সম্প্রতি বিশ্ব জুড়ে ম্যালওয়্যার অ্যাটাকে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে শতাধিক দেশের ইন্টারনেট পরিষেবা। তদন্তে প্রাথমিকভাবে উঠে আসে উত্তর কোরিয়ার নাম। দক্ষিণ কোরিয়ার দাবি, পিয়ংইয়ং-এর গোয়েন্দাদের একটি নিজস্ব সাইবার ওয়ারফেয়ার সেল রয়েছে, যারা বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেম হ্যাক করছে। সাম্প্রতিককালে আমেরিকা, দকওষণ কোরিয়া ছাযাও প্রায় ডজন খানেক দেশে সাইবার হামলার চালানোর অভিযোগ রয়েছে উত্তর কোরিয়ার ওই ইউনিটের বিরুদ্ধে, যার নাম ‘ইউনিট ১৮০’।
সাইবার সিইউরিটি বিশেষজ্ঞরা উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে এমন অনেক প্রমাণ পেয়েছে, যেখান থেকে স্পষ্ট যে সাম্প্রতিক ম্যালওয়্যার অ্যাটাকেও উত্তর কোরিয়াই জড়িত। যে সাইবার হামলায় অন্তত ৩ লক্ষ কম্পিউটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই দাবি অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে পিয়ংইয়ং। ‘লাজারাস’ নামে একটি হ্যাকিং- গ্রুপের সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগও রয়েছে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে। এই হ্যাকিং গ্রুপই বাংলাদেশ সেন্ট্রাল ব্যাংক ও সোনির হলিউড স্টুডিওতে সাইবার হামলা চালায়। ২০১৫ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত অন্তত তিনটি প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলা চালানো হয়েছে একই স্টাইলে। নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা উত্তর কোরিয়া যদি সাইবার হামলার আশ্রয় নেয়, তবে তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। সিমানটেকের গবেষক চিয়েন বলেন, ‘সনির স্টুডিওতে সাইবার হামলা ও হামলাকারী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেমে সাইবার হামলার মধ্যে একটি যোগসূত্র রয়েছে।’ সুইফট মেসেজ জালিয়াতি করার মধ্য দিয়ে ভিয়েতনামের ব্যাংকে সাইবার হামলার চেষ্টার ক্ষেত্রেও একই ধরনের সংযোগের কথা বলছে সিমানটেক।
উত্তর কোরিয়ার এক সাইবার বিশেষজ্ঞ কিম হিয়ং কুয়াং, যিনি এখন দক্ষিণ কোরিয়ায় রয়েছেন, তিনি জানান, উত্তর কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা Reconnaissance General Bureau (RGB)-র একটি অংশ হল এই ‘ইউনিট ১৮০’। এরা বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেওয়ার জন্য সাইবার হামলা চালায়। আরও জানা গিয়েছে ওই ইউনিটের সদস্যরা কর্মীর ছদ্মবেশে কোনও বিদেশি সংস্থায় কাজ নেয়। সেখান থেকেই এই হ্যাকিং-এর কাজ করে। প্রথমে চরবৃত্তি করার জন্য এই সাইবার সেল ব্যবহাত করত উত্তর কোরিয়া। পরে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়াকে বিপর্যস্ত করতে এই কাজ করতে শুরু করে পিয়ংইয়ং।