Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

উত্তর কোরিয়ার মহড়ায় ভুয়া অস্ত্র!

সেনাবাহিনীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ সামরিক মহড়ায় ‘ভুয়া অস্ত্র’ প্রদর্শন করার অভিযোগ উঠেছে। এতে প্রদর্শিত বেশ কিছু বন্দুক ও ক্ষেপণাস্ত্র আসল নয় বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক এক মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তা।

মাইকেল প্রেগেন্ট নামের ওই কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী গণমাধ্যম ফক্স নিউজকে বলেন, প্রদর্শিত কিছু অস্ত্র ‘হাস্যকর’। তবে এটাই প্রথম নয়, কয়েক দশক ধরেই সামরিক শক্তি প্রদর্শনের ক্ষেত্রে প্রতারণার আশ্রয় নেয়া হয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রে এটা কার্যকরও হয়েছে।

chardike-ad

চাথাম হাউসের এশিয়া প্রোগ্রাম বিষয়ক সহকারী প্রধান জেমস হান্নাহ বলেন, ‘বিশেষ করে এই সময়ে ট্রাম্পের কারণে উত্তেজনা আরো বাড়ছে। এর কারণ, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু হুমকি মোকাবেলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ট্রাম্প। ছোট ছোট ভুয়া অস্ত্র এক বিষয়। কিন্তু আমরা এটাও জানি, উত্তর কোরিয়ার ১০ লাখের বেশি সেনা আছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এর মানে এই নয় যে উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে দেবে। তবে একটি প্রশ্ন, আক্রান্ত হলে তারা কী করতে পারে। নতুন সক্ষমতার নতুন কিছু ক্ষেপণাস্ত্র তারা দেখিয়েছে।’

ইতিহাসের বৃহৎ যুদ্ধগুলোতেও ভুয়া অস্ত্রের মহড়া ছিল। বিশেষ করে প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। ব্রিটেনের ন্যাশনাল আর্কাইভ থেকে সংগৃহীত ছবিতেও দেখা যায়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বাঁশ দিয়ে নির্মিত ট্যাংক প্রদর্শন করেছিল ব্রিটিশরা। প্রতিপক্ষকে ভয় দেখাতেই এ ধরনের কৌশল নেয়া হয়েছিল।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত ভুয়া ট্যাংক
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত ভুয়া ট্যাংক

শত্রুসেনাদের বোমা হামলার ভয় দেখানো এবং তাদের পাইলটদের ভুয়া ট্যাংক দেখিয়ে নিবৃত্ত করাই ছিল এই কৌশলের উদ্দেশ্য। বাস্তবিক পক্ষে এগুলোর কোনো মূল্য ছিল না।

যুদ্ধবিশারদ নিকোলাস র‌্যানকিন তার ‘অ্যা জিনিয়াস ফর ডিসিপশন’ বইতে লিখেছেন, ‘কোনো লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলার আগে সেনা কর্মকর্তারা সম্ভাব্য স্থানটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে নেন। হামলা করলে কী বিপদ হতে পারে, কতটা সফলতা আসতে পারে- এসব বুঝে নেন।’

লক্ষ্যবস্তুতে বেশি সামরিক যানের উপস্থিতি দেখতে পেলে তারা হামলার ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার ভেবে নেন। ফরাসি সেনারা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ভূমিতে ভুয়া নদী ও খালের ছবিও এঁকে রেখেছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও ব্যবহৃত হয়েছিল একই ধরনের কৌশল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত ভুয়া কামান
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত ভুয়া কামান

ওই সময়েও যুদ্ধক্ষেত্রে কয়েক হাজার ভুয়া ট্যাংক প্রদর্শন করা হয়েছিল। ১৯৩৯ সালের শুরুর দিকে রাবার দিয়ে নির্মিত অনেক ট্যাংক মোতায়েন করা হয়েছিল ফ্রান্সের উত্তর সীমান্তে। ডানলপ কোম্পানি নির্মাণ করেছিল এসব ট্যাংক। এতে সেই সময়ে বোকা বনে গিয়েছিল জার্মান বাহিনী।

মার্কিন সেনারাও এই কৌশলের আশ্রয় নিয়েছিল। বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য তারা ভুয়া রেডিও সিগনাল উৎপন্ন করতো। বিভিন্ন সময়ে ভুয়া অস্ত্র ব্যবহার করেছে রাশিয়াও।

সূত্র: বিবিসি