Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

কথায়-কাজে পুরো বিপরীত ডোনাল্ড ট্রাম্প

base_1489334991-5

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে শপথগ্রহণের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন পণ্য কেনার ও মার্কিন কর্মী নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেন। অথচ একই সময়ে তার মেয়ে ইভাঙ্কার ব্র্যান্ডের অন্তত আটটি পণ্যের চালান চীন থেকে মার্কিন বন্দরের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। মার্কিন কাস্টমস বিভাগের বিল অব ল্যাডিং পর্যবেক্ষণ করে এ তথ্য জানা গেছে। খবর এএফপি।

chardike-ad

অভিষেকের পর দেয়া বক্তৃতায় ডোনাল্ড ট্রাম্প সোজাসাপ্টা ঘোষণা দেন, ‘আমরা দুটি সহজ নিয়ম অনুসরণ করব: মার্কিন পণ্য কিনব ও মার্কিন নাগরিককে চাকরি দেব।’ ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক হয় গত  ২০ জানুয়ারি। ওই দিনই সমুদ্র্রপথে বিভিন্ন মার্কিন বন্দর অভিমুখে আসছিল ইভাঙ্কা ট্রাম্প ব্র্যান্ডের অন্তত আটটি চালান। জুতা, ব্যাগ ও পোশাকের চালানগুলোর মোট ওজন ৫৪ টনের কাছাকাছি। এসব চালান জাহাজীকরণ হয় চীনে, যে দেশটির বিরুদ্ধে ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকে হম্বিতম্বি করছেন।

গত ৮ নভেম্বর ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন। সেদিনের পর থেকে তিনি বিদেশী শ্রমে প্রস্তুত করা পণ্য মার্কিন বাজারে বিক্রির কারণে নাবিস্কো, জেনারেল মোটরস ও টয়োটাসহ বিভিন্ন কোম্পানির বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন। অথচ ৮ নভেম্বর থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইভাঙ্কা ট্রাম্প ব্র্যান্ডের পণ্যের অন্তত ৮২টি চালান যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বন্দরে খালাস হয়েছে।

এসব চালানে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে ছিল কমপক্ষে দুই টন পলিয়েস্টার ব্লাউজ, গরুর চামড়ায় তৈরি ১ হাজার ৬০০ ওয়ালেট ও ২৩ টন জুতা। ট্রাম্পকন্যার ব্র্যান্ডের ম্যানুফ্যাকচারিং লাইসেন্সধারী তিন প্রতিষ্ঠান— জিথ্রি, মনদানি ও মার্ক ফিশার চীনে এসব পণ্য তৈরি করিয়েছে। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক জিথ্রি ও হ্যান্ডব্যাগ প্রস্তুতকারক মনদানি কোনো জবাব দেয়নি। অন্যদিকে জুতা প্রস্তুতকারক মার্ক ফিশার কোনো মন্তব্য নেই বলে জানিয়েছে।

ডিপার্টমেন্ট স্টোর চেইন নর্দস্ট্রম বিক্রি কমে যাওয়ার কারণে গত মাসে ইভাঙ্কার পণ্য বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দেয়। নর্দস্ট্রমের ঘোষণার পর ইভাঙ্কা ট্রাম্পের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের ধরন অনেকের নজরে আসে। তবে ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টারা ওই ঘোষণার পর নর্দস্ট্রমের ওপর চড়াও হন। এমনকি হোয়াইট হাউজের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক কেলিয়ান কনওয়ে মার্কিন নাগরিকদের প্রতি ট্রাম্পকন্যার পণ্য কেনার আহ্বান জানান। চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, অনেকেই কেলিয়ান কনওয়ের কথামতো কাজ করেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে ইভাঙ্কা ট্রাম্প ব্র্যান্ডের বিক্রি ছিল রমরমা।

ট্রাম্প নিজেও ব্যতিক্রম নন। ট্রাম্পের নিজের ব্র্যান্ডের বাণিজ্যও তার বাণীর বিপরীতে চলে। যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি বিভাগের তথ্য খতিয়ে দেখা গেছে, গত এক দশকে চীন ও হংকং থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্র্যান্ডের পণ্যের ১ হাজার ২০০ চালান যুক্তরাষ্ট্রে এসেছে। অথচ নির্বাচনী প্রচারণার সময় চীনে প্রস্তুত পণ্যকে নিজের লাইসেন্সিং সুবিধা দেয়ার বিষয়টিকে ট্রাম্প ‘স্মার্ট ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত’ বলে অভিহিত করেন।