
ফ্রান্স ও মাল্টার পর গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলার মধ্যেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিল আরও চার ইউরোপীয় দেশ। দেশগুলো হচ্ছে অ্যান্ডোরা, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ ও মোনাকো।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরুর আগে সোমবার নিউইয়র্কে ফ্রান্স ও সৌদি আরবের উদ্যোগে আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে ফ্রান্স, অ্যান্ডোরা, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা ও মোনাকো আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি ঘোষণা করে। এর একদিন আগে ইউরোপের প্রভাবশালী দেশ যুক্তরাজ্য, কানাডা, পর্তুগাল এবং অস্ট্রেলিয়া ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়।
“সময় এসেছে,” বৈঠকে ঘোষণা দেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেন, “আমাদের দায়িত্ব হলো দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের সম্ভাবনাকে টিকিয়ে রাখা। আজ আমি ঘোষণা করছি—ফ্রান্স ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে।”
এতে করে জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫৪ টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা বৈশ্বিকভাবে ৮০ শতাংশের বেশি।
এদিকে গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, পুরো অঞ্চল কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
বৈঠকে ভার্চুয়ালি অংশ নেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। ভিডিও বার্তায় তিনি আরও দেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান এবং জাতিসংঘে পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদে সমর্থন চান।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বৈঠকটি বর্জন করে। ইসরায়েলের জাতিসংঘ প্রতিনিধি বৈঠকটিকে “সার্কাস” বলে আখ্যা দেন। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে, এ স্বীকৃতি “হামাসকে পুরস্কৃত” করবে।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ফিলিস্তিনের রাষ্ট্র হওয়া কোনো পুরস্কার নয়, বরং এটি একটি মৌলিক অধিকার। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ গাজায় ইসরায়েলের নৃশংসতা ও আঞ্চলিক আগ্রাসনের নিন্দা জানান।
বিশ্লেষকদের মতে, জাতিসংঘে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পক্ষে এখন গতি তৈরি হচ্ছে। যদিও কার্যকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অপরিহার্য। এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বারবার বলেছেন, তিনি কখনো ফিলিস্তিন রাষ্ট্র মেনে নেবেন না।