Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে উচ্ছিষ্ট খাবারই ওদের ভরসা

women-in-drustbeanডাস্টবিনের পাশে বসা আনুমানিক বিশ-বাইশ বছর বয়সী এক নারী। তার সঙ্গে সাতাশ-আটাশ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ও সাত-আট বছর বয়সী একটি শিশু। ওই নারী ব্যাগ থেকে প্লাস্টিকের বাটি বের করলেন। যাতে রয়েছে উচ্ছিষ্ট খাবার। তা তিনি ঢাললেন একটি বোলে। প্রায়দিনই এই উচ্ছষ্ট খাবার খেয়ে ওই নারীর পরিবারের সদস্যদের পেটের ক্ষুধা মেটে।

শনিবার বিকেল ৩টায় রাজধানীর নিউমার্কেট এক নম্বর গেটের অদূরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) একটি ডাস্টবিনের পাশে এই চিত্র দেখা যায়।

chardike-ad

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে ওই নারী জানান, তিনি খাবার রান্না করে বাটি করে এনে নিউমার্কেটের বিভিন্ন দোকানের কর্মচারীদের কাছে বিক্রি করেন। একবার খাবার সাপ্লাই দিয়ে পরে ঘুরে ঘুরে বাটিগুলো সংগ্রহ করেন।

তিনি জানান, দোকানিদের অনেকেই পুরো বাটির ভাত ও তরকারি খান আবার অনেকেই কিছু খাবার রেখে দেন। বাটি পরিষ্কার করার সময় ওই রেখে দেয়া খাবারের জন্য তিনি স্বামী ও সন্তানদের খবর দিয়ে আনেন। তবে সবদিন খাবার থাকে না।

নিউমার্কেট ও আশপাশের অভিজাত এলাকায় শুধু এই নারীই নন, রাস্তার আইল্যান্ডে বহু পথশিশু ও তাদের বাবা-মাকে উচ্ছিষ্ট খাবার খেয়ে জীবন ধারণ করতে দেখা গেছে।

সম্প্রতি এ প্রতিবেদকের চোখে নিউমার্কেটের অদূরে নীলক্ষেত সিগন্যাল সংলগ্ন রাস্তার আইল্যান্ডে এমন একটি দৃশ্যও চোখে পড়ে। বিকেল তখন সাড়ে ৩টা। আট-নয় বছর বয়সী এক শিশুসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের একটি পলিথিনে মোড়ানো ভাত, ডাল ও তরিতরকারি ভাগ-বাটোয়ারা করে খেতে দেখা যায়।

অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওদের বেশিরভাগই কামরাঙ্গীরচরে থাকে। সকালবেলা নীলক্ষেত মোড়ে এসে কেউ ফুল কেউ লুছনি বিক্রি করেন। প্রায়দিনই দুুপুরে ওইসব শিশুর মায়েরা নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, গাওছিয়া ও চাঁদনি চক মার্কেটে গিয়ে দোকানে দোকানে ঘুরে উচ্ছিষ্ট খাবার সংগ্রহ করে আনেন। এ কারণে ওদের শিশুরা কোনোদিন বিকেল আড়াইটা-তিনটার আগে দুপুরের খাবার খেতে পারে না।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে একাধিক শিশুর অভিভাবক বলেন, একদিকে জিনিসপত্রের মূল্য বেশি অন্যদিকে কামরাঙ্গীরচরের বাসায় ফিরে খাবার রান্না করে আনা ঝামেলা। তাই কুড়িয়ে পাওয়া খাবারেই ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে অভ্যস্ত তারা।