Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

পরিচয় ফেসবুকে, স্কটল্যান্ড থেকে আসা উপহার নিতে গিয়ে লাখো টাকা খোয়া

fbbফেসবুকসহ বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎকারী আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার  করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন জেনেভা ক্যাম্পের পশ্চিম গেটসংলগ্ন এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

chardike-ad

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- মো. আফজাল আহম্মেদ (৩৩), মো. শরীফ আলমগীর (৪৫) ও শরীফুল আহম্মেদ ওরফে মোহন (২৩)।

এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি জানিয়েছেন র‍্যাব ২-এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. ফিরোজ কাউছার। তিনি জানান, গত ১৫ মার্চ এক ব্যক্তি (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) র‍্যাব ২-এর ক্যাম্পে এসে অভিযোগ করেন, গত ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি ফেসবুকের মাধ্যমে টমসন স্মিথ (Thompson Smith) নামের এক স্কটিশ ভদ্রলোকের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব হয়। এরপর তাঁর সঙ্গে হোয়াটঅ্যাপসের মাধ্যমে ইংরেজি ভাষায় কথাও হয়। বন্ধুত্বের সূত্রে টমসন স্মিথ তাঁকে স্কটল্যান্ড থেকে কিছু উপহারসামগ্রী পাঠিয়েছেন বলে জানান। গত ১২ মার্চ, মিন-রো ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের (Min-Ro Trade International) একজন মোবাইল ফোনে ওই অভিযোগকারীকে জানান, তাঁর নামে একটি গিফট বক্স এসেছে। এতে পরিবহন ব্যয় বাবদ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে। গত ১৩ মার্চ এই টাকা চেকের মাধ্যমে জমা দেন। কিন্তু একই দিন মিনো-রো ট্রেডের একই প্রতিনিধি মোবাইল ফোনে জানান, গিফট বক্স নিতে হলে এর ট্যাক্স (কর) বাবদ আরো ৯৭ হাজার ১৯৯ টাকা দিতে হবে। সেই অনুযায়ী চেকের মাধ্যমে এই অর্থও টাকা জমা করেন তিনি।

র‍্যাব জানায়, ওই দিনই সন্ধ্যায় আবার একই নম্বর থেকে বলা হয়, অ্যান্টি-টেররিজম ও মানি-লন্ডারিং থেকে সার্টিফিকেট সংগ্রহের জন্য আরো চার লাখ ৯৫ হাজার ৭০০ টাকা পাঠাতে হবে। অভিযোগকারী গত ১৪ মার্চ ব্যাংকে এই অর্থও টাকা জমা দেন। একই নম্বর থেকে চতুর্থবার বলা হয়, পাঠানো গিফট বক্সের স্ক্যান রিপোর্টের তথ্যে দেখা যায়, এর ভেতরে অনেক মূল্যবান সামগ্রী রয়েছে। এগুলোর ক্লিয়ারেন্স বাবদ আরো দুই লাখ ৮৯ হাজার ৩৫০ টাকা পাঠাতে হবে। তখন অভিযোগকারী গিফট বক্সের অবস্থান জানতে চাইলে বলা হয়, পরে জানানো হবে। এ অবস্থায় প্রতারক চক্রের আচরণ এবং গিফট বক্সের সঠিক ঠিকানা না জানানোর কারণে বিষয়টি অভিযোগকারীর কাছে সন্দেহজনক বলে মনে হয়।

এ কারণে প্রতারণার শিকার ব্যক্তি র‍্যাব ২-এর শরণাপন্ন হন। র‍্যাবের একটি দল সুকৌশলে জমা করা প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে তাদের অবস্থান শনাক্ত করে। গতকাল রাতে মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পের পশ্চিম গেট এলাকা থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এএসপি আরো জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, তাদের এই কাজে আরো অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ-সাতজন প্রতারক জড়িত। তারা প্রতারণার মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করে আসছে।

জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, প্রতারণার ক্ষেত্রে তারা ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমোসহ বিভিন্ন মাধ্যমে নিজেদের আমেরিকা, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড অথবা ইউরোপের নাগরিক হিসেবে পরিচয় দেয়। তাদের এ প্রতারণার ক্ষেত্রে কিছু নারী সদস্যও রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। বন্ধুত্ব ও বিশ্বস্ততা অর্জন করার পর তারা বিভিন্ন কৌশলে লক্ষ্য করা ব্যক্তির কাছ থেকে কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নেয়।

এএসপি মো. ফিরোজ কাউছার জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।