
কেএমএফ সভাপতি কিম ডং-ইক বুধবার সিয়লে ইসলামকে কোরিয়ায় ৭০ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে বুধবার কোরিয়া মুসলিম ফেডারেশন (কেএমএফ) দেশটিতে ইসলামের ৭০ বছর পূর্তি উদযাপন করেছে। আন্তর্জাতিক হালাল সেমিনার ও গালা ডিনারের আয়োজনে ইসলামী দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব এবং দেশীয় হালাল সংস্থাগুলি একত্রিত হয়।
উদ্বোধনী বক্তব্যে কেএমএফ-এর সভাপতি কিম ডং-ইক বিভিন্ন দেশ থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য আগত অতিথিদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, আল্লাহর শান্তি সবসময় আপনাদের সঙ্গে থাকুক। কিম বিশেষভাবে ধন্যবাদ দেন ইন্দোনেশিয়ার হালাল পণ্যের নিশ্চয়তা সংস্থা (বিপিজেপিএইচ)-এর মন্ত্রী আহমাদ হাইকাল হাসান, সৌদি আরবের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রকের উপসচিব ওসামা বিন আহমাদ আল-জাফাল এবং ওয়ার্ল্ড অ্যাসেম্বলি অফ মুসলিম ইয়ুথ-এর সচিব সালেহ আই বাবেয়ারকে।
কিম কোরিয়ার উপদ্বীপে ইসলামের দীর্ঘ ইতিহাসের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, নবম শতাব্দীর মাঝামাঝি আরব বণিকরা সিলার সঙ্গে বাণিজ্য করত এবং কোরিয়ার নাম প্রথম পশ্চিমাদের কাছে পরিচিত হয় গোরিয়ো রাজবংশের সময়। এছাড়াও তিনি পনেরো ‘ শতকে সেজং রাজ্যের শাসনকালে রাজপ্রাসাদে কোরআন তেলাওয়াতের উল্লেখযোগ্য ইতিহাস উল্লেখ করেন।
তবে কিম জোর দিয়ে বলেন, কোরিয়ায় ইসলাম মূলত ১৯৫০ সালে কোরিয়ান যুদ্ধে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন প্রায় ৪,৫০০ তুর্কি সৈন্য জাতিসংঘের বাহিনীর অংশ হিসেবে ‘যুদ্ধ-অনাথ’ শিশুদের দেখাশোনা করতে গিয়ে ইসলাম পরিচয় করান।
তিনি বলেন, যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপে হতাশ কোরিয়ানরা তুর্কি সৈন্যদের মানবিকতা ও নৈতিকতার প্রতি গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিল, যা কোরিয়ান মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠার প্রেরণা হয়ে ওঠে।
আজ কোরিয়ায় ২৪টি মসজিদ এবং ২৬০টিরও বেশি প্রার্থনা কক্ষ রয়েছে, যার কেন্দ্রবিন্দু হলো সিউল সেন্ট্রাল মসজিদ। কোরিয়ায় মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ২,৫০,০০০। কিম ভবিষ্যতে আর্থিক স্বাধীনতা, নতুন প্রজন্মের নেতা তৈরি এবং অ-মুসলিমদের মধ্যে ইসলামের বোঝাপড়া বৃদ্ধি করার পরিকল্পনার কথা জানান। এর মধ্যে কোরিয়ান অনুবাদ কোরআন প্রকাশ করাও অন্তর্ভুক্ত।
কিম বলেন, ইসলাম সত্যিই এমন একটি ধর্ম যা শান্তির অনুসরণ করে। কেএমএফ সক্রিয়ভাবে কাজ করবে একটি আদর্শ ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে যেখানে সব মানবতা শান্তিপূর্ণ ও সঙ্গতি সহকারে বসবাস করতে পারবে।
সূত্র: দ্য কোরিয়া টাইমস