Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

জীবনের ঘুর্ণিপাকে দিশেহারা দেশের প্রথম বাঁহাতি স্পিনার

ramchadসাকিব আল হাসান যখন বল হাতে নেন, তখন ময়মনসিংহ থেকে অবধারিতভাবে একজোড়া চোখ টিভির পর্দায় এঁটে যায়। ও চোখে সেই আগের মতো আলো নেই, যতটুকু আছে তাতে সাকিবের দেখা মেলে না; ভেসে ওঠে রামচাঁদ গোয়ালা নামের এক তরুণের অবয়ব! বাংলাদেশের প্রথম বাঁহাতি স্পিনার তিনি। বিসিবি তো দূরের কথা, ময়মনসিংহের ক্রীড়া সংগঠকরাও তাকে মনে রাখেননি!

ব্রাহ্মপল্লিতে ভাইয়ের পরিবারে নিঃসঙ্গ জীবন কাটে ৭৮ বছর বয়সী এই কিংবদন্তির। বাংলাদেশের খেলা দেখেন নিয়মিত। সাকিবকে দেখলেই বুকের ভেতর কেমন যেন করে ওঠে।

chardike-ad

‘খুবই ভালো লাগে সাকিব আল হাসানের বোলিং,’ বলেই কিছুটা থেমে যান রামচাঁদ। ধরা গলায় আবার শুরু করেন, ‘ওকে দেখলেই বুকটা কেমন করে ওঠে। মনে হয় আমি রামচাঁদ গোয়ালা বল করছি। প্রায় একই রকম। শুধু বাইটটা একটু আলাদা।’

১৯৯৩ সালে ঢাকা লিগ খেলে অবসরে যান রামচাঁদ। লিগে ছয়বার হয়েছেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। আবাহনীতে খেলেছেন টানা ১৫ বছর। জাতীয় দলের হয়ে যখন হাত ঘুরিয়েছেন, তখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা পড়েনি বাংলাদেশের।

ramchadরাষ্ট্র থেকে কোনোদিন সম্মাননা পাননি। বিসিবি থেকেও কখনো স্মরণ করা হয়নি। ২০১৫ সালে আজীবন সম্মাননা দেয় বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন। সেটিই রামচাঁদের কাছে এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি।

‘আপনাদের একটা ক্রীড়া সংগঠন সম্মাননা দিয়েছিল। ময়মনসিংহ তো বাদই দিলাম; ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড থেকেও খুব একটা সাহায্য কখনো পাইনি।’

ক্রিকেট খেলতে খেলতে বিয়ের লগ্ন ধরতে পারেননি সাবেক এই স্পিনার। কৈশোর, তারুণ্য আর যৌবনের প্রতিটি ক্ষণ কেটেছে ব্যাট আর বলের সঙ্গে। পেছনে ফিরে রামচাঁদ কেমন চাঁদহীন অন্ধকার রাতের দিশেহারা পথিক হয়ে যান, ‘এই খেলার পেছনে লেগেই বিয়ের সময় আর পাইনি। এক সময় দেখি আমি তো ওল্ড। বয়স হয়ে গেছে…। পরে আর বিয়েই করা হয়নি।’

কথা বলতে বলতে রামচাঁদ ঘরের বাইরে পা বাড়ান। বের হওয়ার আগে পুরনো ট্রাউজার খোঁজ করেন। অন্য পোশাকে আপত্তি নেই। কিন্তু ট্রাউজারের প্রতি নাকি আলাদা টান আছে। স্পোর্টসম্যানরা বুঝি এমনই হন। জীবনের শেষদিনেও ট্রাউজার হাতড়ে বেড়ান!

সৌজন্যে: চ্যানেল আই