Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

আইনের পরিপন্থী বয়ান দিতে পারেন না ইমাম

 

image_142385.court_8126

chardike-ad

গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যা মামলার রায় দেওয়ার সময় পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, একজন মসজিদের ইমামের দায়িত্ব হলো মুসলমানদের কাছে ইসলামের সঠিক জ্ঞান পৌঁছে দেওয়া। তিনি এমন কোনো জ্ঞান বা বয়ান দেবেন না, যা প্রচলিত ফৌজদারি আইনের পরিপন্থী।

আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও জাহাঙ্গীর হোসেনের যৌথ বেঞ্চ এ রায় দেন। রায়ের সময় আদালত কিছু পর্যবেক্ষণ দেন।

আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, যদি কেউ ইসলাম ধর্ম, হজরত মুহাম্মদ (সা.) বা অন্য কোনো ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করে বা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক বা গণমাধ্যমে প্রকাশ করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। আইন হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারো নেই।

শরিয়া আইন প্রসঙ্গে আদালত বলেন, এ  বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় রয়েছে।

দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের বিষয়ে আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, এ মামলা যুক্তিতর্ক ও মামলার নথি অনুযায়ী দেখা গেছে, মুফতি জসীমুদ্দীন রাহমানী ছাড়া সব আসামিই ছিলেন মেধাবী। কিন্তু তাঁরা এ পথে কেন গেলেন, তার কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ ধরনের মেধাবী ছাত্রদের বিপথে যাওয়ার ক্ষেত্রে পরিবার অন্যতম দায়ী বলে মনে করেন আদালত।

আদালত আরো বলেন, বর্তমানে পরিবারগুলো জীবনের বিভিন্ন তাগিদ নিয়েই ব্যস্ত। নিজেদের সন্তানদের খোঁজখবর নেওয়া ও তাদের সঠিক পথে পরিচালনার বিষয়ে দায়িত্ব পালন করছে না। সন্তানদের মানসিকতাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তারা কী চায়, তা বুঝতে হবে।

শিশুদের মানসিক অবস্থার কথা, তারা কী করতে চায়, কোন বিষয়ে পড়তে চায়, তা না জেনে তার মনের বিরুদ্ধে অনেক কিছু চাপিয়ে দেন অভিভাবকরা। এই কাজের জন্য প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে। পরিবেশ, রাজনীতি, ধর্মীয় আচার-ব্যবহার, স্বাধীনতার ইতিহাস যথাযথভাবে শিশুদের শিক্ষা দিতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও দেশীয় অনুষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের মানসিক বিকাশ ঘটাতে হবে। এ নিয়ে সবার এবং সরকারেরও ভাবতে হবে।

পুলিশের মহাপরিদর্শকের উদ্দেশে আদালত বলেন, এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে ন্যায়নিষ্ঠ ও দক্ষ পুলিশ সদস্যকে তদন্তের দায়িত্ব দিতে হবে, যাতে করে নির্ভুলভাবে তদন্তের কাজ হয়।

আজ এ মামলার রায় বাংলায় পড়ে শোনান আদালত। আদালত বলেন, মামলার আপিলের শুনানি ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়েছিল। মাতৃভাষার প্রতি সম্মান জানিয়ে এ মামলায় রায় বাংলায় ঘোষণা করা হয়েছে।

আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, এই হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত। একদল লোক হত্যাকাণ্ডে সরসরি অংশ নিয়েছে। অন্যরা তথ্য সংগ্রহ করেছে। তাই বিচারিক আদালতের রায় পরিবর্তনের কারণ খুঁজে পায়নি। সেই জন্য বিচারিক আদালতের রায়ই বহাল রাখা হয়েছে। এনটিভি।