
রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনার ‘শাস্তি’ হিসেবে ভারতের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে আগের পাল্টা শুল্কসহ এখন থেকে ভারতীয় পণ্যে মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
বুধবার (৬ আগস্ট) এ সংক্রান্ত এক নির্বাহী আদেশে সই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আদেশ অনুযায়ী, আজ থেকে ২১ দিনের মাথায় এই শুল্ক কার্যকর হবে। খবর বিবিসি ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাষ্য, ভারতের রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি আমদানি করাটা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ও ভূরাজনৈতিক চাপকে অগ্রাহ্য করার শামিল। এর প্রতিবাদেই নতুন করে এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম ভারত তার জ্বালানি সরবরাহে রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কমাবে। কিন্তু তারা সে পথে না গিয়ে উল্টো রুশ আমদানিতে ভরসা বাড়িয়েছে। এটি আমাদের কৌশলগত অবস্থানের পরিপন্থী।”
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগেই ভারতের শুল্ক বাড়ানো হতে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন ‘ইউক্রেনে রাশিয়ান অস্ত্রে কত মানুষ মারা যাচ্ছে তা ভারত আমলে নিচ্ছে না’।
এরই মধ্যে গত ৩১শে জুলাই ৯০টিরও বেশি দেশের ওপর নতুন শুল্কহার ঘোষণা করেছিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তখন ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিলো।
ডোনাল্ড ট্রাম্প পরে বলেছিলেন, আগামী শুক্রবার বা আটই অগাস্টের মধ্যে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বিরতিতে রাশিয়া রাজি না হয়, তাহলে এই দেশের সাথে এখনো বাণিজ্য করছে এমন যে কোনো দেশের ওপর নতুন সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপ করা হবে। তেল ও গ্যাস রাশিয়ার সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাত। চীন, ভারত ও তুরস্ক মস্কোর সবচেয়ে বড় ক্রেতা।

ওদিকে ভারতেও ওপর আরও শুল্ক চাপানোর হুমকি দিয়ে ট্রাম্প যা বলেছিলেন তা ভারতও প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলো। রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভারতকে যে নিশানা করছে, অথচ তারা নিজেরাই তো রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে দিল্লি।
দিল্লি বলেছে, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভারতকে নিশানা করছে।
বর্তমানে ভারত রাশিয়ার খনিজ তেলের সব থেকে বড় আমদানিকারক দেশ। রাশিয়া ২০২২ সালে ইউক্রেনের ওপরে আক্রমণ করার পর থেকে বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য কমিয়ে দিয়েছে, তবে সেই সময় থেকেই রাশিয়ার কাছে ভারত একটা বড় বাজার হয়ে উঠেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত বছর কড়া নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার সঙ্গে সাড়ে তিনশো কোটি ডলারের বাণিজ্য চালিয়েছে।
ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে, যে কোনো বৃহৎ অর্থনীতির মতোই নিজেদের জাতীয় স্বার্থ ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা রক্ষা করতে ভারত প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে।