Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

রেহাই পাচ্ছেন গ্রিনকার্ডধারীরা

ussযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরবর্তী অভিবাসন আদেশে দেশটিতে গ্রিনকার্ডধারী অভিবাসীদের বাধা না দেয়ার বিধান রাখা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রগামী উড়োজাহাজে চড়ে বসতে পারলে গ্রিনকার্ডধারী এসব অভিবাসীকে দেশটিতে প্রবেশে কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন হতে হবে না। তবে উড়োজাহাজে চড়ার আগ পর্যন্ত তাদের কঠিন প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন মার্কিন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের সচিব জন কেলি। আগামীকালই এ আদেশ জারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। খবর রয়টার্স।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিবাসন-সংক্রান্ত পূর্ববর্তী নির্বাহী আদেশটির বাস্তবায়ন এরই মধ্যে আটকে দিয়েছেন দেশটির আদালত। একই সঙ্গে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুমুল বিক্ষোভ এবং সমালোচনারও মুখোমুখি হয় আদেশটি। সাত মুসলিমপ্রধান দেশ থেকে আগত অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর সাময়িকভাবে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে জারি করা ওই আদেশটিকে ‘বৈষম্যমূলক’ ও ‘মার্কিন সংবিধানের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ’ দাবি করে এর বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নেমেছিল ওয়াশিংটন ও মিনেসোটা অঙ্গরাজ্য। পরবর্তীতে এ আদেশ স্থগিত ঘোষণা করে রুল জারি করেন সিয়াটলের এক আদালত। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ রুল জারির বিরুদ্ধে আপিল করা হলেও শেষ পর্যন্ত তা ধোপে টেকেনি। বর্তমানে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশটির সংবিধানসম্মততা খতিয়ে দেখছেন আদালত।

chardike-ad

এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন প্রসঙ্গে নতুন আরেকটি নির্বাহী আদেশ ঘোষণা করতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন আদেশটি আসলে আগেরটিরই সংশোধিত ও পরিমার্জিত রূপ বলে জানান জন কেলি।

জার্মানিতে অনুষ্ঠিত মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স চলাকালে জন কেলি বলেন— ‘প্রেসিডেন্ট বর্তমানে প্রথমটির তুলনায় আরেকটু কঠিন ও পরিমার্জিত নির্বাহী আদেশ জারি করার কথা ভাবছেন। এ পরিকল্পনা প্রণয়নে কাজ করার সুযোগ রয়েছে আমার। বিশেষ করে এটুকু নিশ্চিত করার জন্য যে, বিদেশ থেকে আমাদের বিমানবন্দরগুলোয় যাত্রার পর কেউ যাতে পদ্ধতিগত হয়রানির শিকার না হন।’

এ সময় গ্রিনকার্ডধারী অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে কোনো বাধার মুখোমুখি হতে হবে কিনা জানতে চাওয়া হলে কেলি বলেন, ‘তারা যদি বিদেশী দেশগুলো থেকে যাত্রা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে এসে পৌঁছান, তাদের এখানে প্রবেশ করতে দেয়া হবে।’

তবে এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে যাত্রা শুরুর আগেই তাদের থামানোর প্রয়াস নেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু এসব অভিবাসী যদি শেষ পর্যন্ত উড়োজাহাজে চড়ে বসতে পারেন, তাদের আর কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হবে না।

পরিবর্তিত অভিবাসন আদেশের এক খসড়ার বরাত দিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, প্রথম আদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত সাত দেশের অভিবাসীদের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের বিষয়ে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হতে পারে।

প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট এক সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যমটি আরো জানায়, অভিবাসন প্রসঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরবর্তী নির্বাহী আদেশটি আগামীকাল বা শিগগিরই অন্য কোনো দিন জারি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে তা বাস্তবায়নের আগে এক বা দুই সপ্তাহের সময় নেয়া হতে পারে।

ট্রাম্পের পরবর্তী নির্বাহী আদেশটিতেও ইরান, ইরাক, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া ও ইয়েমেনের অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হতে পারে। আগের আদেশটিতে ৯০ দিনের জন্য দেশগুলোর নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। একই সঙ্গে সিরিয়া ছাড়া বিশ্বের অন্য সব দেশ থেকে আসা শরণার্থীদের জন্য ১২০ দিনের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। অন্যদিকে সিরীয় শরণার্থীদের মার্কিন ভূমিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয় অনির্দিষ্টকালের জন্য।

ট্রাম্পের দাবি, তার পূর্ববর্তী আদেশটি জারির কারণ ছিল যুক্তরাষ্ট্রে ইসলামিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর সম্ভাব্য আক্রমণগুলোকে প্রতিরোধ করা।

গত মাসে জারি করা ওই আদেশের বাস্তবায়ন শুরু হতেই যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন প্রক্রিয়ায় এ নিয়ে এক নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয়। একই সঙ্গে মার্কিনিদের মিত্র দেশগুলোসহ গোটা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল এ নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এর বিরুদ্ধে সরব থাকতে দেখা যায়। বিশেষ করে প্রযুক্তি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো এ নিয়ে ট্রাম্পের সমালোচনা করেছে সবচেয়ে বেশি।