Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ট্রাম্পের সৌদি সফর: ফাঁস হলো ভয়ঙ্কর সব পরিকল্পনা

traumpমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২৩ মে সৌদি আরব সফরে যাচ্ছেন। রিয়াদে অনুষ্ঠেয় আরব ও অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর শীর্ষ নেতাদের নিয়ে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অংশ নিবেন। সৌদি রাজা সালমান বিন আব্দুল আজিজের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ১৭টি মুসলিম দেশের শীর্ষ নেতাদের সম্মেলনে যোগ দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিয়াদে আসবেন।

এ ব্যাপারে এক প্রতিক্রিয়ায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমি আজ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, দখলদার ইসরাইলের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে রিয়াদে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি বলেন, দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে ইসরাইল নিজে সামনে না এসে মুসলিম দেশগুলোর শীর্ষ নেতা ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যে বৈঠকের আয়োজন করেছে এবং পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে ইসরাইল।

chardike-ad

তবে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের রিয়াদ সফরের আগে তার কিছু উদ্দেশ্যের কথা ফাঁস হয়ে গেছে। বলা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সৌদি রাজার সঙ্গে দশ কোটি ডলার মূল্যের সবচেয়ে বড় সামরিক চুক্তিতে সই করবেন। এ ছাড়া, জর্দানে আমেরিকার অন্যতম বৃহৎ স্থায়ী সামরিক ঘাঁটি নির্মাণেরও পরিকল্পনা রয়েছে। সিরিয়ায় মোতায়েন করা হবে এক লাখ মার্কিন সেনা। আর এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সমস্ত খরচ বহন করবে সৌদি আরব। যদিও সৌদি আরব বহু বছর আগে থেকেই আমেরিকার জন্য দুধের গাভীতে পরিণত হয়েছে যেখানে একতরফাভাবে কেবল মার্কিন স্বার্থই রক্ষা পাচ্ছে সৌদি আরবের কোনো লাভ হচ্ছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা বলেছেন, সৌদি আরবের সঙ্গে আমেরিকার সামরিক চুক্তির পরিমাণ ৩০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অনেকে মনে করছেন, সৌদি আরবের কাছে আমেরিকার এতো বিশাল পরিমাণ অস্ত্র বিক্রির ঘটনা ইসরাইলের জন্য বিপদ হতে পারে। কিন্তু এসব উদ্বেগ দূর করে দিয়ে সৌদি কর্মকর্তারা দখলদার ইসরাইলকে এ নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে, এসব অস্ত্র কখনই ইসরাইলের বিরুদ্ধে ব্যবহার হবে না।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সৌদি আরব সফরের আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে, ইয়েমেনকে উত্তর ও দক্ষিণ এই দুইভাগে ভাগ করার জন্য সৌদি পরিকল্পনার প্রতি মুসলিম দেশগুলোর সমর্থন আদায় করা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, কৌশলগত ওই অঞ্চলে সৌদি আরবের এ পরিকল্পনা অত্যন্ত বিপদজনক। কারণ এর উদ্দেশ্য হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ বাব আল মান্দাব প্রণালীর ওপর পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপদজনক ব্যক্তি হিসাবে বর্ণনা করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বোঝা যায়, আমেরিকা, সৌদি আরব ও ইসরাইল এবং আরো কয়েকটি আরব দেশের মধ্যে আর্থ-রাজনৈতিক ও সামরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নয়া অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সৌদি আরব সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বলা যায়, ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন সাধন করাই এ অঞ্চলে আমেরিকার প্রধান উদ্দেশ্য।

সৌদি আরবের কাছে শুধু অস্ত্র বিক্রি করেই আমেরিকা লাভবান হচ্ছে না এবং আমেরিকার নানা ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নেও এসব অস্ত্র ব্যবহার করা হবে। অর্থাৎ সব দিক দিয়েই আমেরিকা লাভবান হবে। সৌদি আরব বর্তমানে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যের ওপর একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। আর এ লক্ষে তারা যে কোন অন্যায় ও অযৌক্তিক কাজ করতে দ্বিধা করবে না।