
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত সম্পূরক শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে আনার খবরে আন্তর্বর্তী সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেলে উত্তরা আজমপুরে এক গণসমাবেশে এ প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।
তিনি বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পণ্যে ৩৫ শতাংশ ট্যারিফ আরোপ করেছিল, যার ফলে রপ্তানি মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হতো। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এই শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে, যা দেশের জন্য একটি ইতিবাচক অর্জন। এজন্য আমি অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।
তবে তিনি সরকারকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দেন। বলেন, এই সরকারের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, অভিজ্ঞতার অভাবও রয়েছে। কিন্তু তারা চেষ্টা করছে, এটা বড় কথা। আমি আশাবাদী—যুদ্ধাহত ও শহীদ পরিবারের পুনর্বাসনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ফখরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। আমরা সেই নির্বাচন চাই, যাতে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে একটি প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এখন জনগণের সমস্যা নিয়ে বলার কেউ নেই। সংসদ নেই, এমপি নেই। এজন্য দ্রুত নির্বাচন প্রয়োজন।
সরকার পতনের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, “আমরা আপাতত ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত হয়েছি। তবে এটি পূর্ণতা পাবে তখনই, যখন চূড়ান্তভাবে লুটেরা গোষ্ঠীকে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করা যাবে। যারা জনগণের সম্পদ লুট করে, ব্যাংক দেউলিয়া করে, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।”
ফখরুল বলেন, যেভাবে খালেদা জিয়ার ওপর দেশের মানুষ ভরসা রেখেছে, একইভাবে তারেক রহমানের ওপরও এখন দেশের মানুষ আস্থা রাখছে। আমরা প্রতীক্ষা করছি, তিনি কবে দেশে ফিরে নেতৃত্ব দেবেন। আমরা বিশ্বাস করি, তিনি দেশে ফিরলে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবেন।
তিনি বলেন, তারেক রহমানের পরিকল্পনায় ফার্মার্স কার্ড, হেলথ কার্ড, ফ্যামিলি কার্ডের মতো সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি রয়েছে, যা ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে গরিব ও প্রান্তিক মানুষের জন্য বাসযোগ্য করে তুলবে।
এই সমাবেশ ছিল ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে। উত্তরা আমির কমপ্লেক্সের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক এবং সঞ্চালনা করেন যুগ্ম আহ্বায়ক এবিএমএ আবদুর রাজ্জাক। বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনি, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তি পালন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, যুব দলের নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজিব আহসান, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, জাসাসের হেলাল খান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মোস্তফা জামানসহ শহীদদের পরিবারের সদস্যরা।