগীতার বহু নজির রয়েছে। নাগরিক সমাজ থেকে নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পর্কে অভিজ্ঞ ও রাষ্ট্রের কোন পদে নেই এমন কয়েকজনকে সার্চ কমিটিতে রাখলে সার্চ কমিটি বিতর্ক মুক্ত থাকত। সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে যারা বিতর্কিত নন তাদের থেকেও সার্চ কমিটিতে রাখা যেত। এরপরও সার্চ কমিটি যদি বর্তমান জাতীয় সঙ্কটকে মাথায় রেখে মেরুদণ্ডযুক্ত ব্যক্তিদের নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেন তাহলে তাঁরা বিতর্ক থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন।

বর্তমান পেক্ষাপটে সার্চ কমিটির সামনে আছে দীর্ঘ আট বছরের ঘনীভূত রাজনৈতিক সঙ্কট। এই সংকটে শুধু বিরোধী মতের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা হত্যা, গুম ও নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছে না সাধারণ জনগণও আইনশৃংখলা বাহিনীর হয়রানি থেকে মুক্ত নয়। গনতন্ত্র ও মানবাধিকারের এই দুরাবস্থা থেকে দেশের জনগণকে মুক্ত করার একটা তাড়া তাঁদের থাকা উচিত। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও গনতন্ত্রহীন পরিবেশ থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে। বিরোধী দলকে সভা-সমাবেশ করতে না দিয়ে সরকার বাহ্যিকভাবে স্বস্তিতে থাকলেও ভিতরে ভিতরে নানা দুচিন্তা, সঙ্কট দানা বেঁধে আছে। এমনকি আইন শৃংখলা বাহিনী থেকে শুরু করে দলের নেতা-কর্মীদের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে। সরকার প্রশাসন নির্ভর হওয়ায় আইনশৃংখলা  বাহিনীর কিছু কিছু সদস্য নির্ভয়ে নানা অপকর্ম করছে যা সরকারের নানা অর্জনকে মলিন করে দিচ্ছে। দূর্নীতির লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হচ্ছে না। উন্নয়নের কথা বলে রাজনৈতিক সঙ্কট থেকে উত্তরণ যে সম্ভব নয়  তা আওয়ামী লীগের জানা না থাকার বিষয় নয়। তাই সরকার চাইবে এই সার্চ কমিটির মাধ্যমে এমন নির্বাচন কমিশন গঠিত হউক যাতে করে নতুন কমিশন নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আস্থার সঙ্কট না থাকে। এবং  সেই সাথে নতুন কমিশন সরকারের গুড বুকেও থাকবে।

election নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও সার্চ কমিটি পরামর্শ নেওয়ার জন্য যে ১২ জন বিশিষ্ট নাগরিকদের সাথে বৈঠক করেছেন তা ইতিবাচক। তবে পরবর্তীতে কেন আরো চারজন বিশিষ্ট নাগরিকের পরামর্শ নেওয়ার দরকার হল তা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। সার্চ কমিটিকে এই বিশিষ্ট ব্যক্তিরা সাহসী, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এবং যোগ্য কমিশনার নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন। প্রথম ১২ জন বিশিষ্ট নাগরিকদের উপর সবার আস্থা রয়েছে। এদের থেকে কয়েকজন সার্চ কমিটিতে যদি থাকত তবে সার্চ কমিটি নিয়ে আস্থাহীনতা তৈরি হত না। এমনকি এদের থেকে অন্তত দুইজন নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিয়োগ পেলে কাংখিত নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে। রাষ্ট্রপতির সাথে রাজনৈতিক দলের সাথে দৃষ্টিনন্দন সংলাপের মত বিশিষ্ট নাগরিকদের সাথে সার্চ কমিটির পরামর্শ বৈঠক আইওয়াশ কিনা তা চুড়ান্তভাবে নির্বাচন কমিশন গঠিত হওয়ার পর বুঝা যাবে। সার্চ কমিটির আরেকটি ভাল উদ্যোগ হল রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে নির্বাচন কমিশনারদের নাম চাওয়া। এতে করে যদি প্রধান বিরোধী দল বিএনপির প্রস্তাব করা নামগুলো থেকে দুই বা ততোধিক চুড়ান্তভাবে কমিশনে স্থান পায় তবে নির্বাচন কমিশনের প্রতি বিএনপির আস্থার সঙ্কট দূর হবে।