একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রকেট ইঞ্জিনের পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের চীন সফরের মধ্যেই এ রকেট ইঞ্জিনের পরীক্ষা চালাল দেশটি। গতকাল উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম কেসিএনএ এ তথ্য জানিয়েছে। খবর রয়টার্স।
দেশটির নেতা কিম জং-উন এ পরীক্ষাকে উত্তর কোরিয়ার রকেট শিল্পের ‘নবজন্ম’ বলে মন্তব্য করেছেন। এর মধ্য দিয়ে দেশটি বিশ্বমানের স্যাটেলাইট উেক্ষপণ সক্ষমতা অর্জন করল বলেও দাবি করেছেন তিনি। উত্তর কোরিয়ার তংচ্যাং-রি রকেট উেক্ষপণ কেন্দ্রের সোহে স্যাটেলাইট লঞ্চিং গ্রাউন্ড থেকে এ পরীক্ষা চালানো হয়।
ওয়াশিংটনভিত্তিক বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান থার্টিএইট নর্থ জানায়, গত সপ্তাহের স্যাটেলাইট ছবিতে ওই অঞ্চলে কর্মতত্পরতা ধরা পড়ে। সম্ভবত সে সময় রকেট ইঞ্জিন পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছিল। সংস্থাটি জানায়, পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি আড়াল করতে ২০১৫ সালে সেখানে একটি পরিবেশ-সংক্রান্ত আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করে উত্তর কোরিয়া।
এদিকে বেইজিং সফরকালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিষয়ে চীনা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন। পারমাণবিক শক্তিধর উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে বলেও জানান তিনি। এমনকি হুমকি মোকাবেলায় প্রয়োজনে সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার কথাও জানান তিনি।
এর আগে ৬ মার্চ সকালে উত্তর কোরিয়া-চীন সীমান্তের নিকটবর্তী তংচ্যাং-রি থেকে জাপান সাগরে পর পর চারটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায় কিম জং-উন প্রশাসন। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম বলে দেশটির কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকরা দাবি করেছেন। এ অঞ্চলে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়মিত সামরিক মহড়ার জবাবে এ পরীক্ষা চালানো হয়।
তার আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য মধ্যমপাল্লার পুকগুকসং-২ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা নেয়ার পর এটিই ছিল উত্তর কোরিয়ার প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা।
রকেট ইঞ্জিন পরীক্ষার পর উত্তর কোরিয়া একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর কাছাকাছি রয়েছে বলে জানিয়েছেন কিম জং-উন। এদিকে এ পরীক্ষার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী।
কিম জং-উনের উদ্ধৃতি দিয়ে কেসিএনএ জানিয়েছে, রকেট ইঞ্জিন পরীক্ষার তাত্পর্য শিগগিরই বিশ্বের সামনে স্পষ্ট হবে। কিম জং-উন আরো বলেন, বর্তমান পরীক্ষার সাফল্যের ঐতিহাসিক তাত্পর্য রয়েছে। বিশেষ করে এর মধ্য দিয়ে জুচেভিত্তিক রকেট শিল্পের ‘নবজন্ম’ ঘটেছে। উত্তর কোরিয়ার আদর্শের ওপর গড়ে ওঠা আত্মনির্ভরশীলতার প্রতীক জুচে।