Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

প্রেমের টানে প্রাসাদ ছাড়ার ঘোষণা জাপানের রাজকুমারীর

makoভালোবাসার টানে, ভালোবাসার মানুষকে পেতে যুগে যুগে অনেকেই প্রতিপত্তি-ক্ষমতা, রাজ্য ত্যাগ, এমনকি সিংহাসন ত্যাগ করেছেন। এই তালিকায় এবার নিজের নাম লেখানো স্থির করে ফেলেছেন জাপানের রাজকুমারী মাকো।

বিসিসির খবরে বলা হয়েছে, গত রোববার প্রেমিককে বিয়ের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন মাকো। তবে এরআগে এ বিয়েতে জাপানের সম্রাট আকিহিতোর অনুমতি পান তিনি।

chardike-ad

মাকো জাপানের বর্তমান সম্রাট আকিহিতোর ছোট ছেলে রাজকুমার আকসিনো নামে পরিচিত ফুমিহিতোর বড় সন্তান। যাদুঘর গবেষক হিসেবে কাজ করা ২৫ বছর বয়সী মাকো সম্রাটের ৪ নাতি-নাতনির মধ্যে বয়সে সবার বড়।

মাকো আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সাধারণ পরিবারের সন্তান বন্ধু-প্রেমিক কেই কোমুরোকেই বিয়ে করবেন। এবার তার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে মূলত রাজক্ষমতাই ত্যাগের ঘোষণা দিলেন রাজকুমারী মাকো।

হয়তো ঘোষণা দিলেন জাপানের ‘সিংহাসন’ ত্যাগের। জাপানিদের মতকে প্রাধান্য দিয়ে সংবিধান পরিবর্তন হলে হয়তো মাকোই হতেন জাপানের সিংহাসনের পরবর্তী উত্তরাধিকার, দেশের প্রথম নারী সম্রাজ্ঞী।

এর মাধ্যমে রাজকুমারীর বিয়ে নিয়ে চলা দীর্ঘদিনের বিতর্কের অবসান ঘটলো। সেইসঙ্গে রাজকীয় ক্ষমতা ও সুবিধাদি হারাতে চললেন তিনি।

রোববার জাপানে এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে হবু স্বামীকে পাশে নিয়ে স্বেচ্ছায় বিয়ের এ পাকা সিদ্ধান্তের কথা জানান রাজকুমারী মাকো।

makoসংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সুর্যের আভার মতো কেমুরোর হাসি দেখেই তিনি প্রথমে আকৃষ্ট হন। তিনি বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই সচেতন ছিলাম, বিয়ের পর রাজকীয় উত্তরাধিকার ছেড়ে যাব। যখন আমি সম্রাটকে সহায়তা করেছি ও সাধ্যমতো আমার দায়িত্ব পালন করেছি, তখনও আমি নিজের ইচ্ছাকে লালন করেছি।

জাপানের রাজকীয় প্রথা অনুযায়ী রাজপরিবারের কোনো নারী সদস্য সাধারণ নাগরিককে বিয়ে করলে উত্তরাধিকার ও রাজপরিবারের সুবিধা হারাবেন। তবে রাজপরিবারের পুরুষ সদস্যদের ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য নয়।

মাকোর স্বামী হতে যাওয়া ২৫ বছরের কেই কেমুরো জাপানের একটি আইন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ৫ বছর আগে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তাদের সাক্ষাৎ হয়। পরে পরিচয় গড়ায় প্রেমে।

গত জুলাইতেই মাকোর বিয়ের ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জাপানে বৃষ্টিতে সৃষ্ট বিপর্যয়ের কারণে তা পিছিয়ে যায়। তবে দেশটির সবচেয়ে আলোচিত এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছর।

এদিকে, ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে জাপানের রাজপরিবার। সাধারণ নাগরিককে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে মাকো রাজপরিবারকে আরও সংকুচিত করে দিলেন কিনা সে প্রশ্নও উঠেছে।

জাপানের সংবিধান অনুযায়ী, রাজপরিবারের পুরুষ সদস্যরাই কেবল সিংহাসনের উত্তরাধিকার হন। যদিও বতর্মান প্রজন্ম চায় রাজদণ্ড শুধুই রাজবংশের পুরুষদের হাতে নয়, নারীদের হাতেও যাওয়া উচিত। তবে এ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি জাপান সরকার।

অপরদিকে, এরইমধ্যে স্বেচ্ছায় সিংহাসন ত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন সম্রাট আকিহিতো। তিনি অবসরে গেলে সিংহাসনে কে বসবেন তা এখনও চূড়ান্ত নয়।

সিংহাসনের উত্তরাধিকার হতে পারবেন এমন মাত্র চারজন পুরুষ রাজপরিবারে জীবিত রয়েছেন। তাদের দুইজন সম্রাটের দুই ছেলে, একজন সম্রাটের বৃদ্ধ ভাই ও সম্রাটের বড় ছেলের ১০ বছর বয়সী ছেলে প্রিন্স হিসাহিতো।

এতে করে প্রিন্স হিসাহিতোর পর জাপানের রাজপরিবারের ধারা থেমে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে দাবি উঠেছে, সংবিধান পরিবর্তন করে নারী সদস্যদেরও সিংহাসনের উত্তরাধিকার করতে। সে হিসেবে সবচেয়ে এগিয়ে ছিলেন রাজকুমারী মাকো।