Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

২০৫০ সালের মধ্যে ২৩তম বড় অর্থনীতি হবে বাংলাদেশ

base_1486579309-1মোট দেশজ উত্পাদনের (জিডিপি) ভিত্তিতে বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ৩০টি অর্থনীতির পরই বাংলাদেশের অবস্থান। তবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর ভর করে ২০৫০ সাল নাগাদ ২৩তম বৃহত্ অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। সম্প্রতি এমন পূর্বাভাসই দিয়েছে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রাইসওয়াটারহাউজকুপারস (পিডব্লিউসি)।

২০৫০ সাল নাগাদ বৈশ্বিক অর্থনীতিতে শীর্ষ দেশগুলোর অবস্থান কেমন হবে, সে সম্পর্কে ধারণা দিতে চলতি মাসে ‘দ্য লং ভিউ: হাউ উইল দ্য গ্লোবাল ইকোনমিক অর্ডার চেঞ্জ বাই ২০৫০?’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পিডব্লিউসি। এতে বলা হয়, এ সময়ে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল তিনটি অর্থনীতির দেশের কাতারে ভারত ও ভিয়েতনামের পাশাপাশি বাংলাদেশও থাকবে।

chardike-ad

পিডব্লিউসির এ প্রতিবেদনে ২০৫০ সালে ৩২টি শীর্ষ অর্থনীতির আকার সম্পর্কে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। বর্তমানে বৈশ্বিক জিডিপির ৮৫ শতাংশ অবদান রাখছে এ ৩২টি দেশ। কর্মক্ষম জনশক্তি, মূলধনি বিনিয়োগ, শিক্ষা ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন— এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে প্রবৃদ্ধির এ পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধিবান্ধব নীতির ধারাবাহিকতা বজায় থাকার পাশাপাশি ২০৫০ সাল নাগাদ বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট দুর্যোগ ঘটবে না বলে ধরে নিয়েছে সংস্থাটি।

ক্রয়ক্ষমতার সক্ষমতার ভিত্তিতে মোট দেশজ উত্পাদন (জিডিপি-পিপিপি) বিবেচনায় বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান ৩১তম। গত বছর বাংলাদেশের জিডিপির (পিপিপি) আকার ছিল ৬২৮ বিলিয়ন ডলার। ২০৩০ সাল নাগাদ ১ হাজার ৩২৪ বিলিয়ন ডলারের জিডিপি (পিপিপি) নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান হবে ২৮। আর ২০৫০ সালে ২৩তম অবস্থানে উঠে আসবে বাংলাদেশ। এ সময় বাংলাদেশের জিডিপির (পিপিপি) আকার হবে ৩ হাজার ৬৪ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের জিডিপি তখন মালয়েশিয়াকে ছাড়িয়ে যাবে। আর ২০২৫ সালের পর জিডিপির বিপরীতে বাংলাদেশের বিনিয়োগ ২৩ থেকে বেড়ে ২৫ শতাংশ হবে।

উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও রয়েছে কলম্বিয়া, মিসর, ইরান, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। আগামী ৩৪ বছরে ভিয়েতনাম, ভারত ও বাংলাদেশ প্রতি বছর গড়ে ৫ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হবে বলে মনে করে পিডব্লিউসি। মূলত দ্রুতবর্ধনশীল কর্মক্ষম জনসংখ্যা, দেশীয় চাহিদা ও উত্পাদন বৃদ্ধির প্রভাবে এ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে দেশগুলো। তবে এজন্য শ্রমিকের উত্পাদনশীলতা বাড়াতে আরো বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতি প্রয়োজন হবে। পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে অর্থনৈতিক সংস্কার, সামষ্টিক অর্থনীতি শক্তিশালীকরণ ও শিক্ষার প্রসারের দিকে লক্ষ রাখতে হবে এসব দেশের।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পিপিপির ভিত্তিতে ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ হিসেবে চীনের শীর্ষত্ব অক্ষুণ্ন থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসবে ভারত। এছাড়া যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের চেয়ে এগিয়ে যাবে দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ মেক্সিকো ও ইন্দোনেশিয়া। ইতালি ও কানাডাকে পেছনে ফেলবে পাকিস্তান ও মিসর। সামগ্রিকভাবে ২০৫০ সাল নাগাদ এশিয়ার অর্থনীতির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে ইউরোপ। এ সময় বৈশ্বিক জিডিপিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশ ১৫ থেকে কমে ৯ শতাংশ হবে। ব্রেক্সিট-পরবর্তী প্রভাব কাটিয়ে ওঠার পর ইইউ২৭-এর গড়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে যাবে যুক্তরাজ্য।

পিডব্লিউসির পূর্বাভাস বলছে, ২০১৬-২০৫০ সময়ে বিশ্বের গড় প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৬ শতাংশ। বিশ্বের মোট জিডিপির ৫০ শতাংশ ব্রাজিল, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, রাশিয়া ও তুরস্কের দখলে থাকবে।