Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

মালয়েশিয়ায় টানাপোড়েনে দিন কাটছে নয়নের

noyonশরিয়তপুরের নড়িয়া থানার শুরেশ্বর গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে মো. নয়ন শরীফ। ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে প্রথম কলিং ভিসায় মালয়েশিয়া যান। সেখানে একটি সুতা কারখানায় চাকরি হয় তার। প্রায় এক বছর কাজ করেন ওই কারখানায়। পরে চাকরি ছেড়ে শুরু করেন ব্যবসা। প্রথম প্রথম ব্যবসায় মোটামুটি সাফল্যও পান।

২০০০ সালে দেশে এসে বিয়ে করে এখানেও ব্যবসা শুরু করেন। এভাবে দুই দেশের ব্যবসা দেখভালের জন্য আসা যাওয়ার মধ্যে থাকেন। তবে ২০০৬ সালের শেষের দিকে দুই দেশের ব্যবসাই দেখা দেয় মন্দাভাব। ফলে বাধ্য হন ব্যবসা গুটিয়ে নিতে। এরপর নয়নের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার।

chardike-ad

কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে ২০০৭ সালে কলিং ভিসায় আবারও যান মালয়েশিয়ায় তিনি। দুই বছর চাকরির পর ২০০৯ সালের প্রথম দিকে এক মালয়েশিয়ান চীনা নাগরিকের সঙ্গে পার্টনারশিপে ক্লাংয়ে শুরু করেন রেষ্টুরেন্ট ব্যবসা।

২০১৫ সাল পর্যন্ত ব্যবসা ভালই চলছিল। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়লে ক্লাংয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়ে ডায়াবেটিকস হয়েছে। এরপর কিছু দিন যেতে না যেতেই ধরা পড়ে তার দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। পরবর্তীতে অনেক টাকা খরচ করে নয়ন সুস্থ হয়েছেন। কিন্তু এরই মাঝে প্রতারণা করে ব্যবসায়িক পার্টনার রেষ্টুরেন্টের মালিকানা নিয়ে যায়।

নয়ন এখন কাজ-কর্ম কিছুই করতে পারেন না। মালয়েশিয়ায় ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে আসছিল। ফের বৈধভাবে থাকতে প্রয়োজন হয় প্রায় ৫ হাজার রিঙ্গিত। এ অবস্থায় কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে দ্বারস্থ হন প্রবাসী কমিউনিটি নেতা ও মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ মকবুল হোসেন মুকুলের। তিনি সম্পূর্ণ বিনা খরচে নয়নের ওয়ার্ক পারমিট করে দেন।

নয়ন জানান, সন্তানদের জন্য যখন দু’মুঠো আহার যোগাড় করতে পারছিলাম না তখন এগিয়ে এসেছেন মকবুল হোসেন মুকুল। আমি তার কাছে চির কৃতজ্ঞ।

এদিকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসে নতুন পাসপোর্ট করতে আসা অনেক প্রবাসীই নিজে ফর্ম পূরণ করতে পারেন না। নয়ন তাদের ফরম পূরণ করে দেন। খুশি হয়ে তারা নয়নকে ৫/১০ রিঙ্গিত বকসিশ দেন। আর তা দিয়েই এখন চলছে তার সংসার।

গত রোববার ক্লাংয়ে কথা হয় নয়ন শরীফের সঙ্গে।এ সময় কান্না জড়িত কণ্ঠে এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, মনের দু:খ নিয়ে প্রবাসে পড়ে রয়েছি। দেশে গিয়ে কি করব? চকরিতো করতে পারব না। তাই সন্তানদের মানুষ করতে অনেক দু:খ-কষ্ট সত্বেও এখানেই পড়ে আছি।