Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

সৌদিতে আটক আতঙ্কে ৮০ হাজার বাংলাদেশি

soudi-arrestসৌদি আরবে অবৈধভাবে বসবাসকারীরা দিন কাটাচ্ছেন গ্রেপ্তার আতঙ্ক নিয়ে। সৌদি সরকারের বিশেষ ক্ষমার মেয়াদ জুনে শেষ হচ্ছে। এর আগেই ট্রাভেল ডকুমেন্ট অর্থাৎ পাসপোর্ট যোগাড় করে দেশে ফিরতে হবে। অন্যথায় জেল-জরিমানাসহ নানা কিছুর মুখোমুখি হতে হবে তাদের। এ কারণে সৌদির জেদ্দা ও রিয়াদ বাংলাদেশ মিশনের সামনে অবৈধভাবে সৌদিতে বসবাসকারীদের ভিড় বাড়ছে। বিষয়টি সম্পর্কে এরই মধ্যে সৌদি আরবের বাংলাদেশ মিশনের অ্যাম্বাসেডর গোলাম মসিহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং প্রবাসী কল্যাণ সচিবকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছেন।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক হাজার বাংলাদেশি রিয়াদ ও জেদ্দাস্থ কনস্যুলেট অফিসের সামনে পাসপোর্টের জন্য ভিড় করছেন। ওই সব বাংলাদেশিরা বলছেন, গত ২৯শে মার্চ সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স অবৈধভাবে সৌদিতে বসবাসকারীদের জন্য ৯০ দিনের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন। আকামাবিহীন যে কেউ এ সময়ের মধ্যে জরিমানা ছাড়া সৌদি আরব ত্যাগ করতে পারবেন।

chardike-ad

এদিকে সৌদিস্থ রিয়াদ বাংলাদেশ হাইকমিশন ও জেদ্দাস্থ কনস্যুলেট অফিস ট্রাভেল ডকুমেন্ট ইস্যু করতে সমস্যার মুখে পড়েছে। কারণ এত কম জনবল দিয়ে অধিক সংখ্যক লোকজনকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট দিতে পারছে না তারা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগকে লেখা চিঠিতে তারা জানিয়েছে, সৌদিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ট্রাভেল ডকুমেন্ট ইস্যু করতে ৫০ জন অস্থায়ী কর্মচারী নিয়োগ করা প্রয়োজন। এসব কর্মচারী তিন মাস কাজ করলেই সমস্যা মেটানো যাবে। প্রতিদিন আমাদের চ্যান্সেরিতে বাংলাদেশিদের ভিড় বাড়ছে। আগামীতে এ ভিড় আরো বাড়বে। তাই স্থানীয় পর্যায়ে লোক নিয়োগের মাধ্যমেও এ সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে। অন্যথায় অবৈধ বাংলাদেশিরা সৌদিতে মহা ফ্যাসাদে পড়বে। তারা জেল-জরিমানার মুখে পড়তে পারেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে গোলাম মসিহ বলেছেন, সৌদি আরবে কত জন অবৈধ বাংলাদেশি রয়েছেন এ বিষয়টি আমাদের অজানা। তবে ৫০ থেকে ৮০ হাজারের মতো অবৈধ বাংলাদেশি রয়েছে। এর আগে ২০১৩ সালে একই ধরনের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে বৈধ হওয়ার সময় বেঁধে দেয় সৌদি রাজকীয় সরকার। ওই সময় সৌদিস্থ বাংলাদেশ মিশন থেকে আট লাখ বাংলাদেশি কনস্যুলার সেবা গ্রহণ করেন। ৩১ হাজার বাংলাদেশি দেশে ফিরে আসে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সৌদিস্থ বাংলাদেশ মিশনের অ্যাম্বাসেডর গোলাম মসিহর কাছ থেকে পাওয়া চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবগতি করেছেন তারা। এ চিঠির মর্ম অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছে তারা। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) দেয়া সংক্রান্ত বিষয়টি একান্তই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও রিয়াদস্থ বাংলাদেশ মিশনের বিষয়। এ কারণে বিষয়টি নিয়ে তারা কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেবেন না।

এরই মধ্যে বিষয়টি সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ তাদের মনোভাব পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে তারা বলেছে, অতিরিক্ত জনবল প্রেরণ বা নিয়োগ আমাদের বিষয় নয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সমস্যার সমাধান করবে। সৌদিস্থ বাংলাদেশ মিশন সূত্রে জানা গেছে, সৌদিতে হজ বা ওমরাহ করতে গিয়ে অনেক বাংলাদেশি ফেরত আসেন না। ফলে ভিসার নির্ধারিত মেয়াদ শেষে তারা অবৈধ হয়ে যাচ্ছেন।

সর্বশেষ গত দেড় মাসে ২৬ হাজার বাংলাদেশির ট্রাভেল পাস ইস্যু করা হয়েছে। সৌদি আরবের রিয়াদ বাংলাদেশ মিশনে নতুন করে ছয়টি ও জেদ্দা মিশনে অস্থায়ীভাবে চারটি কাউন্টার খোলা হয়েছে। ট্রাভেল ডকুমেন্ট ইস্যুর জন্য অস্থায়ী এসব কাউন্টার খোলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে সৌদির বিভিন্ন জেলখানায় ৮০০ বাংলাদেশি আটক রয়েছে। এসব বাংলাদেশিরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। এর আগে ২০১৩ সালেও একবার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়।