Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

অভিবাসী শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধে বিশেষ ডেস্ক হচ্ছে

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের তিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায়ই হয়রানির শিকার হতে হয় বিদেশগামী কর্মীদের। একই অবস্থা বিদেশ থেকে ফেরত আসার সময়ও। এ হয়রানি বন্ধে দেশের তিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদেশগামী ও প্রত্যাগত কর্মীদের জন্য পৃথক কাউন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

chardike-ad

জানা গেছে, দেশের তিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৃথক কাউন্টার স্থাপনের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এরই মধ্যে চিঠি দিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ইতিবাচক প্রত্যুত্তর পেয়েছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

এর আগে গত ১০ এপ্রিল প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে বৈদেশিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতকরণ ও অভিবাসন ব্যবস্থাপনা খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে একটি সভা হয়। সেখানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মিশন ও কল্যাণ) মোহাম্মদ আজহারুল হক জানান, প্রবাসী কর্মীদের সুবিধার জন্য তিন বিমানবন্দরে তিনটি পৃথক কাউন্টার স্থাপনের জন্য বহির্গমন ও সিভিল এভিয়েশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও বিশেষ ডেস্ক স্থাপনের বিষয়ে সম্মতি পাওয়া গেছে।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) জাবেদ আহমেদ এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, বৈদেশিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতকরণ ও অভিবাসন ব্যবস্থাপনা খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে সম্প্রতি একটি সভা হয়েছে। সেখানে বিদেশগামী ও প্রত্যাগত কর্মীদের জন্য আলাদা কাউন্টার স্থাপনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এটি বাস্তবায়ন হলে বৈধ পথে যাওয়া কর্মীরা উপকৃত হওয়ার পাশাপাশি স্টুডেন্ট ও ভিজিট ভিসা নিয়ে বিদেশে পাড়ি দেয়া শ্রমিকদের ঠেকানো সহজ হবে।

মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নানা অভিযোগে বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরত আসা কর্মীদের তালিকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থিত প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে। ফেরত আসা কর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোয় তথ্য গোপন করে তারা কাজের সন্ধানে বিদেশ যান। এদের অনেকেই নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন না। ধরা পড়ে তাদের অনেকেই জেল খেটেছেন। আবার বিমানবন্দর থেকেই ফেরত এসেছেন অনেকে। সার্বিকভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন সবাই।

ভিজিল্যান্স টাস্কফোর্সের অভিযানের সূত্র ধরে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় জানতে পারে, প্রতিদিন বিমানবন্দর দিয়ে স্টুডেন্ট ও ভিজিট ভিসায় কর্মসংস্থানের খোঁজে অবৈধভাবে বিদেশ যাচ্ছেন অসংখ্য কর্মী। যারা যাচ্ছেন তাদের অনেককেই কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে। আবার স্টুডেন্ট ভিসায় যারা বিদেশ যাচ্ছেন, তাদের অধিকাংশই নিরক্ষর বা স্বল্পশিক্ষিত। উচ্চশিক্ষার যোগ্যতাসূচক সনদ বা বিদেশী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অফার লেটার কিংবা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকে না অনেকেরই। আবার স্টুডেন্ট বা ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে যারা মালয়েশিয়া যাচ্ছেন, তাদের লাগেজ পরীক্ষা করে আলাদাভাবে মালয়েশিয়ান এমপ্লয়মেন্ট স্ট্যাম্প ভিসাও পাওয়া যাচ্ছে।

এর আগে গত বছরের জুনেও অবৈধভাবে কর্মী পাঠানো বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে চিঠি দিয়েছিল প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, স্টুডেন্ট ও ভিজিট ভিসায় বিদেশ যাওয়ার পর ফেরত আসা কর্মীরা একদিকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোয় বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এছাড়া এভাবে বিদেশে যাওয়া কর্মীরা নিজেরাও নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বিষয়টি অত্যন্ত অমানবিক। এ প্রক্রিয়ায় বিদেশে যাওয়া কর্মীরা ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পরই সংশ্লিষ্ট দেশে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছেন।